Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
Vote

পরিযায়ী ভোটের ব্যবস্থা নিয়ে সন্দেহ বিরোধীদের

বিহারের জেডিইউ নির্বাচন কমিশনের পরিকল্পনাকে সমর্থন করছে। বাম-সহ বাকি দলগুলি নির্বাচন কমিশনের বক্তব্য শোনার পরে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে বলে ঠিক করেছে।

কংগ্রেসের নেতা মাণিকম টেগোর অভিযোগ তুলেছেন, এ সব হল বিজেপির পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, বিহার জেতার ছক।

কংগ্রেসের নেতা মাণিকম টেগোর অভিযোগ তুলেছেন, এ সব হল বিজেপির পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, বিহার জেতার ছক। প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০১ জানুয়ারি ২০২৩ ০৯:০১
Share: Save:

পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, বিহারের মতো রাজ্যে ভোটে জেতার লক্ষ্যে বিজেপি পরিযায়ী শ্রমিক, ভিন্‌ রাজ্যে পড়তে যাওয়া ছাত্রছাত্রীদের জন্য ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা চালু করতে চাইছে বলে বিরোধীদের একাংশ সন্দেহ করছেন। কংগ্রেস, তৃণমূল, ডিএমকে ইতিমধ্যেই এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।

পরিযায়ী শ্রমিক ও উচ্চশিক্ষা, চাকরির জন্য ভিন্‌ রাজ্যে বসবাসকারী ভোটারদের জন্য নির্বাচন কমিশন দূরবর্তী ভোটদান ব্যবস্থা চালু করার পরিকল্পনা নিয়েছে। এই ব্যবস্থায় অন্য রাজ্যে থেকেও নিজের এলাকার প্রার্থীকে লোকসভা কিংবা বিধানসভা নির্বাচনে ভোট দেওয়া যাবে। এই বিষয়টি বোঝাতে ১৬ জানুয়ারি দিল্লিতে দলগুলিকে বৈঠকে ডেকেছে নির্বাচন কমিশন। ৩১ জানুয়ারির মধ্যে দলগুলিকে মতামত জানাতে বলা হয়েছে।

কংগ্রেসের নেতা মাণিকম টেগোর অভিযোগ তুলেছেন, এ সব হল বিজেপির পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, বিহার জেতার ছক। কারণ, এই রাজ্যগুলি থেকেই সব থেকে বেশি মানুষ অন্য রাজ্যে কাজ করতে যান। টেগোরের বক্তব্য, “অমিত শাহ নতুন বছরে সঙ্কল্প করেছেন, বিজেপিকে পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, ওড়িশায় জিততেই হবে। নির্বাচন কমিশন বলছে, আমরা ছোট সাহেবকে সাহায্য করব। এ হল তারই প্রমাণ।”

নির্বাচন কমিশনের ২০১৯-এর হিসেব অনুযায়ী, এখনও ৩০ কোটি ভোটার ভোট দিচ্ছেন না। এঁদের মধ্যে যাঁরা বিয়ে, রোজগার, শিক্ষা ইত্যাদি কারণে মূল বাসস্থান ছেড়ে অন্যত্র বসবাস করছেন, তাঁদের সংখ্যাই বেশি। প্রায় ৮৫%। তাঁরা নানা কারণে নতুন ঠিকানায় ভোটার তালিকায় নাম তোলেন না। কমিশন স্বীকার করেছে, পরিযায়ী শ্রমিক বা পড়ুয়াদের কেন্দ্রীয় তথ্যভান্ডার নেই। তৃণমূলের জাতীয় মুখপাত্র সুখেন্দুশেখর রায়ের প্রশ্ন, “ধরা যাক ‘ক’ রাজ্যের ভোটার ‘খ’ রাজ্যে বাস করছেন। যে দিন ‘ক’ রাজ্যে ভোট হচ্ছে, সে দিন হয়তো ‘খ’ রাজ্যে ভোট নেই। নেই আচরণবিধিও। ‘ক’ রাজ্যের নির্দিষ্ট কেন্দ্রের জন্য ‘খ’ রাজ্য থেকে যারা ভোট দেবেন, তা দেখার জন্য ওই কেন্দ্রের প্রার্থীর নির্বাচনী এজেন্ট কী ভাবে নিয়োগ হবে?” তাঁর মতে, বিষয়টি বেশ জটিল। এর ফলে নির্বাচনী ব্যবস্থা আরও মজবুত হবে, স্বচ্ছ হবে না কি সন্দেহের বাতাবরণ আরও বাড়বে, তা ভবিষ্যৎ বলবে। দলের সর্বোচ্চ স্তরে আলোচনা করে উপযুক্ত অবস্থান নেওয়া হবে।”

বিহারের জেডিইউ নির্বাচন কমিশনের পরিকল্পনাকে সমর্থন করছে। বাম-সহ বাকি দলগুলি নির্বাচন কমিশনের বক্তব্য শোনার পরে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে বলে ঠিক করেছে। ডিএমকে বলছে, এ বিষয়ে কমিশনের আইন সংশোধনের প্রস্তাব দেওয়ার এক্তিয়ারই নেই। কারণ, এ জন্য জনপ্রতিনিধিত্ব আইন, নির্বাচন পরিচালনা বিধি, ভোটার নথিভুক্তি বিধির মতো আইন ও সংবিধান সংশোধন করতে হবে। পরিযায়ী ভোটারের সংজ্ঞা ঠিক করতে হবে।

সুখেন্দুশেখর বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বহু দিন ধরে সার্বিক নির্বাচনী সংস্কারের দাবি করছেন। তাঁর আন্দোলনের জেরেই দেশে প্রথম সচিত্র পরিচয়পত্র চালু হয়। এর পর ইভিএম নিয়ে নানা মহলে প্রশ্ন ওঠে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ভিভিপ্যাট মেশিন চালু হয়। যেন ভোটাররা স্বচক্ষে দেখতে পান যে তাদের ভোট সঠিক জায়গায় পড়েছে। কিন্তু মাত্র ৫ শতাংশ জায়গায় তা চালু হয়েছে। এখন আবার রিমোট ভোটিং মেশিন চালু করতে চাইছে। কিন্তু বিষয়টি এত সহজে হবে না বলেই আমার ধারণা।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Vote migrants Election Commission
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE