Advertisement
২২ মে ২০২৪

চার্লস-অ্যান্ড্রুর নামও ব্যবহার করেন ভাজ

শুধু ভারতের বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ নন, প্রিন্স চার্লস ও অ্যান্ড্রুর নাম ব্যবহার করেও ব্রিটিশ এমপি কিথ ভাজ বিভিন্ন দেশে যাওয়ার ছাড়পত্র ললিত মোদীকে পাইয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন বলে এ বার অভিযোগ উঠল। ব্রিটেনের একটি সংবাদপত্রের দাবি, ললিতের ব্যাপারে এ দেশের ভিসা ও অভিবাসন দফতরের প্রধান সারা র‌্যাপসন এবং ওই দফতরের আধিকারিক লিজা কিলহ্যামকে একাধিক চিঠি লেখেন ভাজ।

শ্রাবণী বসু
লন্ডন শেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০১৫ ০৩:০৪
Share: Save:

শুধু ভারতের বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ নন, প্রিন্স চার্লস ও অ্যান্ড্রুর নাম ব্যবহার করেও ব্রিটিশ এমপি কিথ ভাজ বিভিন্ন দেশে যাওয়ার ছাড়পত্র ললিত মোদীকে পাইয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন বলে এ বার অভিযোগ উঠল।

ব্রিটেনের একটি সংবাদপত্রের দাবি, ললিতের ব্যাপারে এ দেশের ভিসা ও অভিবাসন দফতরের প্রধান সারা র‌্যাপসন এবং ওই দফতরের আধিকারিক লিজা কিলহ্যামকে একাধিক চিঠি লেখেন ভাজ। এর মধ্যে লিজাকে লেখা একটি চিঠিতে ভাজ বলেন, ‘‘সম্প্রতি ললিত মোদীর সঙ্গে প্রিন্স অব ওয়েলস (চার্লস) ও প্রিন্স অ্যান্ড্রুর দেখা হয়েছিল। মোদী তাঁদের বলেন, বোনের বিয়েতে যাওয়া ও সেশেলসের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দেখা করা আর হয়তো হবে না। দুই রাজকুমারই বিষয়টি নিয়ে হস্তক্ষেপ করার প্রস্তাব দিয়েছেন।’’

পরে আরও একটি চিঠিতে ভারতের বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের কথা উল্লেখ করেন ভাজ। সুষমা যে দিল্লিতে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার জেমস বিভানের কাছেও ললিতের হয়ে দরবার করেছেন, তা জানান ভাজ। সংবাদপত্রটির দাবি, কৌতুকের সুরে ওই চিঠিতে ভাজ এ-ও বলেন, ‘‘রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব বান কি মুন ছাড়া সকলেই এই বিষয়ে জড়িয়েছেন।’’ ললিতের হয়ে সওয়াল করা তাঁর একাধিক ই-মেল ফাঁস হওয়ার পর ব্রিটিশ পার্লামেন্টের তদন্তের মুখে পড়তে চলেছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত এমপি ভাজ। তবে ভিসা ও অভিবাসন দফতরের প্রধান সারা র‌্যাপসনকে ক্লিনচিট দিয়েছে ব্রিটিশ সরকার। তিনি নিয়ম ভেঙে কোনও কাজ করেননি বলে জানিয়ে ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্র দফতর আজ বলেছে, ‘‘সারা যে এই বিষয়ে পেশাদারের মতো কাজ করে ঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তা নিয়ে আমরা নিশ্চিত।’’

অনেকেই মনে করছেন, ললিত মোদী যে রীতিমতো ওজনদার ব্যক্তিত্ব, সেটা বোঝাতেই বাকিংহাম প্রাসাদের সূত্রও টেনে এনেছেন ভাজ। কিন্তু কেন তাঁরই শরণাপন্ন হলেন ললিত?

২০১০ সালে আইপিএল কেলেঙ্কারিতে জড়ানোর পরে ব্রিটেনে চলে যান প্রাক্তন ক্রিকেট কর্তা। তার পরে আর তাঁর নাগাল পায়নি ভারতীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলি। তবে ললিতের পাসপোর্ট বাজেয়াপ্ত করেছিল ভারত সরকার। তখন থেকেই ব্রিটেনে স্থায়ী ভাবে থাকার জন্য আইনি লড়াই লড়ছেন তিনি। ২০১৪ সালে তিনি সে দেশে দু’বছর থাকার অনুমতি পান।

তখনও তাঁর পাসপোর্ট নিয়ে ভারতের আদালতে মামলার নিষ্পত্তি হয়নি। ফলে, ব্রিটেন থেকে অন্য দেশে যাতায়াতের জন্য অনুমতি (সার্টিফিকেট অব ট্রাভেল)-এর প্রয়োজন ছিল ললিতের। এবং তা পেতে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের স্বরাষ্ট্র দফতর সংক্রান্ত সিলেক্ট কমিটির প্রধান কিথ ভাজের শরণাপন্ন হন তিনি। পর্তুগালে স্ত্রীর ক্যান্সারের চিকিৎসা করানো, বোনের বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়া ও বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে বৈঠকে যাওয়ার জন্য ওই অনুমতি প্রয়োজন বলে ভাজকে জানিয়েছিলেন ললিত।

যার পরেই ললিতের হয়ে আসরে নামেন ভাজ। যাঁর ভবিষ্যৎ এখন সময়ই বলবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE