প্রতীকী ছবি।
নতুন ট্রেনের আশা কম। নতুন প্রকল্পের সম্ভাবনা? তার চেয়েও কম।
আর্থিক সঙ্কটের কারণে গত কয়েক বছরের মতো এ বারেও পরিকাঠামো সংক্রান্ত পুরনো প্রকল্পগুলি শেষ করার উপরেই চলতি বাজেটে জোর দিতে চাইছে নরেন্দ্র মোদীর সরকার।
বিশ্বব্যাপী আর্থিক মন্দার ছায়া ভারতের অর্থনীতিতেও। যার প্রভাব পড়েছে রেলেও। রেলের মোট আয়ের প্রায় ৭৫ শতাংশ আসে পণ্য পরিবহণ থেকে। কিন্তু মন্দার ধাক্কায় বাজারে চাহিদা কমে যাওয়ায় নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে পণ্য পরিবহণেও। লক্ষ্য ছোঁয়া তো দূর, উল্টে কমেছে আয়।
কমেছে যাত্রী। এবং সেই বাবদ আয়ও ।
চলতি বছরের প্রথম দিন থেকে কিলোমিটার পিছু যাত্রিভাড়া গড়ে চার পয়সা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। কিন্তু রেল-কর্তারা বলছেন, যাত্রিভাড়ায় ফি বছর ৩৫-৪০ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হয়। আর বাড়তি ঘরে আসবে মাত্র দু’হাজার কোটি’’
যাত্রিভাড়া বাড়ানোর প্রশ্নে রেল কার্যত শাঁখের করাতে। গত কয়েক বছর ধরে যাত্রিভাড়া বৃদ্ধির চাপ পড়েছে মূলত বাতানুকূল শ্রেণির যাত্রীদের উপরে। যাঁরা রেলের মোট যাত্রীর মাত্র ২% এবং যাঁদের টিকিট থেকে রেলের আয় হয় ৩৩%। রেল-কর্তাদের মতে, ‘‘মোট আয়ের ৫০ শতাংশ আসে স্লিপার শ্রেণি থেকে। ১৭% যাত্রী এই শ্রেণির। এ ক্ষেত্রে ভাড়ায় উল্লেখজনক বৃদ্ধি না-হলে রেল কখনওই নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারবে না।’’ একই ভাবে রেলের মোট যাত্রীর ৫৬% যাতায়াত করেন শহর ও শহরতলির মধ্যে চলা লোকাল ট্রেনগুলিতে। কিন্তু এই খাত থেকে আয় হয় মাত্র ৬%। লোকাল ট্রেনেও অবিলম্বে বড় মাপের ভাড়া বাড়ানোর প্রয়োজন বলেই মত রেল-কর্তাদের। কিন্তু সংস্কারমুখী সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার সাহস দেখাতে পারেনি ইউপিএ সরকার। ব্যর্থ মোদী সরকারও। বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েও গত ছ’টি বাজেটে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার ছাড়পত্র দিতে পারেনি এনডিএ সরকারও। ফলে ক্রমেই ভাঁড়ার খালি হচ্ছে রেলের। সঞ্চয় বলতে কিছু নেই। কাগজে-কলমে ১০০ টাকা আয় করতে খরচ হচ্ছে প্রায় ৯৮.৪৪ টাকা। যদিও প্রকৃত সংখ্যাটি ১০২ ছাড়িয়ে গিয়েছে বলেই মত সিএজি-র।
এই অবস্থায় ঘুরপথে আয় বাড়াতে বেসরকারিকরণের পথে হাঁটতে বাধ্য হয়েছে রেল। পরিষেবার পাশাপাশি এ বার ১৫০টি ট্রেন চালানোর দায়িত্ব বেসরকারি হাতে তুলে দিচ্ছে রেল। ভবিষ্যতে সংখ্যাটা বাড়বে। এই ট্রেনগুলির ভাড়ায় নিয়ন্ত্রণ থাকবে না সরকারের। সেই কারণে চলতি বাজেটে চিরাচরিত দূরপাল্লার নুতন ট্রেন ঘোষণার পরিবর্তে হামসফর-তেজসের মতো বেশি ভাড়ার নতুন ট্রেন চালানোয় জোর দিতে চায় রেল।
আলাদা রেল বাজেট নেই। এখন তা সাধারণ বাজেটের অংশ। মন্দার বাজারে বাজেটে রেল সংক্রান্ত প্রস্তাবে সরকারের কাছে থেকে বিশেষ কোনও চমকের আশা করছেন না রেল-কর্তারা। সূত্রের মতে, গত বছর রেলের বাজেট ছিল ১.৬০ লক্ষ কোটি টাকা। এ বছর ১.৭৫ লক্ষ কোটি টাকার মধ্যে থাকতে চলেছে। গত বছরে যেখানে কেন্দ্রীয় সাহায্য ছিল ৬৫,৮৩৭ কোটি টাকা। এ বার তা খুব বেশি হলে ৭০ হাজার কোটি টাকা হবে বলে মনে করা হচ্ছে। যে টাকা মূলত খরচ হবে নতুন লাইন তৈরি, পুরনো লাইন মেরামতি, পরিকাঠামো উন্নয়ন ও সুরক্ষার কাজে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy