সেই ভিডিও-র দৃশ্য।
আগামিকাল চেন্নাইয়ের আর কে নগর কেন্দ্রে উপনির্বাচন। তার আগের দিন তামিলনাড়ুর প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতার হাসপাতালে থাকাকালীন একটি ভিডিও প্রকাশ্যে আসায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে তামিলনাড়ুর রাজনীতিতে। এই আর কে নগর ছিল জয়ললিতারই কেন্দ্র। তাঁর মৃত্যুর কারণেই এই কেন্দ্রে উপনির্বাচন।
জয়ার এই ভিডিওটি প্রকাশ করেছেন টিটিভি দিনকরন শিবিরের বিধায়ক এস ভেত্রিভেল। ২০ সেকেন্ডের এই ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে, রাত্রিকালীন পোশাক পরে হাসপাতালের বেডে আধশোয়া অবস্থায় হাতের গ্লাস থেকে হেলথ ড্রিঙ্ক বা ফলের রস জাতীয় কিছু একটা খাচ্ছেন জয়া। গত বছরের ২২ সেপ্টেম্বর অসুস্থতার কারণে চেন্নাইয়ে অ্যাপোলো হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল জয়াকে। ৫ ডিসেম্বর মারা যান তিনি। তবে এডিএমকে-র পনীরসেলভম শিবিরের অভিযোগ, মৃত অবস্থাতেই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল জয়াকে। তিন মাস মৃত জয়াকে হাসপাতালে রেখে নিজের রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতে চেয়েছিলেন জয়ার বান্ধবী শশিকলা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও জানিয়েছিলেন, ভর্তির সময় অচৈতন্য ছিলেন জয়া। ভেত্রিভেলের বক্তব্য, ‘‘শশী বা দিনকরনের সঙ্গে আলোচনা না করেই আমি এই ভিডিও প্রকাশ করেছি। শশিকলা-বিরোধী শিবির জয়ার মৃত্যু নিয়ে অনেক প্রশ্ন তুলেছে। এই সব ষড়যন্ত্রের তত্ত্ব খারিজ করার জন্যই আমার এই ভিডিও প্রকাশ।’’
এই ভিডিও প্রকাশের ফলে নির্বাচনী বিধিভঙ্গ হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তামিলনাড়ুর মৎস্যমন্ত্রী ডি জয়কুমার। তাঁর কথায়, ‘‘আর কে নগরে উপনির্বাচনের আগের দিন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবেই এই ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে। আম্মার খ্যাতি এবং ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার জন্য এটি শশিকলার পরিবাবের চক্রান্ত।’’ তাঁর বক্তব্য, ‘‘জয়ার মৃত্যুর তদন্তের জন্য একটি তদন্ত কমিশন গড়া হয়েছে। সংবাদমাধ্যমকে নয়, সেই কমিশনের কাছেই ভিডিওটি দেওয়া উচিত ছিল।’’ জয়ললিতার এই ভিডিও প্রকাশ্যে আসার পরেই বিভিন্ন চ্যানেল তা সম্প্রচার করতে শুরু করে। পরে নির্বাচন কমিশন সেই সম্প্রচার বন্ধ করতে নির্দেশ দেয়। কমিশন জানিয়েছে, ভোটের ৪৮ ঘণ্টা আগে নির্বাচন সংক্রান্ত কোনও নথি বা বিষয় প্রকাশ বা সম্প্রচার করা বেআইনি। শশিকলার ভাইপো দিনকরন আগে দাবি করেছিলেন, হাসপাতালে জয়ললিতা টিভি দেখছেন এমন ভিডিও তাঁর কাছে আছে। দিনকরনের কথায়, ‘‘ভিডিওটি তুলেছিলেন শশিকলা। জয়ললিতাকে অপমান করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়। তদন্ত কমিশনে ছাড়া অন্য জায়গায় ভিডিওটি প্রকাশ করার অনুমতিও শশিকলা আমাদের দেননি।’’ ভিডিও ফুটেজটি তিনি তদন্ত কমিশনের হাতে তুলে দিতে প্রস্তুত বলেও জানিয়েছেন দিনকরন।
এই উপনির্বাচন ঘিরে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে আগেই। সেই কারণে ভোট স্থগিত রাখা এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের আর্জি নিয়ে দিল্লি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন এক ব্যক্তি। তবে এ দিন হাইকোর্ট কোনও নির্দেশ দেয়নি।
ফলে আগামিকাল আর কে নগরে ভোটযুদ্ধ। এই উপনির্বাচনকে মর্যাদার লড়াই হিসেবে দেখছে শশী এবং পনীর, দুই শিবিরই। এডিএমকে-র প্রার্থী হয়েছেন ই মধুসূদন। নির্দল প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন দিনকরন। আর কে নগরের এই আসনটি ছিনিয়ে নিতে মরিয়া ডিএমকে। প্রার্থী দিয়েছে বিজেপিও। টানটান এই ভোট পরিবেশে অন্য মাত্রা যোগ করল জয়ললিতার ভিডিও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy