সর্বানন্দ সোনোয়াল
উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল কর্তৃপক্ষের উচ্ছেদ অভিযানের নোটিস পেয়ে বাড়ি হারানোর আশঙ্কায় রয়েছেন মাইবাং সুভাষ নগর ও লোয়ার হাফলংয়ের শ’চারেক পরিবার।
ওই উচ্ছেদ অভিযান রুখতে মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়ালের দ্বারস্থ হলেন বিধায়ক বীরভদ্র হাগজার। এ বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে স্মারকলিপি পাঠিয়েছেন তিনি। তাতে উচ্ছেদ অভিযান না করতে রেলমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার আর্জি জানানো হয়েছে।
দীর্ঘদিন ধরে মাইবাং সুভাষ নগর ও লোয়ার হাফলংয়ে রেলের জমিতে ঘর তৈরি করে রয়েছেন অনেকে। সম্প্রতি উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল মাইবাং ও লোয়ার হাফলংয়ে প্রায় ৪০০ পরিবারকে উচ্ছেদ করার নোটিস পাঠায়। এতে সমস্যায় পড়েছে পরিবারগুলি। এ নিয়ে মাইবাং নাগরিক সমিতি উত্তর কাছাড় পার্বত্য স্বশাসিত পরিষদের সিইএম দেবলাল গারলোসার দ্বারস্থ হয়েছিল। তার পরিপ্রেক্ষিতে পার্বত্য পরিষদ রেল বিভাগকে চিঠি পাঠায়। তাতে মাইবাং ও লোয়ার হাফলংয়ে রেলের কত জমি রয়েছে, তা পরিষদের ভুমি ও রাজস্ব বিভাগের সঙ্গে যৌথ ভাবে নির্ধারণ করার কথা জানানো হয়েছিল। যত দিন ওই কাজ শেষ না হবে, তত দিন রেল কর্তৃপক্ষ উচ্ছেদ অভিযান চালাতে পারবে না পরিষদ ওই চিঠিতে উল্লেখ করেছিল।
এ বার বিধায়ক বীরভদ্র হাগজার এ নিয়ে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের জেনারেল ম্যানেজার চাহাতে রামের সঙ্গে দেখা করেন। তিনি উচ্ছেদ অভিযান বন্ধ রাখার অনুরোধ জানান। বীরভদ্রবাবু জানান, ডিমা হাসাও জেলা ষষ্ঠ তফসিলির অন্তর্ভুক্ত। ওই ৪০০ পরিবারকে উচ্ছেদ করা হলে, তাঁদের পুনর্বাসনে অন্য জায়গায় জমি দেওয়া অসম্ভব হতে পারে। তাতে সমস্যায় পড়বেন ওই সব পরিবার। রেল বিভাগ ওই জমিতে কোনও প্রকল্পের কাজের পরিকল্পনা করে থাকলে, তা অন্য কোনও জায়গায় সরিয়ে নেওয়ার অনুরোধ জানান বীরভদ্র। এই প্রস্তাব রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভুকে জানানোর জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।
গত কাল কেন্দ্রীয় রেল প্রতিমন্ত্রী রাজেন গোহাইয়ের সঙ্গে উত্তর কাছাড় পার্বত্য স্বশাসিত পরিষদের প্রতিনিধিদল দেখা করে। ডিমা হাসাও জেলার রেল যাত্রীদের সুবিধার জন্য গুয়াহাটি-নিউহাফলংয়ের মধ্যে হিল-কুইন ট্রেন চালানোর প্রস্তাব দেন তাঁরা। তা ছাড়া ১০০ বছর পুরনো লামডিং-বদরপুর মিটারগেজ লাইনে মাহুর থেকে হারাঙ্গাজাও পর্যন্ত অংশকে ‘হেরিটেজ’ হিসেবে রেখে দেওয়ার দাবির কথাও জানান।
পরিষদের সদস্য কুলেন্দ্র দাওলাগোপু জানিয়েছেন, এ সব নিয়ে আশ্বাস দিয়েছেন রেল প্রতিমন্ত্রী। পরিষদের প্রতিনিধিদলকে রাজেনবাবু জানিয়েছেন, ব্রডগেজ লাইনে গুয়াহাটি-নিউহাফলংয়ের মধ্যে হিল-কুইন ট্রেন চালানোর যে প্রস্তাব নিয়ে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের জেনারেল ম্যানেজার চাহাতে রামের সঙ্গে কথা বলবেন। হেরিটেজ লাইনের বিষয়েও পদক্ষেপ করার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
মাহুর থেকে হারাঙ্গাজাও পর্যন্ত মিটারগেজ লাইনের ওই অংশকে ‘হেরিটেজ’ ঘোষণা করা হলে, তা পর্যটকদের আকৃষ্ট করবে বলে আশাপ্রকাশ করেন ইএম কুলেন্দ্র দাওলাগোপু। পরিষদের প্রতিনিধিদলে ছিলেন কার্যনির্বাহী সদস্য নিরঞ্জন হোজাই,
সেমুয়েল চাংসন, বিশ্বজিৎ দাওলাগোপু।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy