Advertisement
০২ জুন ২০২৪
Iran

বিস্ফোরণের পিছনে কি ইরানের হাত

দিল্লি পুলিশের তরফে ইরানের দূতাবাসের কাছ থেকে গত কয়েক সপ্তাহে ভারতে আসা ইরানের নাগরিকদের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য চাওয়া হয়েছে।

সকালে হামলার দায় স্বীকার করে বিবৃতি দেয় জইশ-উল-হিন্দ নামে একটি সংগঠন।

সকালে হামলার দায় স্বীকার করে বিবৃতি দেয় জইশ-উল-হিন্দ নামে একটি সংগঠন। ছবি: রয়টার্স।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০২১ ০৬:৫০
Share: Save:

‘ট্রেলার’!

ইজ়রায়েল দূতাবাসের সামনে বিস্ফোরণস্থল থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে পাওয়া চিঠিতে ‘ট্রেলার’ শব্দটি রীতিমতো আতঙ্ক ছড়িয়েছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের মনে। তাঁরা মনে করছেন, ওই নাশকতার চক্রান্তে জড়িতরা আরও বড় মাপের পরিকল্পনা করে থাকতে পারে। সূত্রের মতে, ‘ট্রেলার’ লেখা ওই চিঠিতে কাশেম সোলেমানি ও মহসিন ফকরিজাদে নামে দু’জনের উল্লেখ রয়েছে। এর মধ্যে প্রথম জন ইরানের শীর্ষ স্থানীয় মিলিটারি কমান্ডার। আর দ্বিতীয় জন ইরানের পরমাণুবিজ্ঞানী। গত বছর ওই দু’জনেই নিহত হন। যাঁদের হত্যার পিছনে আমেরিকা ও ইজ়রায়েলের যৌথ হাত রয়েছে বলে দাবি করেছিল ইরান। ফলে সেই হত্যার প্রতিশোধ নিতেই ওই ‘ট্রেলার’ হামলা কি না, তা খতিয়ে দেখছেন গোয়েন্দারা। সব মিলিয়ে ২০১২ সালের পর ফের ইরান-ইজ়রায়েলের পারস্পরিক শত্রুতার কারণে নাশকতার সাক্ষী থাকল নয়াদিল্লি। মনে করা হচ্ছে, দিল্লির ওই ছোট মাপের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আসলে বার্তা দেওয়া হল ইজ়রায়েলকে।

আজ ঘটনাস্থলে নমুনা সংগ্রহ করতে যায় ন্যাশনাল সিকিয়োরিটি গার্ড (এনএসজি)-এর বম্ব ডেটা সেন্টার। গতকালই ঘটনাস্থলে ব্যাটারি ও তার পাওয়া গিয়েছিল। সে কারণে এটিকে আইইডি (ইমপ্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইজ়) বিস্ফোরণ বলে জানিয়েছিল জাতীয় তদন্ত সংস্থা (এনআইএ)। সূত্রের মতে, ঘটনাস্থল থেকে অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট পাওয়া যাওয়ায় বিস্ফোরকে আরডিএক্স ব্যবহারের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না। স্বরাষ্ট্র সূত্রের মতে, নাশকতা যে হতে পারে, তারও গোয়েন্দা তথ্য ইজ়রায়েলের কাছে সম্ভবত ছিল। সেই কারণে গতকাল বিস্ফোরণের কিছুক্ষণ আগেই বিশ্বে ইজ়রায়েলের সব দূতাবাসে সুরক্ষা বাড়াতে নির্দেশ দেয় তেল আভিভ।

প্রাথমিক ভাবে তদন্তে ওই হামলার পিছনে দু’টি সংগঠনের নাম উঠে এসেছে। চিঠিতে ইরানের বিজ্ঞানী ও কমান্ডারের নাম পাওয়ায় গোয়েন্দারা ইরানের প্রধান সামরিক বাহিনী—ইসলামিক রেভলিউশনারি গার্ড-এর হাত থাকার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না। ইজ়রায়েলেরও প্রাথমিক সন্দেহ তাই। তাই দিল্লি পুলিশের তরফে ইরানের দূতাবাসের কাছ থেকে গত কয়েক সপ্তাহে ভারতে আসা ইরানের নাগরিকদের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য চাওয়া হয়েছে। ইজ়রায়েলের একটি দলও ভারতে আসছে বলে জানা গিয়েছে।

এ দিকে আজ সকালে ওই হামলার দায় স্বীকার করে বিবৃতি দেয় জইশ-উল-হিন্দ নামে একটি সংগঠন। সোশ্যাল মিডিয়া টেলিগ্রাম-এ তারা দাবি করে, ‘জইশ-উল-হিন্দের সৈনিকেরা দিল্লির কড়া সুরক্ষা বলয়ে প্রবেশ করে আইইডি বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে। এটি ভারতের বড় শহরগুলিতে হামলার শুরু। সরকার যে অত্যাচার চালাচ্ছে এটি তার উত্তর। অপেক্ষা কর, আমরাও অপেক্ষায় রয়েছি।’ যদিও পরে গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, আজ পর্যন্ত ওই সংগঠনের কোনও নাম শোনা যায়নি। এমন কোনও সংগঠনের অস্তিত্ব রয়েছে বলে গোয়েন্দারা জানেন না। ওই মেসেজটি কার অ্যাকাউন্ট থেকে করা হয়েছে, তা খতিয়ে দেখছে দিল্লি পুলিশের সাইবার সেল।

অতীতের মতো এ বারও তদন্তে নেমে দেখা গিয়েছে, ঘটনাস্থল সংলগ্ন একাধিক সিসিটিভি ক্যামেরা অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে। ক্ষুব্ধ স্বরাষ্ট্রকর্তারা এ নিয়ে দিল্লি পুলিশের কাছে কৈফিয়ৎ তলব করেছে। সূত্রের মতে, ঘটনাস্থলের কাছে সিসিটিভি ক্যামেরা খারাপ হওয়া কাকতালীয় না কি তা পরিকল্পিত ভাবে খারাপ করা হয়েছিল তাও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Iran delhi bomb blast Israel Embassy
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE