Advertisement
০১ মে ২০২৪
Engineer

কুকুরের জন্য দামি মদ, বিলাসবহুল ঘর! কোটি কোটির সম্পত্তির উৎস নিয়ে কী বললেন সেই ইঞ্জিনিয়ার

গত ১১ মে হেমার বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ৭ কোটির সম্পত্তির হদিস পায় পুলিশ। প্রশ্ন উঠেছিল, ৩০ হাজার টাকা বেতন পাওয়া এক সহকারী ইঞ্জিনিয়ার কী ভাবে কোটি কোটি সম্পত্তির মালিক হলেন।

Hema Meena

এত কুকুর কোথা থেকে এল? তদন্তকারীদের জবাবে ইঞ্জিনিয়ার হেমা মীণার দাবি, এগুলি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
ভোপাল শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০২৩ ১৩:০২
Share: Save:

কত সম্পত্তি রয়েছে মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন ইঞ্জিনিয়ার হেমা মীণার? তা খুঁজে বার করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন তদন্তকারীরা। প্রাথমিক তদন্তে ৭ কোটির সম্পত্তির হদিস পেয়েছিল লোকায়ুক্ত পুলিশ। তদন্তকারীরা তখনই জানিয়েছিলেন, এই সম্পত্তি শুধু হিমশৈলের চূড়ামাত্র। আরও কত কোটির সম্পত্তি রয়েছে তা খুঁজে বার করার চেষ্টা চলছে।

তার পর থেকেই তদন্ত যত এগিয়েছে, ততই একের পর এক সম্পত্তির হদিস পেয়েছে লোকায়ুক্ত পুলিশ। এখনও পর্যন্ত তদন্তে যা উঠে এসেছে, তাতে জানা গিয়েছে, ৯৮ একর জমির মালিক হেমা। তার মধ্যে বিদিশার দেবরাজপুরে ৫৬ একর জমির উপর রয়েছে একটি বিশাল গুদাম। মুড়িয়াখেড়ায় ১৪ একর জমির উপর বিলাসবহুল খামারবাড়ি। এ ছাড়াও রায়সেনের মেহগ্রামে ২৮ একর জমি জুড়ে বিশাল পলিহাউস। এখানে বিভিন্ন ধরনের সব্জির চাষ করা হয়। খামারবাড়িতে একশোরও বেশি বিদেশি দামি কুকুর পাওয়া গিয়েছে। যে কুকুরগুলির দেখাশোনার জন্য একাধিক লোক রাখা হয়েছিল। তাদের বিদেশি মদ খাওয়ানো হত। শুধু তাই-ই নয়, অভিযোগ, কুকুরগুলির জন্য বিলাসবহুল কেবিন বানানো হয়েছিল। এ ছাড়াও তাদের স্নানের জন্য বানানো হয়েছিল বাথ টাব।

এত কুকুর কোথা থেকে এল? এ প্রসঙ্গে তদন্তকারীরা হেমার কাছে জানতে চাইলে তিনি দাবি করেন, এই কুকুরগুলি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। আর সেগুলি দেখাশোনার জন্য তাঁর বাড়িতে রাখা হয়েছে। কুকুরগুলি তাঁর নয় বলে দাবি করেছেন হেমা। তদন্তে জানা গিয়েছে, এক একটি কুকুরের দাম লাখ টাকার বেশি।

এর আগেই পুলিশ হদিস পেয়েছিল কোটি টাকার একটি বাংলোর। এ ছাড়াও দশটিরও বেশি বিলাসবহুল গাড়ি, বেশ কয়েক একর জমি এবং বিলাসবহুল একটি বিশাল বাড়ির। যেখানে ৪০টি ঘর পাওয়া গিয়েছে। গত ১১ মে ইঞ্জিনিয়ার হেমার বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ৭ কোটির সম্পত্তির হদিস পেয়েছিল পুলিশ। প্রশ্ন উঠেছিল ৩০ হাজার টাকা বেতন পাওয়া এক সহকারী ইঞ্জিনিয়ার কী ভাবে কয়েক বছরের মধ্যে কোটি কোটি সম্পত্তির মালিক হলেন।

তদন্তকারীরা বলছেন, ৩০ হাজার বেতনের হিসাবে এক বছরে ৩ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা হয়। পুরো কর্মজীবনে তাঁর আয় হওয়া উচিত ৪০-৪২ লক্ষ টাকা। জেরায় হেমা তদন্তকারীদের কাছে দাবি করেছেন, যে সব সম্পত্তির হদিস মিলেছে, সেগুলি তাঁকে বাবা এবং ভাই দান করেছেন। কিন্তু তদন্তে জানা গিয়েছে যে, বাবার নামে বেশ কিছু সম্পত্তি কিনেছিলেন হেমা। প্রশ্ন উঠছে, যে হাউসিং কর্পোরেশনের সহকারী ইঞ্জিয়ানিয়ার হিসাবে কাজ করতেন হেমা, সেই কাজ করে এত সম্পত্তি বানানো অবিশ্বাস্য। তা হলে কার হাত ছিল হেমার এত প্রতিপত্তির জন্য? তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, হেমার এই বিপুল সম্পত্তির মালিক হওয়ার নেপথ্যে হাত রয়েছে আর এক ইঞ্জিনিয়ার জনার্দন সিংহের। হেমাকে প্রথমে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। তার পর জনার্দনের নাম প্রকাশ্যে আসতে তাঁকেও চাকরি থেকে ছাঁটাই করে দেওয়া হয়।

২০১১ সালে সহকারী ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে ভোপালে চাকরিতে যোগ দিয়েছিলেন হেমা। পাঁচ মাস চাকরি করার পর ইস্তফা দেন। এর পর ২০১৩ সালে আবার কাজে যোগ দেন তিনি। দেড় বছর চাকরি করার পর ২০১৫ সালে আবার ইস্তফা দিয়েছিলেন হেমা। আবার ২০১৬-তে চাকরিতে যোগ দেন। এ বারও সাগর হাউসিং কর্পোরেশনের সহকারী ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে যোগ দেন। ২০২২ সালে চাকরির কার্যকালের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেই মেয়াদ ২০২৩-এর অক্টোবর পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়। কিন্তু তার আগেই আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পত্তির মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন হেমা। বরখাস্ত করা হয়েছে চাকরি থেকেও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Engineer Disproportionate Case Madhya Pradesh
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE