ফাইল চিত্র।
প্রবল শীতের মুখে পূর্ব লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় চিনের সঙ্গে দীর্ঘ টানাপড়েনের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে নয়াদিল্লি। তারই মধ্যে উদ্বেগ আরও বাড়িয়ে নতুন সংঘর্ষবিন্দু তৈরি হল বেজিংয়ের সঙ্গেই। চিনের সরকার নিয়ন্ত্রিত সংবাদ সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী, তিব্বতে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার খুব কাছে ইয়ারলাং জ্যাংবো নদীর উপরে বিশাল বাঁধ তৈরির পরিকল্পনা করেছে চিন। এই বাঁধ নির্মাণ হলে উত্তর-পূর্ব ভারতে প্রবল জলাভাব দেখা দেওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এই ইয়ারলাং নদীই সীমান্ত পেরিয়ে অরুণাচলে দিয়ে অসমে ঢুকেছে ব্রহ্মপুত্র নামে।
গত কাল চিনের রিপোর্টটি প্রকাশিত হওয়ায় কিছুটা চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে সাউথ ব্লকে। তবে বিষয়টি নিয়ে প্রকাশ্যে এখনই মুখ খোলেননি কর্তারা। বিষয়টির উপর নজর রাখা হচ্ছে। প্রয়োজন মতো ‘নির্দিষ্ট পথে’ বেজিংয়ের কাছে প্রতিবাদ জানানো হবে বলে জানা গিয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা অতীতে একাধিক বার জানিয়েছেন যে, দু’দেশের মধ্যে দিয়ে বয়ে যাওয়া নদীগুলির প্রশ্নে ভারতের চেয়ে অনেক সুবিধাজনক অবস্থায় রয়েছে চিন। বিশেষ করে তিব্বত অঞ্চল দখলে আসার পরে দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম নদীগুলির উৎস রয়েছে বেজিংয়ের নিয়ন্ত্রণে। ভারত রয়েছে নিম্ন অববাহিকা বা ভাটিতে। ফলে এই সব নদীতে বাঁধ দেওয়া বা জলবিদ্যুৎ প্রকল্প গড়ার মতো কোনও কার্যকলাপ হলে জলস্রোতের প্রশ্নে সমস্যায় পড়বে নিম্ন অববাহিকায় থাকা ভারত।
২০১৮ সালে ভারত ও চিনের মধ্যে জল সম্পদ, নদীখাত উন্নয়ন এবং গঙ্গা পুনরুজ্জীবিত প্রকল্প সংক্রান্ত একটি চুক্তিপত্র সই হয়। তার শর্ত অনুযায়ী, নদীখাতের জলস্তর বৃদ্ধি পেলে প্রতি বছর ভারতকে সে সম্পর্কে তথ্য দিতে বাধ্য চিন। কূটনৈতিক সূত্রের মতে, গত এক বছর ধরেই সেই চুক্তি পালনে গয়ংগচ্ছ মনোভাব দেখা যাচ্ছে বেজিংয়ের।
ব্রহ্মপুত্রের উৎসে বাঁধ দেওয়ার প্রয়াস চিনের পক্ষ থেকে নতুন নয়। সে সময় ভারতের প্রবাহ কমে যাবে এই আশঙ্কা করে প্রতিবাদ জানিয়েছে সাউথ ব্লক। শুধু ভারতই নয়, ভৌগোলিক ভাবে বাংলাদেশের অবস্থান ব্রহ্মপুত্রের আরও ভাটি অঞ্চলে। ফলে এই বাঁধ হলে তার প্রভাব পড়বে সে দেশেও। ভারত-বাংলাদেশ যৌথ নদী কমিশনের তরফে এই ক্ষতিকর দিকটি নিয়ে আগে আলোচনাও হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy