হায়দরাবাদে বৈঠকে কে চন্দ্রশেখর রাও এবং অরবিন্দ কেজরীওয়াল। ছবি: টুইটার থেকে নেওয়া।
দিল্লিতে ‘ক্ষমতা দখলের’ জন্য নরেন্দ্র মোদী সরকারের জারি করা বিতর্কিত অধ্যাদেশ (অর্ডিন্যান্স) প্রত্যাহারের দাবি তুললেন তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী তথা ভারত রাষ্ট্র সমিতি (বিআরএস)-র প্রতিষ্ঠাতা কে চন্দ্রশেখর রাও। সেই সঙ্গে, শনিবার হায়দরাবাদে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী তথা আম আদমি পার্টি (আপ)-র প্রধান অরবিন্দ কেজরীওয়ালের সঙ্গে বৈঠকের পর রাও জানান, বিতর্কিত ওই অধ্যাদেশকে ‘আইনের’ রূপ দিতে মোদী সরকার সংসদে বিল আনলে বিআরএস তার বিরোধিতা করবে।
রাও বলেন, ‘‘কেন্দ্রের কাছে আমরা অগণতান্ত্রিক অধ্যাদেশ বাতিলের দাবি জানাচ্ছি। সংসদে এ সংক্রান্ত বিল আনা হলে আমরা কেজরীওয়ালের পাশে দাঁড়াব। মোদী সরকার প্রত্যাহার না করলে ওই বিল আমরা ভোটাভুটিতে হারাব। কেন্দ্রের সঙ্গে অর্ডিন্যান্স-সংঘাতে দিল্লির আপ সরকারের পাশে দাঁড়ানোর আবেদন জানাতে চলতি সপ্তাহে বিরোধী দলের নেতাদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করে চলেছেন কেজরীওয়াল। মঙ্গলবার পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান, দিল্লির মন্ত্রী অতিশী এবং আপ সাংসদ রাঘব চড্ডাকে সঙ্গে নিয়ে নবান্নে পৌঁছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন তিনি। বুধবার মুম্বইয়ে গিয়ে সাক্ষাৎ করেছিলেন শিবসেনা (বালাসাহেব) নেতা উদ্ধব ঠাকরের সঙ্গে।
এর পর বৃহস্পতিবার মুম্বইতেই এনসিপি সভাপতি শরদের সঙ্গে বৈঠক করেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। তিন দলের নেতানেত্রীই অর্ডিন্যান্স-বিতর্কে কেজরীর পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দিয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার কেজরী জানিয়েছিলেন, কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী এবং দলের সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গের সঙ্গে দেখা করার জন্য সময় চাইবেন তিনি। শুক্রবারই আপ প্রধান জানিয়েছেন, কংগ্রেসের দুই নেতার কাছে সাক্ষাতের সময় চেয়ে বার্তা পাঠিয়েছেন তিনি।
যদিও আপের ডাকে কংগ্রেস কতটা সাড়া দেবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। দলের অন্দরের খবর, এ বিষয়ে দিল্লি এবং পঞ্জাব প্রদেশ কংগ্রেসের অবস্থান জানতে চায় হাই কমান্ড। কারণ ওই দুই রাজ্যেই আপের সঙ্গে লড়াই কংগ্রেসের। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, কেজরীর এই পদক্ষেপ তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, গত এক দশক ধরে সন্তর্পণে বিজেপি এবং কংগ্রেসের থেকে সমদূরত্ব বজায় রেখেছেন তিনি। এ বার আপ-প্রধান ২০২৪-এর লোকসভা ভোটের আগে অবস্থান বদলানোর বার্তা দিতে চেয়েছেন বলেও মনে করছেন তাঁরা।
প্রসঙ্গত, গত ১১ মে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন সাংবিধানিক বেঞ্চ জানিয়েছিল, আমলাদের রদবদল থেকে যাবতীয় প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার রয়েছে শুধুমাত্র দিল্লির নির্বাচিত সরকারের। কিন্তু শুক্রবার রাত ১১টা নাগাদ অর্ডিন্যান্স এনে ১০ পাতার গেজ়েট বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে কেন্দ্র। তাতে বলা হয়, জাতীয় রাজধানী সিভিল সার্ভিসেস কর্তৃপক্ষ গঠন করা হচ্ছে। আমলাদের নিয়োগ এবং বদলির ব্যাপারে তাঁরাই সিদ্ধান্ত নেবেন। (দিল্লির) মুখ্যমন্ত্রী হবেন এর চেয়ারপার্সন। কিন্তু কমিশনে কেন্দ্র এবং লেফটেন্যান্ট গভর্নরের প্রতিনিধি সংখ্যা বেশি থাকায় তাঁরাই কার্যত ‘নির্ণায়ক’ হবেন আমলাদের বদলি সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অমান্য করার অভিযোগ তুলে সব বিরোধী দলকে তাঁদের পাশে দাঁড়ানোর আর্জি জানিয়েছেন কেজরীওয়াল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy