বাবাকে নিজের লিভারের অংশ দান করে দেবনন্দা। ছবি: সংগৃহীত।
কেরলের দেবনন্দা। দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী। তাঁকে নিয়েই এখন দেশ জুড়ে হইচই। বাবাকে নিজের লিভারের অংশ দান করে দেবনন্দা এখন দেশের কনিষ্ঠতম অঙ্গদাতা।
এ দেশের নিয়ম অনুযায়ী, প্রাপ্তবয়স্ক না হলে কিন্তু কেউ অঙ্গদান করতে পারে না। দেবনন্দার বয়স তো ১৭। কিন্তু এমনই তার মনের জোর, সোজা কেরল হাই কোর্টে গিয়ে অনুমতি আদায় করে ছেড়েছে সে।
ত্রিশূরে বাড়ি দেবনন্দার। বাবা প্রতীশ, বয়স ৪৮। তিনি একটি ক্যাফে চালান। হঠাৎই ধরা পড়ল লিভারের জটিল অসুখ, সঙ্গে ক্যানসারের অঙ্কুর। উপযুক্ত অঙ্গদাতা পাওয়া যাচ্ছিল না। দেবনন্দা ঠিক করে ফেললেন, বাবাকে বাঁচানোর দায়িত্ব নিজেই নেবেন। কিন্তু অঙ্গ প্রতিস্থাপন আইন ১৯৯৪ অনুযায়ী, অপ্রাপ্তবয়স্ক কেউই অঙ্গদান করতে পারে না। দেবনন্দা তন্ন তন্ন করে সব সম্ভাবনা খতিয়ে দেখে খুঁজে বের করলেন, অতীতে এক বিশেষ ক্ষেত্রে কেরল হাই কোর্টনাবালকের অঙ্গদানে অনুমতি দিয়েছিল। সেই নজির আশ্রয় করেই আদালতে গেলেন দেবনন্দা। আদালত তাঁর একাগ্রতা দেখে ব্যতিক্রমী অনুমোদন দিল। সেই সঙ্গে প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে লড়াই করার এই জিদকেও প্রশংসা করল।
এ বার শুরু হল অঙ্গদানের প্রস্তুতি। ডায়েট তৈরি করে, জিম করে দেবনন্দা নিজের শরীরকে উপযুক্ত করে গড়লেন, যাতে তাঁর লিভার সেরা অবস্থায় থাকে। তার থেকেই একটা অংশ বসবে তাঁর বাবার শরীরে। ৯ ফেব্রুয়ারি আলুভার একটি হাসপাতালে দেবনন্দার শরীরে অস্ত্রোপচার হয়েছে। ওঁর লড়াইকে কুর্নিশ জানিয়ে হাসপাতাল কোনও টাকা নেয়নি। এক সপ্তাহ পরে হাসপাতাল থেকে তিন দিন আগে ছাড়া পেয়েছেন দেবনন্দা। বলেছেন, তিনি এখন, ‘‘নিশ্চিন্ত, গর্বিত, আনন্দিত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy