বিতর্কিত ধর্মপ্রচারক জাকির নাইকের সঙ্গে গাঁধী পরিবারের যোগসূত্র তুলে ধরে এ বারে উত্তরপ্রদেশের ভোটের আগে পাল্টা রাজনৈতিক প্রচারে নামল বিজেপি।
ঢাকার গুলশনে সন্ত্রাস হামলার পরে আইএস জঙ্গিদের উৎসাহ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল বিতর্কিত ধর্মপ্রচারক জাকির নাইকের বিরুদ্ধে। নাইকের সংস্থা ‘ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশন’ সনিয়া গাঁধী পরিচালিত ‘রাজীব গাঁধী ফাউন্ডেশন’কে ৫০ লক্ষ টাকা ‘ঘুষ’ দিয়েছে বলে অভিযোগ তুলল বিজেপি। নরেন্দ্র মোদী সরকারের আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ আজ অভিযোগ করেন, ‘‘জাকির নাইকের যাবতীয় অনৈতিক ও দেশ-বিরোধী কাজ ধামাচাপা দেওয়ার জন্য এই ঘুষ দেওয়া হয়েছিল ইউপিএ আমলে।’’
ঘটনাটি ঠিক কী?
সনিয়া গাঁধী পরিচালিত রাজীব গাঁধী ফাউন্ডেশনকে ৫০ লক্ষ টাকা অনুদান দেওয়া হয়েছিল ২০১১ সালে। এই ফাউন্ডেশনে সনিয়া গাঁধী ছাড়াও প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ, রাহুল গাঁধী। প্রিয়ঙ্কা বঢ়রা, পি চিদম্বরমের মতো সদস্যরা রয়েছেন। বিজেপির অভিযোগ, প্রথমে রাজীব গাঁধী ফাউন্ডেশন এই অনুদান প্রাপ্তির কথা অস্বীকার করে। পরে স্বীকার করে বলে, এই ফাউন্ডেশনের অধীনে ‘রাজীব গাঁধী চ্যারিটেবল ট্রাস্ট’-এ এই অনুদান দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কংগ্রেসের অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি বলেন, ‘‘যখনই জাকির নাইকের সংস্থার গতিবিধি সমক্ষে এসেছে, সেই সময় এই অর্থ ফেরত দেওয়া হয়েছে।’’ অথচ এই অর্থ ফেরতের কথা অস্বীকার করেছে জাকির নাইকের সংস্থা। তাদের কথায়, ‘রাজীব গাঁধী চ্যারিটেবল ট্রাস্ট’ নয়, অর্থ দেওয়া হয়েছিল ‘রাজীব গাঁধী ফাউন্ডেশন’কেই। আর এখন যদি তারা অর্থ ফেরত দেওয়ার পরিকল্পনাও করে, এখনও পর্যন্ত তা এসে পৌঁছায়নি।
আরও পড়ুন: অযোধ্যায় গিয়ে রাম নয়, রামভক্ত হনুমানের শরণে রাহুল গাঁধী
নরেন্দ্র মোদী এখন ক্ষমতায়। তাঁর অধীনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকই জাকির নাইকের সংস্থার বিরুদ্ধে তদন্ত করে যাবতীয় তথ্য হাতে পেয়েছে। প্রয়োজন হলে আইন মাফিক ব্যবস্থাও সরকার অনায়াসে গ্রহণ করতে পারে। কিন্তু বিজেপি নেতৃত্ব উত্তরপ্রদেশের নির্বাচনের আগে আসলে রাজনৈতিক রুটি সেঁকতে এই বিষয়টি নিয়ে হল্লা করতে চাইছে। বিশেষ করে রাহুল গাঁধী যখন গোটা উত্তরপ্রদেশ চষে বিজেপিকে রোজ তোপ দাগছেন, জাতপাতের ঊর্ধ্বে উঠে হিন্দু ও সংখ্যালঘু ভোটকে কাছে টানতে চাইছেন, সেই সময় গাঁধী পরিবার সন্ত্রাসবাদীদের মদত দিচ্ছে- এই তকমাটি সেঁটে দিতে চাইছে বিজেপি। যাতে হিন্দু ও আধুনিক সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্ক থেকে দূরে রাখা যায় কংগ্রেসকে।
আর সে কারণেই কেন্দ্রের আইনমন্ত্রীকে দিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করিয়ে বিজেপি প্রশ্ন তুলছে, ইউপিএ আমলে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ২০১২ সালেই সংসদে এক লিখিত প্রশ্নের জবাবে জানিয়েছিলেন, জাকির নাইক পরিচালিত ‘পিস টিভি’র গতিবিধি সন্দেহজনক এবং সেটি সরকারের নজরদারিতে রয়েছে। রবিশঙ্করের প্রশ্ন, তাহলে কেন ২০১২ সালেই এই অর্থ ফেরত দেওয়া হল না? ২০১৩ সালে সেই সময় কেন্দ্রের সংখ্যালঘু মন্ত্রী রহমান খান মণীশ তিওয়ারিকে বরং জাকির নাইকের তারিফ করে তাঁকে চিঠি লেখেন। গেরুয়া শিবির থেকে যাতে অপদস্থ হতে না হয়, তার জন্য সাহায্যও চেয়েছিলেন সংখ্যালঘু মন্ত্রী। রবিশঙ্করের বক্তব্য, সেই সময় শুধুমাত্র দিগ্বিজয় সিংহের মতো একা কোনও ব্যক্তি সন্ত্রাসবাদীদের সমব্যথী ছিলেন এমন নয়, এখন দেখা যাচ্ছে গোটা কংগ্রেস এর সমর্থনে ছিল। এমনকী গাঁধী পরিবারের প্রত্যক্ষ নজরদারিতেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy