তৃণমূল এবং জামাতে ইসলামির যোগাযোগ নিয়ে জল ক্রমশই ঘোলা হচ্ছে। বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলির পর এ বার নয়াদিল্লি সফরে এসে এই ঘটনার নিন্দা করলেন সে দেশের সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নুর। আজ তিনি বলেন, “এই ধরনের ঘটনা ঘটে থাকলে সেটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। ভারত এবং বাংলাদেশ উভয়েরই স্বার্থের বিরোধী।” বাংলাদেশের মন্ত্রীরা দিল্লি এসে একের পর এক এই বিষয়টি নিয়ে সরব হওয়ায় গোটা পরিস্থিতি কেন্দ্রের কাছেও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক, গোয়েন্দা বিভাগ এবং বিদেশ মন্ত্রক স্তরেও তৎপরতা বেড়েছে।
সার্কের সদস্য দেশগুলির সংস্কৃতি মন্ত্রীদের বৈঠকে যোগ দিতে আজ নয়াদিল্লি এসেছেন নুর, যিনি বাংলাদেশের এক জনপ্রিয় নাট্যব্যক্তিত্বও। আগামী কাল তাঁদের সার্ক সংক্রান্ত মূল বৈঠকের আগে আজ কেন্দ্রীয় সংস্কৃতিমন্ত্রী শ্রীপদ নায়েকের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেছেন তিনি। বৈঠকের পরই তিনি সরব হয়েছেন সারদার অর্থ বাংলাদেশে পাচারের মতো বিষয়টি নিয়ে। বাংলাদেশের সংস্কৃতিমন্ত্রী বলেন, “এ ঘটনাকে দুর্ভাগ্যজনক বলছি এই জন্য যে, জামাতের মতো মৌলবাদী ও জঙ্গি সংগঠনগুলির বিরুদ্ধে আমরা যেমন লড়াই করছি, তেমনই লড়ছে ভারতও। অভিন্ন স্বার্থ এ ক্ষেত্রে জড়িত।” তবে নুরের মতে, রাজ্য সরকার এই কাজ করেছে বলে তিনি বিশ্বাস করেন না। ব্যক্তিগত উদ্যোগে এমন ঘটনা ঘটে থাকতে পারে।
বস্তুত বিষয়টি নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সঙ্গে এখনই সংঘাতে যেতে রাজি নন শেখ হাসিনা। আপাতত তিনি রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে নিউ ইয়র্কে। ২৭ তারিখ সেখানেই মোদীর সঙ্গে তাঁর বৈঠকে বসার কথা। জামাতকে অর্থসাহায্য দেওয়া ও কলকাতা-সহ পশ্চিমবঙ্গের নানা জায়গায় রাজ্যের শাসক দলের আশ্রয়ে এই মৌলবাদী সংগঠনের পলাতক দুষ্কৃতীদের আশ্রয় নেওয়ার বিষয়টি তিনি বৈঠকে তুলবেন। কিন্তু তাঁর অগ্রাধিকার থাকছে তিস্তা চুক্তি ও স্থলসীমান্ত চুক্তির বিষয়টিই। হাসিনা ভালই জানেন, এই দু’বিষয়ে রাজ্য সরকারের মতামতের গুরুত্ব রয়েছে। দিল্লি বার বার বলছে, অভ্যন্তরীণ ক্ষেত্রে ঐকমত্যের অভাবেই এই দুই চুক্তি করা যাচ্ছে না। জামাতের বিষয়ে অত্যধিক আক্রমণাত্মক হলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার তিস্তা বা স্থলসীমান্ত চুক্তির বিরোধিতায় অনড় অবস্থান নিতে পারে এমন একটা আশঙ্কা শেখ হাসিনার রয়েছে। তা ছাড়া, তিনিও মনে করেন, মমতার অগোচরেই হয়তো তৃণমূলের কিছু নেতা জামাতের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে যাচ্ছে। বাংলাদেশের সংস্কৃতি মন্ত্রীও হাসিনা সরকারের সেই সুরেই কথা বলেছেন নয়াদিল্লিতে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy