কর্পোরেট হাওয়া এ বার রেল মন্ত্রকে। ভাল কাজে পুরস্কার আর ব্যর্থতায় তিরস্কার। রেলের জেনারেল ম্যানেজার ও ডিআরএম-দের বৈঠকে বৃহস্পতিবার এই নিদানই দিলেন রেলমন্ত্রী সদানন্দ গৌড়া।
সামনে রেল বাজেট। তার আগে সমস্ত জোনের জেনারেল ম্যানেজার ও ডিআরএম-দের বৈঠকে ডেকেছিলেন রেলমন্ত্রী। প্রথম বারই রেল মন্ত্রকের বুনিয়াদি সমস্যাগুলি চিহ্নিত করে তাঁর সমাধান খোঁজার উপরে জোর দিলেন তিনি। তাঁর কথায় যাত্রী ও পণ্যবাবদ আয় তলানিতে। খাবারের মান এবং স্টেশন ও ট্রেনের পরিচ্ছন্নতাও তথৈবচ। যাত্রী সুরক্ষার হালও শোচনীয়। সময়ে ট্রেন চলাচল তো ভুলেই গিয়েছেন যাত্রীরা। এই সমস্যাগুলির আশু সমাধান করতে হবে রেলকর্তাদের।
পরিষেবা ক্ষেত্রে নতুন মন্ত্রী কোনও ঢিলেমি সহ্য করবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন। গৌড়ার মতে, গয়ংগচ্ছ মনোভাবের দিন গিয়েছে। এখন কাজে সফল হলে অফিসারদের যেমন পুরস্কৃত করা হবে তেমনি কোনও জোন থেকে অভিযোগ এলে সংশ্লিষ্ট জেনারেল ম্যানেজার ও ডিআরএম-কে জবাবদিহি করতে হবে। অন্যথায় ব্যবস্থা।
পরিষেবা নিয়ে যাত্রীদের অভিযোগ নতুন নয়। বিশেষ করে ট্রেন ও স্টেশনের পরিচ্ছন্নতা ও খাবারের মান নিয়ে মন্ত্রকের কাছে গুচ্ছ গুচ্ছ অভিযোগ জমা পড়ছে। যাত্রীদের অভিযোগ যে ন্যায্য তা মেনে নিয়ে গৌড়া এ দিন বলেন, “আমরা নিয়মানুবর্তিতা, সাফাই ও পরিবেষার ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট মানের চেয়ে অনেক পিছিয়ে। পড়শি চিনও এ বিষয়ে অনেক এগিয়ে।” পণ্য ও যাত্রিভাড়া থেকে আয়ের ক্ষেত্রেও চিন ভাল অবস্থায় রয়েছে বলে মন্ত্রীর দাবি।
এই চিত্রটি বদলাতে রেলকর্মীদের একটি দল হিসাবে কাজ করার পরামর্শ দেন তিনি।
কেন্দ্রে নতুন সরকার আসার দিনই যাত্রী ও পণ্য পরিবহণের ভাড়া বাড়ানোর একটি নোটিশ জারি করেছিল রেল বোর্ড। পরে বিজেপির চাপে তারা তা বাতিল করে। কিন্তু সেটাই আবার কার্যকর করা হচ্ছে বলে এ দিন ওই বৈঠকে ইঙ্গিত মিলেছে। গত এক বছরে একাধিক বার রেলের ভাড়া বাড়লেও খরচ বেড়েছে। ফলে ভাঁড়ার কার্যত খালি। এই পরিস্থিতিতে আয় বাড়াতে সব শ্রেণির যাত্রিভাড়ায় প্রায় ১৪ শতাংশ ও পণ্য ভাড়ায় পাঁচ থেকে ৬.৫ শতাংশ বৃদ্ধির সুপারিশ করেছে রেল বোর্ড। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে কথা বলেছেন গৌড়া। মন্ত্রক সূত্রের খবর, সবুজ সঙ্কেত দিয়েছেন মোদী। জুলাই মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে রেল বাজেট পেশ হতে পারে।
তার আগেই পণ্য ও যাত্রিভাড়া বৃদ্ধি হতে পারে বলে জানিয়েছেন রেলকর্তারা। আজ গৌড়াও জানিয়েছেন, “আলোচনা চলছে। আগামী তিন-চার দিনের মধ্যেই ভাড়া নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে।”
মন্ত্রকের আয় তলানিতে এসে ঠেকায় বুলেট ট্রেন চালু কিংবা স্টেশনগুলিকে বিশ্বমানের করে তুলতে বিদেশি বিনিয়োগের দরকার রয়েছে বলেও মনে করছে রেল মন্ত্রকের একাংশ। গৌড়াও নিজে মনে করেন, রেলের বিভিন্ন ক্ষেত্রে বেসরকারি বিনিয়োগের প্রয়োজন রয়েছে। তাঁর কথায়, “ইতিমধ্যেই বিষয়টি নিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের সঙ্গে কথা হয়েছে।” এ দিন ওই বৈঠকে রেলের ২৭ জন জেনারেল ম্যানেজার ও ৬০ জন ডিআরএম হাজির ছিলেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy