রায়বরেলীতে মোদীকে তোপ। ছবি: পিটিআই
রাহুল গাঁধী প্রচারে তেমন ছাপ ফেলতে পারছেন না, বুঝতে পারছেন কংগ্রেস নেতৃত্বও। ভোটের আঁচ সামলাতে তাই আসরে নেমেছেন মা সনিয়া গাঁধী। জনসভা করার পাশাপাশি, টিভি বিজ্ঞাপনেও জাতির উদ্দেশে বক্তৃতা দিচ্ছেন তিনি। এরই সঙ্গে ময়দানে এ বার বোন প্রিয়ঙ্কা বঢরাও।
গত ক’দিন মূলত বরুণ গাঁধীকেই আক্রমণ করে এসেছেন তিনি। আজ তিনি মায়ের কেন্দ্র রায়বরেলীতে গিয়ে তীব্র ভাষায় বিঁধলেন নরেন্দ্র মোদীকে।
একই রকম তীব্রতায়। বললেন, “এ বারের নির্বাচনে দু’ ধরনের রাজনীতি চলছে।
এক দিকে ঐক্যের আদর্শে কংগ্রেসের বিশ্বাস, অন্য দিকে রয়েছে বিজেপির বিভাজন আর সাম্প্রদায়িকতার রাজনীতি।”
ভোট-পর্বের মাঝে সনিয়ার এ ভাবে প্রচারযুদ্ধে এগিয়ে আসাকে রাহুলের ব্যর্থতার প্রমাণ হিসেবেই তুলে ধরছেন নরেন্দ্র মোদী, অরুণ জেটলিরা। তবে প্রিয়ঙ্কা সম্পর্কে তাঁদের মূল্যায়ন ভিন্ন। ঘরোয়া স্তরে বিজেপির অনেক নেতা কবুল করছেন, এ বারের নির্বাচনে রাহুলের বদলে প্রিয়ঙ্কা যদি কংগ্রেসের মুখ হয়ে উঠতেন, তা হলে বিজেপির লড়াইটা আরও কঠিন হয়ে পড়ত। কারণ, রাহুলের থেকে প্রিয়ঙ্কার ঝাঁঝ অনেক বেশি। চেহারা-ছবিতে শুধু নয়, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের নিরিখেও প্রিয়ঙ্কার মধ্যে ইন্দিরা গাঁধীর আদল খুঁজে পান অনেকে। ফলে প্রিয়ঙ্কা গোটা দেশে ঘুরে মোদী-বিরোধিতায় মুখর হলে সেটা অবশ্যই চিন্তায় ফেলত বিজেপি নেতৃত্বকে।
তাঁদের কাছে এটা স্বস্তির বিষয় যে, ভোটের সিংহভাগ লড়াইটা শেষ হয়ে যাবে আগামী দু-দফার মধ্যেই। আর প্রিয়ঙ্কা নিজেকে সীমাবদ্ধ রেখেছেন মা ও দাদার কেন্দ্র রায়বরেলী-অমেঠীর মধ্যে।
ঘরোয়া স্তরে বিজেপি নেতারা যে আলোচনা করছেন, কংগ্রেসের অনেক নেতাই তা মানছেন এখন। কংগ্রেসের এক শীর্ষ নেতা এ দিন স্বীকার করে নেন, রাহুলের প্রচারে যতটা ছাপ পড়ার আশা ছিল, তা হচ্ছে না। রাহুল যতই মোদীকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করুন, বিজেপির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী তাঁর নিজস্ব শৈলীতে তা নস্যাৎ করে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। রাহুল সম্পর্কে একটি মনোভাব তৈরি হচ্ছে, তিনি ব্যক্তি হিসেবে মোদীর থেকে ঢের ভাল। কিন্তু প্রশাসক হিসেবে রাহুলের থেকে মোদীকেই বেশি নম্বর দিতে চাইছে জনতা। বিভিন্ন সমীক্ষাতেও জনতার এই মনোভাব প্রতিফলিত হয়েছে। এই পরিস্থিতিতেই শেষ লগ্নে মোদী-বধে অবতীর্ণ হতে হচ্ছে সনিয়া ও প্রিয়ঙ্কাকে।
কংগ্রেস নেতারা বুঝতে পারছেন, রাহুলকে প্রচারের মুখ করাটা কৌশলগত ভাবেও ভুল হয়েছে। কারণ, রাহুলের থেকে গাঁধী পরিবারের বাকিদের গ্রহণযোগ্যতা অনেক বেশি। গত দুটি নির্বাচনে সনিয়া গাঁধীর গ্রহণযোগ্যতার প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। তাই অনেক আগে থেকেই সনিয়াকে আরও বেশি ব্যবহার করলে ভাল হত। যদিও দলের তরফে বলা হচ্ছে, এখনও পাঁচ দফার ভোট বাকি। চারশোটির বেশি আসনে এখনও ভোট হয়নি। এখন থেকে মোদীকে বিঁধতে বাকি সকলকেই ব্যবহার করা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy