Advertisement
১৫ মে ২০২৪

সাংমার বিরুদ্ধে রাহুলের তুরুপের তাস ডারিল

অবশেষে জল্পনার অবসান। মেঘালয়ের তুরা কেন্দ্রে পূর্ণ সাংমার সঙ্গে টক্কর দেবেন কংগ্রেসের যুব প্রার্থী ডারিল মোমিন। অন্য দিকে, শিলং কেন্দ্রে বর্তমান সাংসদ তথা প্রবীণ কংগ্রেস নেতা ভিনসেন্ট পালাকেই প্রার্থী মনোনীত করা হয়েছে। প্রার্থী বাছাইয়ে নবীন-প্রবীণের টানাপোড়েনের জেরে পালা ও ডারিলের ভাগ্য ঝুলছিল।

রাজীবাক্ষ রক্ষিত
গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০১৪ ০২:২৫
Share: Save:

অবশেষে জল্পনার অবসান। মেঘালয়ের তুরা কেন্দ্রে পূর্ণ সাংমার সঙ্গে টক্কর দেবেন কংগ্রেসের যুব প্রার্থী ডারিল মোমিন। অন্য দিকে, শিলং কেন্দ্রে বর্তমান সাংসদ তথা প্রবীণ কংগ্রেস নেতা ভিনসেন্ট পালাকেই প্রার্থী মনোনীত করা হয়েছে।

প্রার্থী বাছাইয়ে নবীন-প্রবীণের টানাপোড়েনের জেরে পালা ও ডারিলের ভাগ্য ঝুলছিল। রাহুল গাঁধী-সহ কংগ্রেসের একাংশ ২৭ বছরের ডারিলকে এনপিপি প্রার্থী পূর্ণর বিরুদ্ধে দাঁড় করাতে চাইছিলেন। অন্য দিকে, মুখ্যমন্ত্রী মুকুলের পক্ষপাতিত্ব ছিল ভাই জেনিথ সাংমার দিকে। শিলং-এ প্রবীণ নেতা পালা ফের টিকিট পাবেন কী না তা নিয়েও নিশ্চয়তা ছিল না। এর মধ্যেই ‘চূড়ান্ত তালিকা’ বলে প্রদেশ কংগ্রেস একটি তালিকা প্রকাশ করে। সেখানে শিলং-এ পালা ও তুরায় জেনিথের নাম ছিল। শেষ পর্যন্ত বৃহস্পতিবার রাতে কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিটির বৈঠকে পালার নাম রাখা হলেও জেনিথের নাম কেটে ডারিলের নাম চূড়ান্ত করা হয়। প্রার্থী ঘোষণার পরে মুকুল অবশ্য ডারিলের হয়ে প্রচার শুরু করে দিয়েছেন।

ঠিক হয়েছে রাহুল গাঁধী নিজে ডারিলের হয়ে নির্বাচনী সভার সূচনা করবেন। ১৮ মার্চ উত্তর গারো হিলের সদর রেসুবেলপাড়ায় ২৭ বছরের ডারিলের সঙ্গে মানুষের ‘পরিচয় করিয়ে দেবেন’ রাহুল। মুখ্যমন্ত্রী, মন্ত্রিসভার অন্য সদস্যরাও সেই সভায় হাজির থাকবেন।

কিন্তু একদিকে যখন গারো পাহাড়ের ‘রাজা’ তথা তুরা থেকে নির্বাচিত আট বারের সাংসদ পূর্ণ সাংমা, তখন উল্টোদিকে রাজনীতিতে নবিশ, ডারিল কী দুর্বল প্রার্থী হয়ে গেলেন না? মুখ্যমন্ত্রী মুকুল সাংমা মনে করেন, “একেবারেই তা নয়।” তাঁর মতে, মেঘালয়ের প্রথম মুখ্যমন্ত্রী উইলিয়ামসন সাংমার নাতি ডারিল বরং কংগ্রেসের তুরুপের তাস। মুকুল বলেন, “আমরা প্রমাণ করে দেব, দিনের পর দিন সাংসদ থেকেও পূর্ণ মানুষকে কেবল বোকা বানিয়েছেন। রাজ্যের কংগ্রেস সরকার গারো পাহাড়ে নতুন-নতুন জেলা গঠনের পাশাপাশি মানুষের উন্নয়নের জন্য যা করেছে মানুষ তা জানেন। অন্য দিকে, পূর্ণ নিজের স্বার্থ সিদ্ধির জন্য কেবল দল ভাঙাগড়ার খেলা চালিয়ে গিয়েছেন।” জেনিথের নাম ঘোষণা করে প্রার্থী তালিকা প্রকাশ বা শিলং কেন্দ্রে ভিনসেন্ট পালার প্রার্থী পদের বিরোধিতা করায় তাঁর কোনও হাত নেই বলেও সাফাই দেন মুকুল।

অস্ট্রেলিয়ার বন্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ পাশ করার পরে সবে ২০১২ সালে রাজনীতিতে ডারিলের হাতেখড়ি। অন্য দিকে, পূর্ণ সাংমা সত্তরের দশক থেকে রাজনীতিতে। ১৯৭৪ সালে তিনি মেঘালয় যুব কংগ্রেসের উপ সভাপতি হন। ১৯৭৭ সালে সাংমা যখন প্রথমবার তুরা থেকে সাংসদ হন তারও ১০ বছর পরে ডারিলের জন্ম। অবশ্য, ২৭ বছরের ডারিল সাফল্যের উদাহরণ হিসেবে পূর্ণর মেয়ে আগাথাকেই দেখাচ্ছেন। আগাথা বাবার আসনেই ২৭ বছর বয়সে সাংসদ হন। বর্তমান ইউপিএ সরকারে দেশের সর্বকণিষ্ঠ মন্ত্রীও হয়েছিলেন আগাথা। এ বার নিজের আসন ফের বাবাকে ছেড়ে দিয়েছেন আগাথা। ডারিল বলছেন, “ঠাকুরদা ক্যাপ্টেন উইলিয়ামসন সাংমা সর্বস্তরের, সব উপজাতির মানুষের কাছে জনপ্রিয় ছিলেন। আমিও তেমনই হতে চাই। নিজের স্বার্থ সিদ্ধি নয়, মানুষের জন্য কাজ করতেই আমি রাজনীতিতে যোগ দিয়েছি। গারো পাহাড়ের অনুন্নয়ন এবং সন্ত্রাস প্রধান সমস্যা। আমাদের সেই সন্ত্রাসের শেকড় খুঁজে বের করতে হবে। বেকারি ও আর্থিক বৈষম্য ঘোচাতে পারলেই সাফল্য আসবে।” পূর্ণর বিরুদ্ধে লড়তে ভয় লাগছে না? ডারিল বলেন, “মোটেই না। ওঁর শক্তি যদি হয় অভিজ্ঞতা, আমার শক্তি তারুণ্য। আমি মানুষের সঙ্গে মিলে মিশে কাজ করতে-করতেই শিখতে চাই।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

sangma tihar daril momin rajibaksha rakshit
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE