ছবি: এএফপি।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় (ভারতীয় সময় রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ) ঋণ পেতে গ্রিসের পরবর্তী প্রস্তাব নিয়ে আপৎকালীন বৈঠকে বসবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। বিশেষজ্ঞদের মতে, শুধু ১.১ কোটি জনসংখ্যার গ্রিস বা ইউরোপীয় অর্থনীতিতে তাদের ২ শতাংশ অবদান নয়। বরং সামগ্রিক ভাবে ইউরোজোনের ভবিষ্যতই স্থির করবে এই বৈঠক। আগামী দিনে ঠিক কোন দিকে যাবে ১৯টি দেশ মিলে তৈরি ইইউ-এর অর্থনীতি, তা নির্ধারণের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে এই আলোচনা।
গত রবিবারই বিপুল পরিমাণ ‘না’-ভোটে গ্রিসবাসী ত্রাণ পেতে আরও খরচ কমানো, কর চাপানোর ইইউ-এর প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছেন। তার পর মঙ্গলবারই গ্রিসের তরফে ঋণ পাওয়ার নতুন প্রস্তাব পেশ করতে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী অ্যালেক্সিস সিপ্রাস। সেখানকার শেয়ার বাজার বন্ধ। ব্যাঙ্কগুলিতে আর কয়েক দিনের মতো নগদ অর্থ মজুত রয়েছে। যা শেষ হলে নতুন করে সঙ্কট তৈরি হবে গ্রিসের সামনে। বেরিয়ে যেতে হতে পারে ইউরো ব্যবহারকারী দেশের সংগঠন থেকেও। সে কারণে তার আগেই নতুন ত্রাণ চুক্তি করতে আগ্রহী সিপ্রাসের বামপন্থী সরকার। তবে তাঁর প্রস্তাব ইউরোজোনের বাকি দেশগুলি মানবে কি না, তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে তৈরি হয়েছে নানা মত। কারণ, গ্রিসের প্রস্তাবের গ্রহণযোগ্যতা খতিয়ে দেখে তবেই তারা সিদ্ধান্ত নেবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
গ্রিসের অন্যতম ঋণদাতা দেশ জার্মানি ও ফ্রান্স যেখানে মঙ্গলবারই জানিয়েছে, গ্রিসকে ইউরোপীয় ইউনিয়নে রাখতে এবং আর্থিক সঙ্কট থেকে বাঁচাতে এখনও নতুন করে চুক্তি সম্ভব। সেখানেই জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মার্কেলের দাবি, আগের চুক্তির করের হার বাড়ানো, খরচ ছাঁটাই, পেনশন ও শ্রম আইনে সংস্কারের মতো বিষয়গুলি কার্যকর করেনি গ্রিস। তাই নতুন করে প্রস্তাব পেশের সময় ঋণদাতাদের কাছে তার গ্রহণযোগ্যতা বজায় রাখতে হবে সিপ্রাসকে।
যদিও, গ্রিসের প্রতি কিছুটা সুর নরম করেই ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট জ্যঁ-ক্লদ জুঙ্কার জানিয়েছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যেই এমন অনেকে রয়েছে, যাঁরা মনেপ্রাণে চান গ্রিস ইইউ থেকে বিদায় নিক। সে জন্য প্রকাশ্যে বা আড়ালে কাজও করছেন তাঁরা। নাম না-করলেও, বিশেষজ্ঞদের অনেকের মতেই জার্মান অর্থমন্ত্রী উলফগ্যাং স্কাইউব্ল-ই জুঙ্কারের আক্রমণের লক্ষ্য। উল্লেখ্য, স্কাইউব্ল ইতিমধ্যেই সবার সামনে ইউরোজোনে গ্রিসের থাকার যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
তবে দেশের অর্থনীতিকে বাঁচিয়ে রাখা এবং সে জন্য প্রয়োজনীয় ত্রাণ সংগ্রহ করাই যে এই মুহূর্তে সিপ্রাসের একমাত্র লক্ষ্য, তা নিয়ে বিশেষজ্ঞদের কোনও সন্দেহ নেই। সে ক্ষেত্রে মার্কেলের জার্মানি এবং অন্যান্য ঋণদাতাদের থেকে অর্থ জোগাড়ের আশ্বাস অর্জন করা এবং নতুন চুক্তিকে আর্থিক ও রাজনৈতিক দিক থেকে গ্রহণযোগ্য করে তোলাই তাঁর একমাত্র চিন্তা বা মূল চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।
মার্কেলের সঙ্গে যৌথ বিবৃতিতে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদও সোমবার জানিয়েছেন, আলোচনার রাস্তা অবশ্যই খোলা রয়েছে। কিন্তু গ্রিস এবং ইউরোপ কারওর হাতেই খুব একটা সময় নেই। এই অবস্থায় যতক্ষণ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না-হয়, ততক্ষণ সুতোয় ঝুলছে গ্রিসের ভাগ্য। সঙ্গে ইউরোপেরও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy