Advertisement
০৯ মে ২০২৪

জঙ্গিজোটে শঙ্কিত প্রাক্তন গোয়েন্দা কর্তা

হাতে সময় মাত্র ১২ ঘণ্টা। ঘড়ির কাঁটা মেনে ফিরেছে শান্তি। একবেলার সংঘর্ষ বন্ধের আশ্বাসে প্রাণ সঞ্চার হয়েছে গাজায়। রাস্তায় নেমেছেন মানুষ। ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা দেহগুলো সরিয়ে খোঁজ করছেন হারিয়ে যাওয়া আত্মীয়দের। কারও সন্তান, কারও বাবা-মা, কারও বন্ধু সন্ধান চলছে নিরন্তর। বেশ ভিড় বাজার এবং ব্যাঙ্কগুলিতেও।

ইজরায়েলি হানায় মৃত্যু হয়েছে একই পরিবারের এই শিশুদের। শনিবার দেহগুলি উদ্ধার হয় (বাঁ দিকে)।  ছবি: রয়টার্স

ইজরায়েলি হানায় মৃত্যু হয়েছে একই পরিবারের এই শিশুদের। শনিবার দেহগুলি উদ্ধার হয় (বাঁ দিকে)। ছবি: রয়টার্স

সংবাদ সংস্থা
গাজ়া শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০১৪ ০১:৩৮
Share: Save:

হাতে সময় মাত্র ১২ ঘণ্টা। ঘড়ির কাঁটা মেনে ফিরেছে শান্তি। একবেলার সংঘর্ষ বন্ধের আশ্বাসে প্রাণ সঞ্চার হয়েছে গাজায়। রাস্তায় নেমেছেন মানুষ। ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা দেহগুলো সরিয়ে খোঁজ করছেন হারিয়ে যাওয়া আত্মীয়দের। কারও সন্তান, কারও বাবা-মা, কারও বন্ধু সন্ধান চলছে নিরন্তর। বেশ ভিড় বাজার এবং ব্যাঙ্কগুলিতেও।

আজ নতুন করে গাজায় হামলা হয়নি। তবে সারাদিন ধ্বসংস্তূপ থেকে দেহ উদ্ধার করেছে প্যালেস্তাইনের আপৎকালীন দফতর। সারাদিনে ৮৬টি দেহ পাওয়া গিয়েছে। নিহতের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়েছে বলে জানান দফতরের মুখপাত্র আশরফ আল-কাদরা। নিহতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলেও আশঙ্কা তাঁর। আশরফ বলেন, “বিরতির পরে ভয়ানক চেহারাটা সামনে এসেছে। প্রতিটি বাড়ি থেকেই ডজন ডজন দেহ মিলছে।”

গাজায় শান্তি ফেরানোর আর্জি জানিয়ে কলকাতার একটি শান্তি-মিছিলে চোখে জল মহিলার।
ছবি: রণজিৎ নন্দী

রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব বান কি মুনের আবেদন মেনে ‘ইজরায়েলি ডিফেন্স ফোর্স’ (আইডিএফ) এবং প্যালেস্তাইনি জঙ্গিগোষ্ঠী হামাস ১২ ঘণ্টা সংঘর্ষ শিথিল করার প্রস্তাব মেনে নিয়েছে। যদিও সুড়ঙ্গ-অভিযান একেবারে বন্ধ করা হবে না বলেও সতর্ক করে দিয়েছে ইজরায়েলি সেনা। আজ সকাল ৮টা থেকে গাজায় সাময়িক ভেবে বন্ধ হয়েছে যুদ্ধ। তবে গাজা-পরিস্থিতির স্থায়ী সমাধান খুঁজতে আজ প্যারিসে ফ্রান্সের প্রশাসনের সঙ্গে শান্তি-আলোচনায় বসার কথা মার্কিন বিদেশসচিব জন কেরির। থাকবেন ব্রিটেন, জার্মানি, ইতালি, তুরস্ক, কাতার, ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিরা। নতুন সংঘর্ষ বিরতির প্রস্তাব তৈরি করতে আজ তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী আহমেট দাভুতোগলুর সঙ্গে দেখা করতে পারেন কেরি।

গাজা-পরিস্থিতি নিয়ে আজ আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা ফেডেরাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই) এর প্রাক্তন অধিকর্তা রবার্ট মুলার। একটি প্যানেল আলোচনায় তিনি মন্তব্য করেন, আমেরিকার জঙ্গিবিরোধী আন্দোলনে ওসামা বিন লাদেনের মৃত্যুর পরে বিশ্ব জুড়ে জঙ্গি আন্দোলন পায়ের তলার মাটি হারিয়ে ফেলেছিল। সিরিয়া বা গাজার মতো ঘটনায় তারা আবার সংগঠিত হতে শুরু করছে। এর ফল মারাত্মক হবে বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “গাজায় যা হচ্ছে সেটা মারাত্মক। এ ভাবে যুদ্ধ চলতে থাকলে জঙ্গিরা আবার সংগঠিত হবে। সিরিয়া, ইরাক বা গাজায় শান্তি ফেরাতে হবে। পড়শি দেশের হামলায় সর্বহারারা যদি জঙ্গি আন্দোলনে সামিল হয়, তাহলে কিন্তু প্রতিটি দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।” ওই একই আলোচনায় আমেরিকার জাতীয় জঙ্গিবিরোধী সংস্থার অধিকর্তা ম্যাট ওলসেন বলেন, “গোপন সূত্রে খবর পেয়েছি, পাকিস্তান থেকে আল কায়দা জঙ্গিরা সিরিয়ার জঙ্গিসংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে।”

মার্কিন আধিকারিকদের আশঙ্কা সত্যি প্রমাণ করে হামাসের পাশে দাঁড়িয়েছে লেবাননের গেরিলা জঙ্গিগোষ্ঠী হিজবুল্লা। যদিও ইরানের মদতপুষ্ট হামাস ও হিজবুল্লার ‘শরিকি’ সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। একটি সমাবেশে সম্প্রতি হিজবুল্লা নেতা নাসরাল্লা বলেন, “আমরা পরিস্থিতির উপর নজর রাখছি। আমরা গাজার ভাইদের পাশে আছি। তোমাদের জয়ের জন্য সাধ্যমতো সাহায্য করতে প্রস্তুত।”

গাজায় ইজরায়েলি সেনার অভিযান শুরুর আগে দু’দেশের সীমান্ত সংলগ্ন এলাকা থেকে তিন কিশোর নিখোঁজ হয়ে যায়। ইজরায়েলি পুলিশ সেই ঘটনার তদন্ত রিপোর্ট দেওয়ার আগেই প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ওই ঘটনার জন্য হামাসকে দায়ী করেন। তার প্রেক্ষিতেই ৮ জুলাই থেকে গাজায় অভিযান শুরু করে আইডিএফ। তবে সম্প্রতি ইজরায়েলের পুলিশ তদন্ত রিপোর্ট পেশ করেছে। সেখানে যদিও ওই ঘটনায় হামাসের যুক্ত থাকার ঘটনার উল্লেখ নেই।

আজ রাত ৮ টায় সংঘর্ষ বিরতি উঠে গেলে আরও চার ঘণ্টা গাজায় আক্রমণ বন্ধ রাখবে বলে জানিয়ে দিয়েছে আইডিএফ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

gaza idf
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE