Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

জেলবন্দিরা বিতর্কে হারালেন হার্ভার্ডের পড়ুয়াদের

পাশের বাড়ির গজা মাধ্যমিকের গন্ডি উতরোয়নি। অনটনের জেরে অঙ্কের জন্য কোনও গৃহশিক্ষক ছিল না। তাই অন্য বিষয়গুলো যা-ও বা নিজে নিজে পড়ে কিছুটা জেনেছে, অঙ্কটা তেমন শেখা হয়ে ওঠেনি। সেই গজা হঠাৎ অঙ্কের প্রতিযোগিতায় নাম লিখিয়ে বসল! প্রতিদ্বন্দ্বী কে? অঙ্কের অধ্যাপক!

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০১৫ ২৩:০৯
Share: Save:

পাশের বাড়ির গজা মাধ্যমিকের গন্ডি উতরোয়নি। অনটনের জেরে অঙ্কের জন্য কোনও গৃহশিক্ষক ছিল না। তাই অন্য বিষয়গুলো যা-ও বা নিজে নিজে পড়ে কিছুটা জেনেছে, অঙ্কটা তেমন শেখা হয়ে ওঠেনি। সেই গজা হঠাৎ অঙ্কের প্রতিযোগিতায় নাম লিখিয়ে বসল! প্রতিদ্বন্দ্বী কে? অঙ্কের অধ্যাপক!

বোঝাই যাচ্ছে এই প্রতিযোগিতার ফল কী হতে পারে। গজার নাকানি-চোবানি দশা হবে।

কিন্তু, হল উল্টো। অঙ্কের অধ্যাপক গজার কাছে ঘোল খেয়ে গেলেন!

রূপকথার গপ্পো নয়। অনেকটা এমনই ঘটেছে মার্কিন মুলুকে। নিউ ইয়র্কের প্রদেসের প্ত্যন্ত এলাকার একটি জেলের আবাসিকরা বিতর্ক সভায় হারিয়ে দিয়েছেন হার্ভার্ড কলেজের ছাত্রদের।

শুধু মার্কিন মুলুকে নন, মেধার নিরিখে হার্ভার্ডের পড়ুয়ারা গোটা বিশ্বে সমাদৃত। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক ও রাজনৈতিক বিষয়ে বিতর্কে অংশ নেওয়ার জন্য হার্ভার্ডের বিশেষ দলও রয়েছে— হার্ভার্ড ডিবেট টিম। সেই দল গিয়েছিল নিউ ইয়র্ক প্রদেশের প্রত্যন্ত এলাকার একটি জেলের আবাসিকদের সঙ্গে বিতর্কে অংশ নিতে। সেই পূর্ব নিউ ইয়র্ক স‌ংশোধনাগারের বন্দিরা হারিয়ে দিয়েছেন হার্ভার্ড ডিবেট টিমকে।

বার্ড প্রিজন ইনিশিয়েটিভ নামে একটি কর্মসূচির আওতায় এই বিতর্কের আয়োজন। আমেরিকার বিভিন্ন জেলে যাঁরা বন্দি, তাঁদের পড়াশোনার সুযোগ করে দেয় বার্ড কলেজ। সেই সুযোগ পেতে অবশ্যই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হয়। যোগ্যতামান উত্তীর্ণ হন যাঁরা, তাঁদের জেলেই কলেজের পাঠ দেয় বার্ড কলেজ। দেশব্যাপী বিভিন্ন জেলে ছড়িয়ে থাকা এই পড়ুয়াদেরই মার্কিন মুলুকের বিভিন্ন প্রখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজের পড়ুয়াদের সঙ্গে বিতর্কে অংশ নেওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে বার্ড প্রিজন ইনিশিয়েটিভ। বিতর্কের বিষয় ছিল ‘নথিপত্র বিহীন শিক্ষার্থীদের আমেরিকার সরকারি স্কুলে ভর্তি হতে দেওয়া উচিত নয়’। সংশোধনাগারের আবাসিকরা এই মতের ঘোর বিরোধী। কিন্তু, তাঁদের বলা হয়েছিল এই মতের পক্ষে সওয়াল করতে। যে মতের প্রতি ঘোর অবিশ্বাস মনে বাসা বেঁধে রয়েছে, সেই মতের পক্ষে সওয়াল করতে হবে হার্ভার্ডের দুঁদে তার্কিকদের সামনে বসে। অনেকটা খালি পায়ে, শীতবস্ত্র ছাড়া এভারেস্ট চড়ার মতো কাজ। কিন্তু, সেই অসম্ভবকেই সম্ভব করে দেখিয়েছেন জেলের আবাসিকরা। হার্ভার্ডের পড়ুয়ারা হার মেনেছেন তর্কে। নিজেদের ফেসবুক পেজে হার্ভার্ড ডিবেট টিম সেই পরাজয়ের কথা সানন্দে স্বীকারও করে নিয়েছেন।

পূর্ব নিউ ইয়র্ক সংশোধনাগারে খুশির ঢেউ খেলে গিয়েছে। খুশির ঢেউ বার্ড কলেজেও। বিতর্কে হার্ভার্ডকে ঘায়েল করে তাঁরাও যে এবার কৌলীন্যের পথে!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE