যেন হাঙরের মুখ !
গর্ত বললে কমই বলা হয়। সুগভীর তো বটেই। এলাকাটাও কম নয়। একটা গুহার মুখ। সুড়ঙ্গের মুখও বলা যায়।
সেই গুহায় ঝুপ করে নেমে পড়াটাও ছিল কার্যত, অসম্ভবই। কারণ, শিলা-পাথরের দাঁত-নখ ছিল। ঝুপ করে গুহায় নামতে গেলেই সেই দাঁত-নখের খোঁচায় শরীর ক্ষতবিক্ষত হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা ছিল।
যিনি প্রথমে নেমেছিলেন, সেই উইটওয়াটারস্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষিকা মারিনা এলিয়টই শুনিয়েছেন সেই রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতার কথা। ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক টেলিভিশন চ্যানেলে। জানিয়েছেন, কী ভাবে তিনিই প্রথম পৌঁছেছিলেন জোহানেসবার্গের অদূরে রাইজিং স্টার গুহার সেই প্রকোষ্ঠে, যেখানে মিলেছে মানুষের নতুন একটি প্রজাতির পূর্ব পুরুষের হাড়গোড়ের হদিশ।
এলিয়টের পরেই সেই গুহায় নেমেছিলেন একটি মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী। তার পর নেমেছিলেন আরও চার মহিলা। কে লিন্ডসে হান্টার, এলেন ফুয়েরিগেল, হান্না মরিস আর আলিয়া গুর্তভ।
দুটি দলে ভাগ করে দেওয়া হয়েছিল ওই ছয় মহিলাকে। প্রতিটি দলে তিন জন। দুটি শিফটে কাজ হত। দু ঘণ্টার শিফট। খোঁড়াখুঁড়ির কাজটা চলেছিল প্রায় সাড়ে তিন সপ্তাহ। তাতেই হদিশ মেলে ‘হোমো নালেডি’র প্রায় হাজার দেড়েক হাড়গোড়ের।
কাজটা যে খুব সহজ হবে না, তা আগেই বুঝেছিলেন বিশিষ্ট নৃতত্ববিদ লি বার্গার। তাই রীতিমতো ঘটা করে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছিল। ষাট জন আবেদন করেছিলেন। ছয় জনকে বেছে নিয়েছিলেন বার্গার নিজেই। ছয় জনই মহিলা। আর ছয় জনই প্রত্নতাত্বিক। লি বার্গার যাঁদের বলেছেন, ‘‘ভূগর্ভের মহাকাশচারী’’। কাজটা যে মহাকাশচারীর মতোই ছিল দুরূহ। সুজটিল।
সেই গুহায় প্রথম নামার অভিজ্ঞতাটা কেমন হয়েছিল ছয় মহিলার ?
যিনি প্রথম নেমেছিলেন, সেই মারিনা এলিয়ট একটি সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘‘নামার সময় হেলমেটের আলোয় দেখেছিলাম, প্রচুর হাড়গোড় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে নীচে। ভাবিনি, সেগুলি মানুষেরই হবে! নেমে তো হতভম্বই হয়ে গিয়েছিলাম! এত হাড়গোড় যে, জুতো পরে এগনোই যাচ্ছিল না। তাই এক সময় আমরা জুতোও খুলে নিয়েছিলাম।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy