Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

এ বার ভেঙে পড়ল আলজেরীয় বিমান, মৃত ১১৬

দিন কয়েকের ব্যবধানে তিনটি বিপর্যয়। ইউক্রেন, তাইওয়ানের পরে এ বার আফ্রিকার মালি। ফের মাঝ আকাশে ভেঙে পড়ল যাত্রিবাহী বিমান। মৃত্যু হয়েছে বিমানটির ১১৬ জন যাত্রীর। একশো দশ জন যাত্রী ও ছ’জন বিমান কর্মী নিয়ে পশ্চিম আফ্রিকার বারকিনা ফাসোর রাজধানী উগাডুগু থেকে উড়েছিল এয়ার আলজেরির এএইচ-৫০১৭ উড়ান। গন্তব্য ছিল আলজেরিয়ার রাজধানী আলজিয়ার্স। কিন্তু মাটি থেকে ওড়ার পঞ্চাশ মিনিটের পরই আলজিয়ার্সের এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোলের (এটিসি) সঙ্গে বিমানটির যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

সংবাদ সংস্থা
আলজিয়ার্স শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০১৪ ০৩:২৩
Share: Save:

দিন কয়েকের ব্যবধানে তিনটি বিপর্যয়। ইউক্রেন, তাইওয়ানের পরে এ বার আফ্রিকার মালি। ফের মাঝ আকাশে ভেঙে পড়ল যাত্রিবাহী বিমান। মৃত্যু হয়েছে বিমানটির ১১৬ জন যাত্রীর।

একশো দশ জন যাত্রী ও ছ’জন বিমান কর্মী নিয়ে পশ্চিম আফ্রিকার বারকিনা ফাসোর রাজধানী উগাডুগু থেকে উড়েছিল এয়ার আলজেরির এএইচ-৫০১৭ উড়ান। গন্তব্য ছিল আলজেরিয়ার রাজধানী আলজিয়ার্স। কিন্তু মাটি থেকে ওড়ার পঞ্চাশ মিনিটের পরই আলজিয়ার্সের এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোলের (এটিসি) সঙ্গে বিমানটির যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। বিস্তর চেষ্টা করেও পাইলটের সঙ্গে আর যোগাযোগ স্থাপন করা সম্ভব হয়নি। শেষে আলজেরিয়ার বিমান পরিবহণ মন্ত্রকের এক অফিসার জানান, মালিতে ভেঙে পড়েছে স্পেনের বেসরকারি বিমান সংস্থা সুইফটএয়ারের তৈরি ‘এমডি ৮৩’ এয়ারবাসটি। বিমানের সব কর্মীই স্পেনের নাগরিক।

বুধবার স্থানীয় সময় রাত ন’টা সতেরো মিনিটে বারকিনা ফাসো থেকে যাত্রা শুরু করেছিল এএইচ-৫০১৭। আলজিয়ার্সে পৌঁছনোর কথা ছিল প্রায় চার ঘণ্টা পরে।

কিন্তু সেই যাত্রাপথের পঞ্চাশ মিনিটের মাথায় এটিসির সঙ্গে বিমানটির যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। বিমানটি তখন মালির আকাশে। এটিসি সূত্রের খবর, আলজেরিয়ার সীমান্তে ঢোকার কিছু ক্ষণ আগে পাইলট বিমানটির যাত্রাপথ বদলের আর্জি জানিয়েছিলেন। তিনি এটিসিকে আরও জানিয়েছিলেন, খারাপ আবহাওয়ার জন্য দৃশ্যমানতার অভাব হচ্ছে। তাই তিনি অন্য পথে আলজিয়ার্স যেতে চান। যাতে আলজিয়ার্স-বামাকো পথের অন্য কোনও বিমানের সঙ্গে তাঁর বিমানের সংঘর্ষ না হয়। কিন্তু এটিসি অন্য পথ বাতলানোর আগেই তাদের সঙ্গে বিমানটির যোগাযোগ ছিন্ন হয়ে যায়।

নিখোঁজ বিমানটিতে জনা পঞ্চাশ ফরাসি যাত্রী ছিলেন বলে জানিয়েছেন ফ্রান্সের পরিবহণমন্ত্রী ফ্রেডেরিক কভিলিয়ে। রাষ্ট্রপুঞ্জের এক প্রতিনিধি জানিয়েছেন, মালির গায়ো এবং তিসালির মাঝের কোনও এলাকায় ভেঙে পড়েছে বিমানটি। সেই মতো দু’টি ফরাসি যুদ্ধবিমান তল্লাশি শুরু করেছে বলে জানিয়েছে ফ্রান্স সরকার। গোটা ঘটনায় এয়ার আলজেরির বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে। উপগ্রহ চিত্রে দেখা গিয়েছে, মালিতে বুধবার রাত থেকে প্রবল ঝড়-বৃষ্টি হচ্ছিল। ফলে আগে থেকেই সতর্ক হয়ে বিমানটির গতিপথ ঘোরানো উচিত ছিল বলে মনে করছেন অনেকেই। যাত্রীদের আত্মীয়-পরিজনের আবার অভিযোগ, বিমানটি নিখোঁজ হওয়ার বেশ কয়েক ঘণ্টা পরেও বিমান সংস্থা তাঁদের কিছুই জানায়নি। সংবাদ মাধ্যমের কাছ থেকে তাঁরা সব কিছু জেনেছেন অনেক পরে।

সায়ত্ত্বশাসনের দাবিতে গত কয়েক বছর ধরেই মালির সরকারের সঙ্গে সংঘর্ষ চলছে আল কায়দা-সহ বেশ কিছু জঙ্গি সংগঠনের। উত্তর মালিতে আপাতত আন্তর্জাতিক সেনা অভিযান চলছে। সেই গোলমালের জেরেই এই বিমান দুর্ঘটনা কি না, সে প্রশ্নও উঠতে শুরু করেছে।

মালির বিতর্কিত এলাকা দিয়ে কেন বিমান চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল, সে নিয়েও ইতিমধ্যে অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন। ঠিক যেমন প্রশ্ন উঠেছে ইউক্রেন ও ইজরায়েলের আকাশ দিয়ে বিমান চলাচল নিয়ে। তবে জঙ্গি হানার সম্ভাবনা নিয়ে আলজেরিয়া সরকার একটি শব্দও খরচ করেনি।

তাদের ধারণা, প্রবল ঝড়ের কবলে পড়েই মাঝ আকাশে ভেঙে পড়েছে এয়ার আলজেরির ওই বিমান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

algerian plane crashed 116 passengers south mali
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE