Advertisement
০৩ মে ২০২৪

তেহরানে হানা কি ট্রাম্পের ছকে ধাক্কা

উত্তাল পশ্চিম এশিয়া। ‘জঙ্গি কার্যকলাপে’ মদত দেওয়ার অভিযোগে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের সক্রিয় সমর্থনে সৌদি আরব-সহ আরবের ছ’টি সুন্নিপ্রধান দেশ ব্রাত্য করেছে কাতারকে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৮ জুন ২০১৭ ০২:১১
Share: Save:

উত্তাল পশ্চিম এশিয়া।

‘জঙ্গি কার্যকলাপে’ মদত দেওয়ার অভিযোগে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের সক্রিয় সমর্থনে সৌদি আরব-সহ আরবের ছ’টি সুন্নিপ্রধান দেশ ব্রাত্য করেছে কাতারকে। ইঙ্গিত স্পষ্ট, তর্জনী আসলে কাতারের ঘনিষ্ঠ শিয়া রাষ্ট্র ইরানের দিকে। অন্য দিকে এই যৌথ পদক্ষেপের মধ্যেই আজ সমস্ত হিসেব ঘেঁটে দিয়ে ইরানই আক্রান্ত ইসলামিক স্টেট (আইএস)-এর হাতে। ফলে তৈরি হল শিয়া রাষ্ট্র বনাম জিহাদি সুন্নি জঙ্গি গোষ্ঠীর লড়াই। এরপরে ট্রাম্পের নীতি কী দাঁড়াবে তা নিয়ে কূটনৈতিক শিবিরে জল্পনা শুরু হয়েছে।

সুন্নি দেশগুলির জোট নিয়ে আজ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ফোনে কথা বলেছেন সৌদি রাজা সলমনের সঙ্গে। হোয়াইট হাউস সূত্রে জানানো হয়েছে, কাতারকে ব্রাত্য করার বিষয়টি নিয়ে সবিস্তার কথা হয়েছে ট্রাম্প ও সলমনের মধ্যে। পাশাপাশি ইসলামিক ব্রাদারহুড এবং আইএস-কে নিজেদের প্রয়োজনে ব্যবহার করে চলেছে, ইরানের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ এনে সেই রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার সম্ভাবনা নিয়েও আলোচনা করেছেন ট্রাম্প। সূত্রের খবর, আমেরিকার এই সক্রিয় সমর্থন পাশে নিয়ে সৌদিও পশ্চিম এশিয়ায় কর্তৃত্ব কায়েম করতে চাইছে। আজ সৌদির মিত্র দেশ সংযুক্ত আরব আমিরশাহির অ্যাটর্নি জেনারেল একটি বিবৃতি দিয়ে কার্যত হুমকির স্বরে বলেছেন, ‘‘কাতারের প্রতি কোনও রকম সহানুভূতি দেখানোর চেষ্টা করা হলে তা আইনত অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।’’

আরও পড়ুন: হামলা হবে, হুমকি দিয়েছিল আইএস

কিন্তু ন্যাটোভুক্ত দেশগুলির সঙ্গে সুন্নি আরব দেশগুলির এই জোট গড়ার প্রক্রিয়া আপাতত ধাক্কা খেতে পারে বলে মনে করছেন কূটনীতিকরা। কারণ, আজ প্রমাণ হয়ে গিয়েছে সন্ত্রাসে মদতদাতা হিসেবে যে ইরানের বিরুদ্ধে ঘুঁটি সাজাচ্ছিল আমেরিকা ও তার সহযোগী দেশগুলি, সেই ইরানও সন্ত্রাসের হাত থেকে নিরাপদ নয়। উল্টে ইরানের সামরিক বাহিনীর তরফে অভিযোগ করা হয়েছে, আজকের হামলার পিছনে সৌদি ও মার্কিন মদত রয়েছে। কাতার-ইরানের সঙ্গে জঙ্গি যোগসূত্র খোঁজার মার্কিন চেষ্টার জবাব তেহরান এ ভাবেই দিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, তুরস্কের মতো ইরানও রাজনৈতিক প্রয়োজনে ইসলামিক ব্রাদারহুডকে (যার সঙ্গে আইএস-এর ঘনিষ্ঠ যোগ রয়েছে) কাজে লাগানোর চেষ্টা করেছে। কিন্তু দেশের ভিতরে আইএসকে মাথা তুলতে দেয়নি। পাশাপাশি গত এক বছরে ধর্মীয় গোঁড়ামি থেকে কিছুটা হলেও বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছে তেহরান। এই হানার পরে ট্রাম্পকেও নতুন ভাবে অঙ্ক কষতে হতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা।

গোটা পরিস্থিতির দিকে সতর্ক নজর রাখছে নয়াদিল্লি। আজ বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র গোপাল বাগলে এবং তারপর বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ ঘটনার নিন্দা করেছেন। দু’দিন আগেই দিল্লি স্পষ্ট করে দিয়েছে যে সৌদি আরব এবং ইরান—এই দু’টি দেশের সঙ্গেই সুসম্পর্ক রাখায় বিশ্বাসী ভারত। আজ জঙ্গি হামলার পরে সুষমা ফোনে কথা বলেন ইরানি বিদেশমন্ত্রী মহম্মদ জাভেদ জারিফের সঙ্গে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE