Advertisement
০১ মে ২০২৪

জিবুতিতে ঘাঁটি, নৌশক্তি বাড়াতে নজর বেজিংয়ের

চিন আধিপত্য বিস্তার করতে চাওয়ায় কপালে ভাঁজ পড়েছে আমেরিকা আর ভারতের। দক্ষিণ চিন সাগরে নৌ আধিপত্য নিয়ে ওয়াশিংটনের সঙ্গে মাঝে মধ্যেই গোলমাল বাধে বেজিংয়ের। তার মধ্যে জিবুতির ঘাঁটি ট্রাম্প প্রশাসনকে আদৌ স্বস্তির বার্তা দেবে না বলে মনে করছেন অনেকে। ওয়াশিংটন অবশ্য এ নিয়ে এখনও মুখ খোলেনি।

চিনা সেনাবাহিনীর নজরদারি। ছবি: রয়টার্স।

চিনা সেনাবাহিনীর নজরদারি। ছবি: রয়টার্স।

বেজিং
সংবাদ সংস্থা  শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০১৭ ০২:৫১
Share: Save:

দক্ষিণ চিন সাগরে তাদের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিতর্ক রয়েছেই। এ বার বিদেশের মাটিতে নিজেদের নৌ এবং সামরিক শক্তি বাড়াতে তৎপর হল বেজিং।

চিনের সরকারি দৈনিক গ্লোবাল টাইমসের সম্পাদকীয়তে জানানো হয়েছে, আফ্রিকার জিবুতিতে একটি বড়সড় নৌ-সেনা ঘাঁটি তৈরি করছে তারা। দক্ষিণ চিনের ঝাংজিয়াং বন্দর থেকে দু’টি চিনা যুদ্ধজাহাজ সেনা-সহ ইতিমধ্যেই ভারত মহাসাগরে রওনা হয়ে গিয়েছে। তবে সেনার সংখ্যাটা কত, হিসেব দেওয়া হয়নি।

পূর্ব আফ্রিকার ছোট্ট দেশ জিবুতি। জনসংখ্যা মেরেকেটে ১০ লাখ। কিন্তু এর ভূকৌশলগত অবস্থান বিশ্বের প্রতিটি শক্তিশালী দেশের কাছে একে গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছে। হর্ন অব আফ্রিকার এই দেশে নৌ এবং সামরিক ঘাঁটি রয়েছে আমেরিকা, ফ্রান্স আর জাপানের মতো দেশের। সেই তালিকায় এ বার যোগ হল চিনের নামও। জিবুতির গা ঘেঁষে গিয়েছে বাব এল-মানদেব প্রণালী। প্রতিদিন ওই সরু প্রণালী দিয়ে লক্ষ লক্ষ ডলারের তেল ও তেলজাত দ্রব্যের জাহাজ যায়। ফলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রেও এই এলাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

এ হেন এলাকায় চিন আধিপত্য বিস্তার করতে চাওয়ায় কপালে ভাঁজ পড়েছে আমেরিকা আর ভারতের। দক্ষিণ চিন সাগরে নৌ আধিপত্য নিয়ে ওয়াশিংটনের সঙ্গে মাঝে মধ্যেই গোলমাল বাধে বেজিংয়ের। তার মধ্যে জিবুতির ঘাঁটি ট্রাম্প প্রশাসনকে আদৌ স্বস্তির বার্তা দেবে না বলে মনে করছেন অনেকে। ওয়াশিংটন অবশ্য এ নিয়ে এখনও মুখ খোলেনি।

চিন যদিও চাইছে না বিষয়টি নিয়ে আদৌ হইচই হোক। জিবুতি সরকারের সঙ্গে আলোচনা করেই তাঁরা এই ঘাঁটি গড়ছে বলে জানিয়েছেন চিনা বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র গেং শুয়াং। তাঁর বক্তব্য, জিবুতির আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, গোটা আফ্রিকায় শান্তিরক্ষাই মূল উদ্দেশ্য বেজিংয়ের। সেই সঙ্গে জিবুতির পড়শি দেশ সোমালিয়ার জলদস্যু উপদ্রুত এলাকাতেও অভিযান চালাবে চিনা নৌসেনা।

২০১১ সাল থেকে জিবুতিতে সামরিক ঘাঁটি গড়ার কাজ শুরু করেছিল চিন। এটিই বিশ্বের প্রথম দেশ যেখানে সামরিক ঘাঁটি বানাল তারা। পাকিস্তানের গ্বাদরে তাদের দ্বিতীয় ঘাঁটি তৈরি হচ্ছে। চিন-পাক অর্থনৈতিক করিডরের সেই প্রকল্পে কয়েক হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে বেজিং। জিবুতি, গ্বাদরের সঙ্গে শ্রীলঙ্কার হামবানতোতা বন্দরও দখলের চেষ্টা চালাচ্ছে তারা। ভারত মহাসাগরে আধিপত্য বিস্তারের ক্ষেত্রে যা বিশেষ করে চিনকে সাহায্য করবে বলেই মত বিশেষজ্ঞদের। বিষয়টি নিয়ে তাই উদ্বেগে দিল্লি।

হংকংয়ের একটি সংবাদপত্র কয়েক মাস আগেই জানিয়েছিল, নৌসেনার সংখ্যা খুব শিগগির কুড়ি হাজার থেকে এক লক্ষ করতে চলেছে বেজিং। পাশাপাশি স্থলসেনা কমানোর কথাও তারা ভাবছে। চিনা চিনা প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের সূত্র অনুযায়ী, বর্তমানে কুড়ি লক্ষেরও বেশি সেনা রয়েছে পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ)-তে। সেটা আগামী কয়েক মাসের মধ্যে ছেঁটে অর্ধেক করে ফেলা হবে বলে শোনা যাচ্ছে। কারণ সমপরিমাণ সেনা জলে আর বিমানে মোতায়েন করতে চায় বেজিং। আজ ভারত মহাসাগর দিয়ে যুদ্ধজাহাজ রওনা হওয়ার খবর পাওয়ার পরেই বিষয়টি নিয়ে আন্তর্জাতিক স্তরে আরওই হইচই শুরু হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE