Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Dalai Lama

দলাই লামার সঙ্গে দেখা করলেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত

এই বছরেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করতে ওয়াশিংটন যাওয়ার কথা দলাই লামার। তাঁকে আমন্ত্রণ জানিয়ে এসেছেন জাস্টার। নির্বাসিত তিব্বতি সম্প্রদায়ের রাজনৈতিক নেতা লবসাং সাংগের সঙ্গেও বৈঠক করেন তিনি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১২ মে ২০১৮ ০৩:৪৪
Share: Save:

সাম্প্রতিক অতীতে দলাই লামার সংস্রব কিছুটা এড়িয়ে চলছিল নয়াদিল্লি। মনে করা হচ্ছিল, চিনের সঙ্গে সম্পর্কের কথা ভেবেই এই সিদ্ধান্ত। কিন্তু এর মধ্যেই হিমাচলপ্রদেশের ধর্মশালায় পৌঁছে গেলেন দিল্লিতে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত কেনেথ জাস্টার। গত সপ্তাহে নির্বাসিত তিব্বতি সরকারের প্রধান কার্যালয়ে দলাই লামার সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক করেছেন তিনি। যার নেপথ্যে ভারতেরই নরম-গরম কূটনীতির চাল দেখছেন কেউ কেউ।

সূত্রের খবর, এই বছরেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করতে ওয়াশিংটন যাওয়ার কথা দলাই লামার। তাঁকে আমন্ত্রণ জানিয়ে এসেছেন জাস্টার। নির্বাসিত তিব্বতি সম্প্রদায়ের রাজনৈতিক নেতা লবসাং সাংগের সঙ্গেও বৈঠক করেন তিনি। বৈঠকের পর মার্কিন রাষ্ট্রদূত জানান, বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা হয়েছে। নিজের অন্তরের শান্তি কী ভাবে গোটা মানবজাতির মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়া যায়, সে ব্যাপারে দলাই লামার দর্শনে অনুপ্রাণিত তিনি।

গত ২৬ এপ্রিল মার্কিন সেনেটে একটি প্রস্তাব পাশ হয়। যার মোদ্দা কথা হল, তিব্বতিদের ধর্মীয় স্বাধীনতা এবং মানবাধিকার রক্ষার বিষয়টিকে মান্যতা দিতে হবে চিনকে। এই প্রস্তাব পাশ হওয়ার পরে আমেরিকার বিরুদ্ধে তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে মাথা গলানোর অভিযোগ তোলে ক্ষুব্ধ চিন। কূটনৈতিক শিবিরের মতে, চিনের সঙ্গে যে বৃহত্তর বাণিজ্য-যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছে আমেরিকা, তিব্বত নিয়ে সরব হওয়া তারই একটি অংশ মাত্র। দলাই লামা শেষ বার মার্কিন সফরে যান গত জুনে। বারাক ওবামার সঙ্গেও মোট চার বার দেখা হয়েছে তাঁর। ট্রাম্প প্রশাসন মনে করে, দলাই লামা হলেন চিনের এমন একটি স্নায়ুকেন্দ্র, যেখানে নিয়ন্ত্রিত চাপ দিলে বেজিংকে পথে আনা যাবে। আর তাই তিব্বতি ধর্মগুরুকে আমন্ত্রণের কৌশলী চাল হোয়াইট হাউসের।

বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, ভারতের মাটিতে কোনও ভিন্ রাষ্ট্রের দূত যদি দলাই লামার সঙ্গে বৈঠক করেন, তবে দিল্লির দায় থাকে না ঠিকই। কিন্তু ভারতের প্রচ্ছন্ন সম্মতি ছাড়া এই বৈঠক সম্ভবও ছিল না। বেশ কিছু দিন আগে দলাই লামার অনুষ্ঠানে কোনও মন্ত্রী বা আমলাকে যেতে নিষেধ করে সব মন্ত্রকে নোট দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সচিব। সেই নোটটিকে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ করে চিনকে ইতিবাচক বার্তাও দেওয়া হয়। কিন্তু এর পরেই বেজিংয়ের হেলিকপ্টার ভারতীয় আকাশসীমা লঙ্ঘন করে। তখন দুই মন্ত্রীকে দলাই লামার অনুষ্ঠানে পাঠায় কেন্দ্র। আবার উহান সংলাপের পরে চিনের সঙ্গে ফের সুসম্পর্কের বার্তা দিয়েছিল নয়াদিল্লি। বোঝাই যাচ্ছে, চাপ পুরোপুরি আলগা করতে চায় না নরেন্দ্র মোদীর সরকার। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটাই কূটনীতি। বহুমুখী। সেখানে চাপান-উতোর চলতে থাকে নিরন্তর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Dalai Lama Donald Trump
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE