Advertisement
২১ মে ২০২৪

আইএসের যোগ্য নিয়োগকারী ট্রাম্প: হিলারি

ইসলামিক স্টেট জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার নীতিকে সমর্থন জানালেন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিলারি ক্লিন্টন। গত কাল এখানে অনুষ্ঠিত ডেমোক্র্যাটিক প্রেসিডেনশিয়াল ডিবেট-এ হিলারি এক হাত নিলেন তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে।

সংবাদ সংস্থা, নিউ হ্যাম্পশায়ার
শেষ আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০১৫ ০৩:৩৯
Share: Save:

ইসলামিক স্টেট জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার নীতিকে সমর্থন জানালেন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিলারি ক্লিন্টন। গত কাল এখানে অনুষ্ঠিত ডেমোক্র্যাটিক প্রেসিডেনশিয়াল ডিবেট-এ হিলারি এক হাত নিলেন তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে। হিলারির সাফ কথা, ‘‘আইএস-এর হয়ে জঙ্গি নিয়োগের কাজটা ভাল ভাবেই করে দিচ্ছেন ট্রাম্প।’’

প্রেসিডেন্ট ওবামার আইএস নিয়ন্ত্রণ নীতি নিয়ে রিপাবলিকানরা সমালোচনায় মুখর। ওবামার নীতির পিছনে তাঁরা ঠারেঠোরে দুষছেন প্রাক্তন বিদেশসচিব হিলারি ক্লিটনকেও। তার জবাবেই শনিবারের বিতর্কে হিলারি আক্রমণের লক্ষ্য করলেন ডোনাল্ড ট্রাম্পের মুসলিম বিদ্বেষী মনোভাবকে। সম্প্রতি ডোনাল্ড বলেছিলেন, ‘‘আমেরিকায় কোনও মুসলিমের ঢোকা উচিত নয়।’’

তাঁর এই মন্তব্য ঘিরে আন্তর্জাতিক দুনিয়ায় কম সমালোচনা হয়নি। হিলারি বলেছেন, ‘‘উনি আইএসের যোগ্য নিয়োগকারী হয়ে উঠছেন। জঙ্গিরা এ বার ট্রাম্পের ভিডিও দেখিয়ে জেহাদিদের বোঝাবে, কী ভাবে ইসলামের অবমাননা করা হচ্ছে।’’ আর তাই হিলারির বক্তব্য, ‘‘আমেরিকায় মুসলিম সম্প্রদায়ের সঙ্গে আরও নিবিড় ভাবে কাজ করতে হবে মার্কিন নাগরিকদের। রিপাবলিকানরা যে ভাবে মুসলিমদের ঘিরে আতঙ্ক তৈরি করার চেষ্টা করছে, তা বন্ধ করা উচিত।’’

তবে প্রশ্ন উঠছে, ট্রাম্পের ভিডিও দেখিয়ে সত্যিই কি আইএসের মধ্যে এমন প্রচার শুরু হয়েছে? হিলারির প্রচার-দলের দাবি, তাদের হাতে প্রমাণ আছে যে আইএস এবং আল কায়দা আমেরিকায় মুসলিম-বিরোধী মুখ হিসেবে ট্রাম্পের পোস্টার বিলি শুরু করেছে। ট্রাম্পের বক্তব্য প্রচার করে দলে টানছে আরও অনেককে। সোশ্যাল মিডিয়া সংক্রান্ত এক পর্যবেক্ষক সংস্থার রিটা কাট্জ বলছেন, ‘‘ট্রাম্প এখন কোথায় কী বলে বেড়াচ্ছেন, সব জেহাদির নজরে রয়েছে। যখন উনি বলছেন, ‘‘আমেরিকায় মুসলিমদের ঢুকতে দেওয়া হবে না’’, তখন জঙ্গিরা প্রচার করছে, ‘‘দেখেছো আমরা বলি আমেরিকা মুসলিমদের ঘৃণা করে, এই হচ্ছে তার প্রমাণ!’’

হিলারি বলছেন, ‘‘আমেরিকা এই ভয়ের পরিবেশ তৈরির পরিপন্থী, এই ধরনের অসহিষ্ণুতার প্রচার চায় না এই দেশ।’’ বস্তুত কালকের বিতর্কে বেশিটাই জুড়ে ছিলেন ট্রাম্প। অন্য রিপাবলিকান প্রার্থীদের তুলনায় তিনি একাই তাঁর বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য হিলারির সমালোচনায় উঠে আসেন। প্রাক্তন বিদেশসচিব বলেছেন, ‘‘রিপাবলিকানরা, বিশেষ করে ট্রাম্প যে বাতাবরণ তৈরি করার চেষ্টা করছেন, তাতে আমেরিকা-সহ বিভিন্ন প্রান্তের মুসলিমদের কাছে এই বার্তাই পৌঁছচ্ছে যে পশ্চিমী দুনিয়ার ষড়যন্ত্রে সভ্যতাগুলির মধ্যে সংঘাত তৈরি হচ্ছে। ইসলামের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা চলছে। আর তাতেই কট্টরপন্থা মাথাচাড়া দিচ্ছে।’’

ট্রাম্পের মন্তব্যে মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে যে অসন্তোষ তৈরি হয়েছিল, তা মেটানোর আপ্রাণ চেষ্টায় হিলারিকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘আমাদের দেশে প্রত্যেকেই সচেতন থাকুক। কোথায় কী ঘটছে, জানুক। সন্দেহজনক কিছু মনে হলে সংশ্লিষ্ট জায়গায় খবর পৌঁছে দেওয়া হোক। যে সময় ওঁদের সাহায্য আমাদের সব চেয়ে বেশি প্রয়োজন, তখন যেন মুসলিমদের মনে না হয় এ দেশে ওঁরা ব্রাত্য বা প্রান্তিক।’’

এই সূত্রেই আরও একটি অভিজ্ঞতার কথা জানান আর এক ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থী এবং মেরিল্যান্ডের প্রাক্তন গভর্নর মার্টিন ও’মালে। ট্রাম্পের মুসলিম-বিরোধী মন্তব্য কতদূর প্রভাব ফেলেছে, তা জানাতে গিয়ে তিনি মেরিল্যান্ডের এক মুসলিম চিকিৎসকের কথা বলেন। ওই চিকিৎসককে এক রাতে তাঁর একরত্তি ছেলে প্রশ্ন করেছিল, ‘‘ডোনাল্ড ট্রাম্প ভোটে জিতলে কী হবে বাবা? আমাদের বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে হবে?’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE