ডোনাল্ড ট্রাম্প
বারাক ওবামার আমলের স্বাস্থ্য নীতি খারিজ করতে গিয়ে নিজের দলেই ধাক্কা খেয়েছেন সদ্য। কিন্তু ডোনাল্ড ট্রাম্প বুঝিয়ে চলেছেন, দমবার পাত্র তিনি নন। আমেরিকার কার্বন নির্গমন কমিয়ে এনে বিশ্ব উষ্ণায়ন প্রতিরোধের লক্ষ্যে এগোনোর নীতি নিয়েছিলেন ওবামা। মঙ্গলবার নতুন এগ্জিকিউটিভ অর্ডারে সই করে সেই নীতিই খারিজ করে দিলেন বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ঠিক খারিজও নয়, তা ১৮০ ডিগ্রি উল্টে দিলেন। তার পর ঘোষণা করলেন, কয়লা-চালিত তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলির উপরে সরকারের খবরদারির পথ বন্ধ করে দেবে তাঁর এই নির্দেশ।
কয়লা শিল্পের হাল ফেরানোর প্রতিশ্রুতি ভোটের প্রচারেই দিয়েছিলেন ট্রাম্প। গত কাল তিনি বলেছেন, ‘‘যে সব নিয়ম-নীতি চাকরির পথ বন্ধ করে রেখেছিল, সরকারের নাক গলানোর রাস্তা খুলে রেখে মার্কিন শক্তির ভাণ্ডারকে বেঁধে রেখেছিল, এই ঐতিহাসিক পদক্ষেপ করে সেগুলো আমি সরিয়ে দিলাম। আমেরিকায় শক্তি উৎপাদনে বিপ্লব আসবে। চাকরি হবে। দেশ আবার মহান হবে।’’ ট্রাম্পের ঘোষণায় উচ্ছ্বসিত আমেরিকার কয়লাখনি শ্রমিকদের একটা বড় অংশ। প্রেসিডেন্টের ঘনিষ্ঠ মহলের দাবি, ওবামার আমলে প্রায় ৪০০ কয়লাখনি বন্ধ হয়েছে। কাজ হারিয়েছেন ৮০ হাজারেরও বেশি শ্রমিক। ২০১৫-র প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে ওবামা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, ২০০৫ সালে আমেরিকার কার্বন নির্গমনের পরিমাণ যা ছিল, তার অন্তত ২৬ শতাংশ কমানো হবে ২০২৫ সালের মধ্যে। কয়লাচালিত তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলি ক্রমে বন্ধ করে দিয়ে পুনর্ব্যবহারযোগ্য জ্বালানির উপরে জোর দেওয়া হবে। সেই লক্ষ্যে ওবামা প্রশাসন তৈরি করেছিল ‘ক্লিন পাওয়ার প্ল্যান’।
ভোটের প্রচারের সময়ে ট্রাম্প ঠিক এই জায়গাটাই ধরেছিলেন। গত কালের নির্দেশে তাঁর কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতির নেপথ্যেও রয়েছে খনি ও তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের পুনরুজ্জীবনের বার্তা। এনভায়রনমেন্টাল প্রোটেকশন এজেন্সি (ইপিএ)-র দফতরে কয়েক জন খনিশ্রমিককে পাশে দাঁড় করিয়েই এগজিকিউটিভ অর্ডারে সই করেছেন তিনি। প্যারিস চুক্তি নিয়ে কিছু না বললেও ওবামার ‘ক্লিন পাওয়ার প্ল্যান’-এর আগাগোড়া পর্যালোচনার নির্দেশও দিয়েছেন।
উষ্ণায়নকে ‘চিনা প্রচার’ বলে আগেই দাগিয়ে দিয়েছিলেন ট্রাম্প। তাঁর বক্তব্য স্পষ্ট— দেশের আর্থিক উন্নয়নের সঙ্গে পরিস্রুত জল-হাওয়ার কোনও বিরোধ নেই। একসঙ্গে দু’টোরই বন্দোবস্ত করা সম্ভব। পরে একই কথা বলেছেন হোয়াইট হাউসের প্রেসসচিব শন স্পাইসার। যদিও তাতে আশ্বস্ত হচ্ছেন না প্রাক্তন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট তথা শান্তির নোবেলজয়ী পরিবেশবিদ অ্যাল গোরের মতো অনেকেই। তাঁদের আশঙ্কা, ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তে বিরাট ধাক্কা খাবে উষ্ণায়নের বিরুদ্ধে লড়াই। যে শ্রমিকদের পাশে নিয়ে তিনি নির্দেশে সই করলেন, তাঁরাও কার্যক্ষেত্রে কতটা উপকৃত হবেন, প্রশ্ন উঠেছে তা নিয়েও।
নয়া অভিবাসন নীতি আসা মাত্রই হোঁচট খেয়েছে আদালতে। ট্রাম্পের আরও একটি মহাবিতর্কিত নির্দেশের ভবিতব্য কী, বলবে সময়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy