লন্ডভন্ড। শনিবার ভোরে ভূমিকম্পের পরে তাইনান শহরের একটি বহুতল। —রয়টার্স
ঘড়ির কাঁটা ভোর ৪টে ছুঁইছুঁই। শহরটা তখনও ঘুমিয়ে। হঠাৎ তীব্র কম্পনে নড়ে উঠল তাইওয়ানের প্রাচীন শহর তাইনান। ভূমিকম্পের জেরে মুহূর্তে বদলে গেল সাজানো শহরটার ছবি। চারদিকে তখন ছড়িয়ে ছিটিয়ে ধ্বংসস্তূপ। ধুলো, ধোঁয়া, কংক্রিটের চাঁই আর আহত মানুষের আর্তনাদে মুখ ঢেকেছে নতুন বছরের প্রথম সূর্য।
রাত ফুরোলেই ছিল চিনা নববর্ষ। শনিবার স্থানীয় সময় ভোর ৪টে নাগাদ কেঁপে ওঠে দক্ষিণ তাইওয়ানের তাইনান শহর। রিখটার স্কেলে এই কম্পনের তীব্রতা ছিল ৬.৪। মৃত্যু হয়েছে অন্তত ১৪ জনের। ব্যাপক হারে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ভূবিজ্ঞানীদের মতে, কম্পনের উৎসস্থল মাটি থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার গভীরে হওয়ায় ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা বেড়েছে। তাইনান শহরের দক্ষিণ-পূর্বে মাত্র ৩৫ কিলোমিটার দূরেই ছিল এই উৎসস্থল। ভূমিকম্পে ভেঙে পড়েছে শহরের ১৭ তলার একটি বহুতল। ভেঙেছে আরও বেশ কিছু বাড়িঘর।
মৃতের তালিকায় কে নেই? ৫৫ বছরের ব্যক্তির পাশাপাশি রয়েছে দশ দিনের শিশুও। আহত ৪৭৭ জন। খোঁজ নেই অন্তত ১৭২ জনের। তাঁরা ধ্বংসস্তূপের তলায় চাপা পড়ে রয়েছেন বলেই আশঙ্কা। শুক্রবার সকাল থেকেই জোরকদমে চলছে উদ্ধারকার্য। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজে নেমেছে প্রায় ২০০০ উদ্ধারকারী। আহতদের অনেককেই প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। পেশায় গাড়িবিক্রেতা, তাইনান শহরের বাসিন্দা লিন-বাও-গুইয়ের চোখে-মুখে তখনও আতঙ্কের ছাপ। আকস্মিকতা কাটিয়ে তিনি জানালেন, ‘মনে হল বাড়িটা দুলছে। প্রথমে পাশাপাশি, তার পর উপর-নীচে। এ বার ডান দিক থেকে বাঁ-দিকে।’ আর অপেক্ষা করেননি গুই। বাড়ি ভাঙার বিকট আওয়াজ পেয়েই দৌড়ে বাইরে চলে আসেন তিনি। বললেন, ‘চোখের সামনে নিমেষে গুঁড়িয়ে গেল গাড়িগুলো।’
এর আগে, ১৯৯৯ সালে ৭.৬ মাত্রার কম্পনে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয় তাইওয়ানে। সে বার ভূমিকম্পে প্রায় ২৪০০ লোক মারা গিয়েছিলেন। ২০১৩ সালের জুন মাসে ৬.৩ মাত্রার আর একটি কম্পনে ফের কেঁপে উঠেছিল তাইওয়ান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy