তদন্ত চলছে। ছবি: এএফপি।
উত্তরের থেকে প্রশ্নই বেশি থেকে গেল। বৃহস্পতিবার শেষ যে সাংবাদিক সম্মেলনটি করলেন সান বার্নার্ডিনোর পুলিশ প্রধান জ্যারড বার্গুয়ান, তাতে কিছুই বিশেষ স্পষ্ট হল না। শুধু জানা গেল বুধবারের দুই হামলাকারীর নাম। এক জন সৈয়দ রিজওয়ান ফারুক (২৮)। সে মার্কিন নাগরিক। অন্য জন মহিলা। তার নাম তসফিন মালিক (২৭)। তসফিনের নাগরিকত্ব জানা যায়নি। পুলিশের গুলিতে দু’জনেই মৃত। জানা গেল, তসফিন আর ফারুকের মধ্যে সম্পর্ক ছিল। কিন্তু কী ধরনের সম্পর্ক তা স্পষ্ট হল না। কেন এই হত্যালীলা তা-ও স্পষ্ট হল না। যদিও তদন্ত চলছে বলে আশ্বাস দিলেন বার্গুয়ান।
বন্দুকবাজের হামলা আর মৃত্যুর সঙ্গে বেশ পরিচিত আমেরিকা। এক দিকে অনড় আইন, অন্য দিকে, বন্দুক নির্মাতাদের দাপট। দুইয়ের মাঝে অসহায় স্বয়ং প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাও। ফলে হতাশা প্রকাশ করা ছাড়া বিশেষ কিছুই করতে পারেননি ওবামা।
কিন্তু এটি কি আদৌ বন্দুকবাজের হামলা? কারণ, এ দিনের ঘটনাটি বেশ কয়েকটি দিক থেকে আলাদা। আর সেখানেই সন্ত্রাসের আশঙ্কা। যদিও এখনও পর্যন্ত কোনও জঙ্গি সংগঠন দায় স্বীকার করেনি।
খটকার শুরু প্রথম থেকেই। এই প্রথম গুলি চালানোর ঘটনায় দু’জন আততায়ী অংশ নিল। এখনও পর্যন্ত পুলিশের ধারণা, এক জন ফারুক, অন্য জন তসফিন। আরও আততায়ী আছে কি না তা জানা যায়নি। কিন্তু দু’জন বন্দুকবাজ এক সঙ্গে হামলা চালানোর ঘটনা আমেরিকায় বিরল।
সাধারণত এই ধরনের বন্দুকবাজের হামলায় দেখা যায় আততায়ী কোনও না কোনও ভাবে মানসিক সমস্যায় ভোগেন। কিন্তু এ ক্ষেত্রে এখনও পর্যন্ত পুলিশ তেমন কিছু পায়নি। এটুকুই জানা গিয়েছে, কোনও কারণে রাগারাগি করে ফারুক তাঁর কর্মক্ষেত্র, সোশ্যাল সার্ভিস সেন্টারে পার্টি শেষ হওয়ার আগেই বেরিয়ে যায়। কিন্তু কর্মক্ষেত্রেও ফারুক কোনও সঙ্কটে ভুগছিলেন বলে প্রমাণ মেলেনি।
পুলিশ জানিয়েছে, পার্টি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার কিছু ক্ষণ পরে ফারুক ফিরে আসে। সঙ্গে তখন তসফিন। দু’জনের কাছেই অত্যাধুনিক অস্ত্র। সঙ্গে তাঁদের বিস্ফোরক ছিল। এবং দু’জনেই বর্ম পরে। এর পরে তারা এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে থাকে। পুলিশ সোশ্যাল সার্ভিস সেন্টার থেকে পরে বিস্ফোরকগুলি উদ্ধার করে। পুলিশ জানিয়েছে, বিস্ফোরকগুলি দূর থেকেই ফাটানো যায়। কোনও কারণে বিস্ফোরণ ঘটানো সম্ভব হয়নি। পুলিশের মতে, পুরোটার মধ্যে দীর্ঘ পরিকল্পনার ছাপ স্পষ্ট।
এর পরে ক্যালিফোর্নিয়ার প্রশাসনের আচরণও কিছুটা ভিন্ন। ফারুকের নাম প্রথমে সামনে আসে মুসলিম সমাজের প্রতিনিধিদের নিয়ে করা স্থানীয় শেরিফের সাংবাদিক সম্মেলনে। যেখানে ফারুকের জামাইবাবুও উপস্থিত ছিলেন। এই ধরনের ঘটনার পরে যাতে স্থানীয় মুসলিমদের নিয়ে কোনও ভুল ধারণা তৈরি না হয় তাই চেষ্টা। কিন্তু এতে আশঙ্কা বেড়েছে বই কমেনি। স্থানীয় পুলিশ, এমনকী, এফবিআই-ও এখনও সন্ত্রাসের আশঙ্কার কথা উড়িয়ে দেয়নি।
কিছু দিন আগেই প্যারিসের জঙ্গি হামলা হয়ে গিয়েছে। তা নিয়ে উত্তাল বিশ্ব। অন্য দেশে গিয়ে হামলা চালানোর দক্ষতা ইসলামিক স্টেট (আইএস) প্রমাণ করে দিয়েছে। সেখানে মহিলা জঙ্গিকেও কাজে লাগানো হয়েছিল। আর মতাদর্শ ছড়িয়ে দেওয়ার দক্ষতায় আইএস এ যাবৎ কালের সব জঙ্গি সংগঠনকে ছাপিয়ে গিয়েছে। সব মিলিয়ে বন্দুকবাজের এই হামলার তদন্তের দিকে নজর রাখছে বাকি বিশ্ব।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy