এক দিনের শান্তিতে ইতি টানল ইজরায়েল। রবিবার হামাসের হামলার জবাব দিতে রাষ্ট্রপুঞ্জের প্রস্তাবিত সংঘর্ষ বিরতি লঙ্ঘন করে গাজায় নতুন করে হামলা চালিয়েছে ‘ইজরায়েল ডিফেন্স ফোর্স’ (আইডিএফ)। নিহত হয়েছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত এক ইজরায়েলি সেনাও। তবে ২০ দিনের যুদ্ধে আজ প্রথম বার বিবৃতি প্রকাশ করে সংঘর্ষ বিরতির প্রস্তাবে সায় দিয়েছে জঙ্গিগোষ্ঠী হামাস। রমজান মাস এবং আসন্ন ঈদের কথা ভেবেই এই সিদ্ধান্ত বলে বিবৃতিতে জানিয়েছেন হামাসের মুখপাত্র সামি আবু জহরি।
গত বৃহস্পতিবার প্যালেস্তাইনের ভারতীয় দূতাবাসের মধ্যস্থতায় দেশে ফিরে এসেছেন গাজায় কর্মরত চার ভারতীয় দর্জি। লখনউয়ের বাসিন্দা ৩৫ বছরের আবদুল লখনউয়ের বাড়ি থেকে সংবাদসংস্থাকে টেলিফোনে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে তাঁর ভয়ানক অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন। দেশে ফিরে এলেও আতঙ্কের ঘোর যে এখনও কাটেনি সে কথা জানিয়ে তিনি বলেন, “প্রার্থনায় নয়, রমজান মাসের প্রতিদিন তাঁর রোজা ভেঙেছে বোমার আওয়াজে। বৃষ্টির মতো আকাশ থেকে বোমাবর্ষণ হতো। গুলির শব্দে রাতে ঘুম ভেঙে যেত। দিনের পর দিন এ সব চোখের সামনে দেখতে দেখতে গা সওয়া হয়ে গিয়েছে।” আবদুলের কথায়, “এখনও গাজার কথা মনে পড়লে হাড় হিম হয়ে যায়। শিরদাঁড়া দিয়ে ঠান্ডা একটা স্রোত নেমে আসে। চোখের সামনে মানুষকে মরতে দেখেছি। রাস্তায় পড়ে থাকা মৃতদেহ পেরিয়ে প্রাণ বাঁচিয়ে এসেছি। এত রক্ত ভোলা যায়?” তিনি জানালেন, চার দিন ঘুরে বেরিয়েছেন আস্তানার খোঁজে। জোটেনি খাবার। রাতে চোখের পাতা এক করতে পারেননি। স্ত্রী আর ছোট্ট ছেলেকে নিয়ে যে দেশে ফিরে আসতে পারবেন সেই আশাও করেননি। আবদুল বললেন, “এ বারের ঈদে ঈশ্বরকে শুধু ধন্যবাদ জানাব। বেঁচে থাকার আশাও হারিয়ে ফেলেছিলাম। প্রার্থনাই পথ দেখিয়েছে।” শনিবারের ১২ ঘণ্টার সংঘর্ষ শিথিলতার পরে আজ সকালে নতুন করে এক দিনের বিরতি প্রস্তাব আনে রাষ্ট্রপুঞ্জ। মন্ত্রিসভার বৈঠকের পরে সেই আর্জি মেনেও নেন ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। তবে বেলা গড়াতেই আইডিএফ মুখপাত্র জানিয়েছেন, হামাসের পাল্টা হানার প্রত্যুত্তর দিতে জল, স্থল এবং আকাশপথে ফের হামলা শুরু করেছেন তাঁরা। ইতিমধ্যেই সেই হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন বেশ কয়েক জন প্যালেস্তাইনি। এ দিকে প্যালেস্তাইনের আপৎকালীন দফতর আজ জানিয়েছে, গাজা-সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০৬০। মৃতদের মধ্যে ১৯০ জন শিশু। প্রাণ হারিয়েছেন ৪৬ জন ইজরায়েলি সেনা। গত কাল শান্তি-বৈঠকের পরে আমেরিকায় ফিরেছেন মার্কিন বিদেশসচিব জন কেরি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy