অভিযুক্ত ওই চিকিৎসক। ছবি: টুইটার।
বেআইনি ভাবে শিশুদের জেনিটাল মিউটিলেশন বা যোনির অঙ্গচ্ছেদ করার অভিযোগে আমেরিকায় গ্রেফতার ভারতীয় বংশোদ্ভূত এক মহিলা চিকিৎসক। ওই চিকিৎসকের নাম জুমানা নাগারওয়ালা। তিনি আদতে গুজরাতের বাসিন্দা ছিলেন। তবে কর্মসূত্রে দীর্ঘ দিন মিসিগানের ডেট্রয়েটে থাকেন। মিসিগান পুলিশই তাঁকে গ্রেফতার করেছে।
যোনির অঙ্গহানি বা জেনিটাল মিউটিলেশন। অনেক দেশেই অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েদের এই অস্ত্রোপচার করা হয়। বাহ্যিক যৌনাঙ্গের কিছু অংশ কেটে বাদ দেওয়া হয়। এই অঙ্গচ্ছেদের মাধ্যমে মেয়েদের পবিত্র রাখা যায় বলে অনেকের বিশ্বাস। অনেকেরই বিশ্বাস, এই পদ্ধতিতে মহিলাদের কামও নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। যদিও এর তেমন কোনও বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা মেলেনি। গত ২১ বছর ধরে আমেরিকায় এই ধরণের অস্ত্রোপচার নিষিদ্ধ। চিকিৎসক নাগারওয়ালা গোপনে জেনিটাল মিউটিলেশন করেন বলে অনেক আগে থেকেই মিসিগান পুলিশের কাছে খবর ছিল। তা নিয়ে তদন্ত চলছিলই। তাঁকে বেশ কয়েকবার জেরাও করে পুলিশ। কিন্তু প্রতিবারেই অভিযোগ অস্বীকার করেন ওই চিকিৎসক। সম্প্রতি পুলিশের কাছে খবর আসে, এক শিশুকে মিসিগানে নিয়ে আসা হয়েছে জেনিটাল মিউটিলেশনের জন্য। সেই সূত্র ধরেই পুলিশ ওই চিকিৎসককে গ্রেফতার করে। মিসিগানের লিভোনিয়ায় এক মেডিক্যাল অফিসে তিনি এই অস্ত্রোপচার করতেন বলে অভিযোগ।
তদন্তে জানা গিয়েছে, ১২ বছর ধরে এই কাজ করে আসছেন তিনি। তাঁর কাছে অস্ত্রোপচার করাতে আমেরিকার অন্যান্য প্রদেশ থেকেও শিশুসন্তানদের নিয়ে আসতেন অভিভাবকরা। মূলত ৬ থেকে ৮ বছর বয়সের কন্যা শিশুদের উপরেই তিনি এই অস্ত্রোপচার করতেন বলে জানা যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: স্ত্রীর সঙ্গে নিজের বিশেষ মুহূর্তের ভিডিও পর্ন সাইটে আপলোড করে ধৃত স্বামী
আমেরিকার অ্যাটর্নি ড্যানিয়েল লেমিচ বলেন, ‘‘মহিলা এবং শিশুদের উপরে এই ধরনের অস্ত্রোপচার ভীষণই খারাপ প্রভাব আনতে পারে। তাঁদের স্বাস্থ্যের পক্ষে ভীষণ ক্ষতিকর। তাই ১৯৯৬ সালে ১৮ বছরের কম বয়সে জেনিটাল মিউটিলেশনকে বেআইনি ঘোষণা করা হয়। তা না মানলে সর্বোচ্চ ৫ পর্যন্ত জেল হতে পারে।’’ তবে জুমানা নাগারওয়ালা যে সংখ্যায় এই অস্ত্রোপচার করেছেন বলে অভিযোগ, তা প্রমাণ হলে তাঁর যাবজ্জীবন কারাদণ্ডও হতে পারে।
আমেরিকায় এর আগে জেনিটাল মিউটিলেশনের শেষ ঘটনা সামনে আসে ২০০৬ সালে। ইথিওপিয়ার এক ব্যক্তি তাঁর ২ বছরের মেয়ের জেনিটাল মিউটিলেশন করান। সেই অপরাধে তাঁর জেলও হয়। আমেরিকার এক সমীক্ষার তথ্য অনুযায়ী, ২০১২ সালে পাঁচ লক্ষাধিক মহিলা এবং শিশুকন্যার জেনিটাল মিউটিলেশন করা হয়েছে সে দেশে। আর রাষ্ট্রপুঞ্জের তথ্য অনুযায়ী, সারা বিশ্বে বর্তমানে বছরে ২০ কোটি কন্যাশিশু এবং মহিলার জেনিটাল মিউটিলেশন করা হয়। তাঁদের বেশিরভাগই মিশর, ইথিওপিয়া এবং ইন্দোনেশিয়ার বাসিন্দা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy