আইএস ঘাঁটি লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র হানা ইরাকি বাহিনীর। ছবি: রয়টার্স।
আইএস-এর হাত থেকে মসুলকে সম্পূর্ণ মুক্ত করতে চূড়ান্ত অভিযান শুরু হয়ে গেল ইরাকে। আজ, রবিবার ভোর থেকে অভিযান শুরু হয়েছে। টাইগ্রিসের পশ্চিম তীরে অবস্থিত শহরের যে অংশ, সেই অংশকে বাইরে থেকে সম্পূর্ণ ঘিরে ফেলেছে ইরাকি বাহিনী। শহর লাগোয়া কয়েকটি গ্রাম ইরাকি সেনা ইতিমধ্যেই পুনরুদ্ধার করেছে। আমেরিকার নেতৃত্বাধীন কোয়ালিশন বাহিনী আকাশ পথে আক্রমণ শুরু করেছে।
মসুল পুনরুদ্ধারে ইরাকি সেনা যে চূড়ান্ত অভিযান শুরু করছে, ইরাকের প্রধানমন্ত্রী হায়দর আল-আবাদি নিজেই সে কথা ঘোষণা করেন। তার পর রবিবার ভোর থেকেই মসুলের পশ্চিমাংশকে ঘিরে ফেলতে শুরু করেছে ইরাকের সশস্ত্র বাহিনী। শ’য়ে শ’য়ে সাঁজোয়া গাড়িকে মরুভূমি পেরিয়ে মসুলের পশ্চিম সীমান্তে ভিড় জমাতে দেখা গিয়েছে। শুরু হয়েছে বিমানহানাও।
ইরাকি বাহিনী ঘিরে ধরছে মসুল শহরকে। ছবি: রয়টার্স।
টাইগ্রিসের দুই তীর জুড়ে মসুলের অবস্থান। পূর্ব তীরে শহরের যে অংশ রয়েছে, গত মাসে এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে সেই অংশ পুনরুদ্ধার করে নিয়েছে ইরাক। কিন্তু টাইগ্রিসের পশ্চিম তীরবর্তী এলাকা এখনও আইএস-এর দখলে। এই এলাকা ইরাকে আইএস-এর শেষ শক্ত ঘাঁটি। ইরাকি বাহিনী যদি পশ্চিম মসুল থেকে আইএস-কে উৎখাত করতে পারে, তা হলে ইরাকের উপর নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনটির নিয়ন্ত্রণ প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়ার পথে এগোবে।
মসুলের পশ্চিমাঞ্চল ইরাকের আইএস-এর শেষ বড় ঘাঁটি। সেই দুর্গই এ বার ধসিয়ে দেওয়ার তোড়জোড়। ছবি: রয়টার্স।
আইএস-নিধনে যে বাহিনী ইরাকে যুদ্ধ করছে, সে বাহিনীতে ইরাকের সরকারি সেনা ছাড়াও রয়েছে শিয়া মিলিশিয়া এবং কুর্দ বাহিনী। মার্কিন নেতৃত্বাধীন কোয়ালিশন ফোর্স এই বাহিনীকে সব রকম ভাবে সাহায্য করছে। রবিবার সকালে ইরাকি বাহিনী মসুলের পশ্চিমাংশ ঘিরে ফেলার পর কোয়ালিশন ফোর্সও বিমানহানা শুরু করে দিয়েছে। আইএস-এর ঘাঁটিগুলিকে চিহ্নিত করে আকাশ থেকে বোমা বর্ষণ শুরু করেছে তারা।
এগোচ্ছে ইরাকি বাহিনী। ছবি: এপি।
বাগদাদ সূত্রের খবর, অভিযানের শুরুতেই সাফল্য পেয়েছে ইরাকি বাহিনী। পশ্চিম মসুলের দক্ষিণ প্রান্তে অবস্থিত দু’টি গ্রাম প্রায় বিনা বাধায় দখল করে নিয়েছে তারা। এই দু’টি গ্রাম দখল করার সুবাদে আইএস-এর দখলে থাকা মসুল বিমানবন্দরের খুব কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছে ইরাকি সেনা।
আরও পড়ুন: হাফিজ সইদ জঙ্গি, মেনে নিল পাকিস্তানও
তবে গ্রামগুলির সব বাড়িই এখন ফাঁকা বলে জানা গিয়েছে। ইরাকি সেনা অভিযান চালাবে তা আইএস জানত। সেই কারণে যত বেশি সম্ভব সাধারণ নাগরিককে মসুলের ভিতরে জড়ো করেছে আইএস। শহরের মধ্যে এ ভাবে প্রায় ৬ লক্ষ ৫০ হাজার সাধারণ নাগরিককে আটকে রাখা হয়েছে। এর ফলে ইরাকি সেনা এবং কোয়ালিশন ফোর্স বেপরোয়া আক্রমণ চালাতে পারবে না, কারণ সে ক্ষেত্রের বহু নিরীহ মানুষের প্রাণহানি হতে পারে। শহরকে ঘিরে ফেলার পর তাই খুব সাবধানে ভিতরের দিকে এগোতে শুরু করেছে ইরাকি সেনা। সাধারণ নাগরিকদের প্রাণহানি যাতে না হয়, সে বিষয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জও সতর্কবার্তা দিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy