খুরম শাজাদ বাট। ছবি: সংগৃহীত।
লন্ডন সেতু আর বরো মার্কেটে জঙ্গি হামলার পরে কেটে গিয়েছে গোটা একটা সপ্তাহ। যত দিন যাচ্ছে, ওই হামলার মূল চক্রী খুরম শাজাদ বাট সম্পর্কে মিলছে নানা চমকপ্রদ তথ্য। গত কালই একটি প্রথম সারির ব্রিটিশ দৈনিক দাবি করেছে, উইম্বলডনে স্টুয়ার্ড হিসেবে চাকরি পাওয়ার চেষ্টা করেছিল সে। যা দেখে তদন্তকারীদের ধারণা, সম্ভবত উইম্বলডনের মতো বড় মাপের টেনিস টুর্নামেন্টে হামলা চালানোর পরিকল্পনা ছিল তার।
গত ৩ জুন রাতে লন্ডন সেতু আর বরো মার্কেটে ভ্যান আর ছুরি নিয়ে হামলা চালিয়েছিল খুরম ও তার তিন সঙ্গী। প্রথমে রাস্তায় কিছু পথচারীকে পিষে মারে তারা। তার পর বরো মার্কেট সংলগ্ন এলাকায় একটি পাবে ঢুকে ছুরি নিয়ে আক্রমণ করে সেখানে উপস্থিত বেশ কয়েক জনকে। হামলায় মৃত্যু হয় আট জনের। জখম হন ৪৮ জন। পুলিশের গুলিতে সে রাতেই মৃত্যু হয় খুরম ও তার দুই সঙ্গী র্যাচিড রেদুয়ান এবং ইউসুফ জাগবার।
ওই দৈনিকের দাবি, লন্ডনের যে নিরাপত্তা সংস্থা উইম্বলডন এবং প্রিমিয়ার লিগ ফুটবল ক্লাবে স্টুয়ার্ড সরবরাহ করে, তাদের সঙ্গে একটি ইন্টারভিউয়ের ব্যবস্থা করেছিল খুরম। এই মাসের শেষের দিকেই ছিল সেই ইন্টারভিউ। তদন্তকারীদের একাংশের ধারণা, প্রথমে উইম্বলডনে বড়সড় হামলার ছক ছিল তার। কিন্তু ম্যাঞ্চেস্টার এরিনায় আত্মঘাতী হামলার পরে বোধ হয় সে নিজের পরিকল্পনায় গতি আনে। যত দ্রুত সম্ভব ব্রিটেনে আরও একটা হামলার ছক কষে। তাই গাড়ি নিয়ে পথচারীদের পিষে মারে সে ও তার সঙ্গীরা।
তদন্তকারীরা আরও জানিয়েছেন, লন্ডন মেট্রোয় ছ’মাস কাজ করেছিল খুরম। ওয়েস্টমিনস্টার স্টেশনে কাজ পেয়েছিল সে। সম্ভবত সেটাও ছিল নিরাপত্তারক্ষীর কাজ। গত অক্টোবরে সেই চাকরি সে ছেড়ে দেয়। সেখানেও তার কোনও হামলার ছক ছিল কি না, তা স্পষ্ট নয়। কিন্তু লন্ডন মেট্রোর মতো জায়গা, যা আগেও জঙ্গি হামলার নিশানা হয়েছে, সেখানে খুরম কী করে কাজ পেল, সেটা ভাবিয়ে তুলেছে গোয়েন্দাদের। এক গোয়েন্দা কর্তা জানালেন, কট্টরপন্থী কার্যকলাপের জন্য খুরম আগে থেকেই ব্রিটিশ গোয়েন্দাদের নজরে ছিল। কিন্তু যে নিরাপত্তা সংস্থার সূত্রে সে মেট্রোয় কাজ পেয়েছিল, তারা পুলিশ বা গোয়েন্দা নজরে থাকা খুরমের অতীত সম্পর্কে বিশেষ তথ্য পায়নি। সে জন্যই খুব সহজে সে সেখানে কাজ পেয়ে যায়।
গত কাল খুরম ও তার সঙ্গীদের হামলার রাতে ব্যবহার করা ভুয়ো সুইসাইড জ্যাকেটের ছবি প্রকাশ করেছে স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড। জলের বোতলের সঙ্গে চামড়ার বেল্ট লাগানো সেই জ্যাকেট রুপোলি তার দিয়ে মোড়া ছিল। মৃত্যুর সময়ও তাদের গায়ে জড়নো ছিল সেই ভুয়ো জ্যাকেট। সে রাতে ঠিক কী উদ্দেশ্যে তারা সেগুলি পরেছিল, তা এখনও স্পষ্ট নয় পুলিশের কাছে। এক পুলিশ কর্তা বলেন, ‘‘হয়তো গুলির থেকে বাঁচতে তারা এমন পরকল্পনা করেছিল। বা পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে কিছু মানুষকে পণবন্দি করার পরিকল্পনাও থাকতে পারে তাদের।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy