তখন মাত্র ১১ বছর বয়স। মাঠের কাজে সাহায্য করতেন বাবাকে। ফসল বিক্রি করতে যেতেন বাজারে। ট্রান্সপোর্টে ফসল আমদানি রফতানির কাজও তদারকি করতে হত ওই বাচ্চা বয়স থেকেই।
বাবার ছিল তুলোর ব্যবসা। বেশির ভাগ সময়েই বীজ থেকে তুলো আলাদা করার পর সেটা ফেলে দেওয়া হত। কিন্তু, তুলোর বীজও যে বিকল্প কাজে লাগতে পারে তা প্রথম দেখিয়েছিল কিশোর। ফেলে দেওয়া তুলোর বীজ থেকে আঠা তৈরি করে সে চমকে দিয়েছিল সবাইকে। এর পরেই ৯০ শতাংশেরও বেশি লাভ হতে থাকে তুলোর চাষে। তুলো বীজের শেষাংশও ফেলে না দিয়ে কী ভাবে গবাদি পশুর খাদ্য হিসাবে ব্যবহার করা যায়, তাও দেখিয়েছিল সেই খুদে। শুরুর বীজটা রোপন হয়েছিল তখনই।
এ ভাবেই ধীরে ধীরে হাত পাকানো ব্যবসার কাজে। কেরলের বাসিন্দা জর্জ ভি নেরিয়াপারাম্বিল ভাগ্যান্বেষণে এর পরেই পাড়ি জমালেন আরব আমিরশাহিতে। সেটা ১৯৭৬-এর কথা। পাকা ব্যবসায়ী মস্তিষ্ক বুঝতে পারে গরমের দেশে সবচেয়ে ভাল জমবে এয়ার কন্ডিশনারের ব্যবসা। যেমন ভাবা তেমন কাজ। ধীরে ধীরে পসার জমতে শুরু করল। জিইও কোম্পানি খুলে বসলেন জর্জ। সেই শুরু। আর ফিরে তাকাতে হয়নি। এখন বিশ্বের উচ্চতম বাড়িটির ২২ খানা অ্যাপার্টমেন্টের মালিক তিনি।
আরও পড়ুন: পরীক্ষায় বসার জন্য খুলতে হল অন্তর্বাস!
উজ্জ্বল মুখে জর্জ বলেছেন, ‘‘একটা সময় আমার আত্মীয়েরা এই অ্যাপার্টমেন্টের পাশ দিয়ে যেতে যেতে বলতেন, এটাই বুর্জ খলিফা, কখনওই যার ভিতরে ঢুকতে পারবে না তুমি।’’ কিন্তু আত্মীয়দের কথা মিথ্যে প্রমাণ করেছেন জর্জ। কী ভাবে এই অসম্ভব সম্ভব হল?
২০১০-এ হঠাৎই খবরের কাগজে একটি বিজ্ঞাপন চোখে পড়ে জর্জের। বুর্জ খলিফায় একটি অ্যাপার্টমেন্ট ভাড়া দেওয়ার বিজ্ঞাপন ছিল সেটি। বিজ্ঞাপনটি দেখে আর দেরি করেননি জর্জ। সেই সময় থেকেই বুর্জ খলিফায় থাকা শুরু করেছিলেন। আজ বিশ্বের উচ্চতম এই বাড়িতেই ২২টি অ্যাপার্টমেন্টের মালিক তিনি।
তবে নিজের এই সাফল্য সমাজের মধ্যে ভাগ করে দিতে চান জর্জ ভি নেরিয়াপারাম্বিল। তাঁর ইচ্ছা ত্রিবান্দ্রম থেকে কাসারাকদ পর্যন্ত খাল বানাবেন তিনি। কিন্তু হঠাৎ খাল কেন? জর্জ জানালেন, ‘‘এই খালের মাধ্যমে কাছাকাছি জঙ্গলের প্রাকৃতিক জলাধার থেকে জল নিয়ে আসব। সেই জল থেকে জলবিদ্যুৎ তৈরি করার পরিকল্পনা রয়েছে। পাশাপাশি এই জল সেচের কাজেও ব্যবহার করা যাবে। মৎস্যজীবীরা মাছ ধরতে পারবেন। আমি এই খালের প্রতিটি অংশ ভাল কাজে লাগাতে চাই।’’
৮২৮ মিটার উঁচু বিশ্বের এই উচ্চতম টাওয়ারের ৯০০টি অ্যাপার্টমেন্টের মধ্যে ২২টির মালিক জর্জ। তাঁর ব্যক্তিগত মালিকানাতেই রয়েছে সবচেয়ে বেশি অ্যাপার্টমেন্ট। তবে এখনও থামতে চান না জিইও-র মালিক। বলেন, ‘‘আমি আরও কিনতে চাই। আমি স্বপ্ন দেখতে ভালবাসি এবং আমি স্বপ্ন দেখা কখনও বন্ধ করি না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy