Advertisement
১১ মে ২০২৪

ব্রিটেনে বিতর্ক বাঙালিনিকে নিয়ে

হাউস অব লর্ডসের সদস্যপদের দিকে তাকিয়েই কি ইহুদি-বিদ্বেষ নিয়ে যথাযথ রিপোর্ট জমা পড়েনি, ব্রিটেন জুড়ে নতুন জল্পনা এটাই। বিশেষত ব্রিটেনের প্রথম সারির একটি দৈনিকের প্রতিবেদনকে ঘিরে নতুন করে জমে উঠেছে বিতর্ক। যার কেন্দ্রে রয়েছেন হাউস অব লর্ডসের মনোনীত সদস্য, বিশিষ্ট মানবাধিকার কর্মী শমি চক্রবর্তী।

শমি চক্রবর্তী

শমি চক্রবর্তী

শ্রাবণী বসু
লন্ডন শেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০১৬ ০৩:২১
Share: Save:

হাউস অব লর্ডসের সদস্যপদের দিকে তাকিয়েই কি ইহুদি-বিদ্বেষ নিয়ে যথাযথ রিপোর্ট জমা পড়েনি, ব্রিটেন জুড়ে নতুন জল্পনা এটাই। বিশেষত ব্রিটেনের প্রথম সারির একটি দৈনিকের প্রতিবেদনকে ঘিরে নতুন করে জমে উঠেছে বিতর্ক। যার কেন্দ্রে রয়েছেন হাউস অব লর্ডসের মনোনীত সদস্য, বিশিষ্ট মানবাধিকার কর্মী শমি চক্রবর্তী।

রানির দেশে এই বাঙালিনিকে নিয়ে চর্চা চলছে অনেক দিন ধরেই। ব্রিটেনের অন্যতম মানবাধিকার সংগঠন ‘লিবার্টির’ প্রাক্তন প্রধান শমি অতীতে ক্ষমতাসীন সরকারের উপরে বিভিন্ন সময়েই মানবাধিকার প্রসঙ্গে চাপ তৈরি করে এসেছেন। তাঁর নিশানা থেকে বাদ যায়নি লেবার পার্টিও। এই শমিই এখন লেবার পার্টির মনোনীত সদস্য হিসেবে হাউস অব লর্ডসে ঢুকেছেন। শমির যা যোগ্যতা, তাতে অবশ্য তাঁর পক্ষে হাউস অব লর্ডসে ‘ছায়া অ্যাটর্নি জেনারেল’ হওয়া অসম্ভব নয়। কিন্তু গোল বাধিয়েছে লেবার পার্টির জন্য তৈরি করা শমির একটি রিপোর্ট।

লেবার পার্টিতে ইহুদি-বিদ্বেষ আছে কি না, থাকলে কতটা— খতিয়ে দেখে একটা রিপোর্ট তৈরির দায়িত্ব ছিল শমির। শমি তাঁর রিপোর্টে লেবার পার্টিকে ক্লিনচিট দেন। শমির এই রিপোর্ট নিয়েই দলের ঘরে-বাইরে খুবই সমালোচনা হয়েছে। রিপোর্টে তিনি নেতিবাচক দিকগুলি ধামাচাপা দিয়েছেন বলে অভিযোগ। ওই রিপোর্ট জমা দেওয়ার পরপরই লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিন হাউস অব লর্ডসে মনোনীত করেন শমিকে। তাই রিপোর্টের সঙ্গে শমির পদলাভের সম্পর্ক রয়েছে কি না, তাই নিয়েও শুরু হয় জল্পনা।

এ বার ব্রিটিশ সংবাদপত্রের দাবি, গত মার্চ মাসেই বিরোধী নেতা করবিন তাঁর দলের সঙ্গে কথা বলে ঠিক করে নেন, শমিকে হাউস অব লর্ডসে আনা হবে। এর এক মাস পরে ইহুদিবিদ্বেষ সংক্রান্ত ওই রিপোর্ট তৈরির দায়িত্ব শমিকে দেওয়া হয়। দৈনিকটির বক্তব্য, শমি তখনই জানতেন, হাউস অব লর্ডসের সদস্য হিসেবে তাঁর নাম ভাবা হচ্ছে। করবিনকে তুষ্ট রাখার জন্যই তিনি ইতিবাচক রিপোর্ট তৈরি করেন বলে অভিযোগ। তবে শমি নিজে এই অভিযোগ নস্যাৎ করেছেন। হাউস অব লর্ডসে আগমন আর ওই রিপোর্টের মধ্যে সম্পর্ক নেই বলেই তাঁর দাবি।

তবে লেবারের ছায়া বিদেশমন্ত্রী ডায়ান অ্যাবট আবার শমির পক্ষ নিয়ে বলেছেন, ‘‘প্রাক্তন লেবার প্রধানমন্ত্রী গর্ডন ব্রাউন এবং অন্য এক লিবারেল ডেমোক্র্যাট নেতাও সদস্য হওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন ওঁকে। শমিকে যদি ‘কিনে’ নিয়ে মনোনয়ন দিতে হয়, তা হলে সেটা অনেক আগেই করা যেত।’’ করবিনের মুখপাত্রও বলছেন, ‘‘শমি রিপোর্ট জমা দেওয়ার পরে মনোনয়নের প্রস্তাব যায় তাঁর কাছে।’’

সেপ্টেম্বরে হাউস অব লর্ডসে ‘ব্যারনেস চক্রবর্তী অব কেনিংটন’ হিসেবে যোগ দেন শমি। তার আগে জুলাই মাসে শমি এবং করবিনের মুখপাত্রের মধ্যে প্রথম বার কথা হয় বলে তাঁরা জানাচ্ছেন। কিন্তু এই মুহূর্তে লেবার পার্টির অন্দরেও অনেকে শমির সমালোচনায় সরব। লেবার এমপি ট্রিস্টর‌্যাম হান্ট যেমন বলেছেন, ‘‘ব্রিটেনে ইহুদিদের সঙ্গে আমাদের বরাবরই ভাল সম্পর্ক। কিন্তু সেটা নিয়েও এ বার প্রশ্ন উঠছে। দলের ভিতরে ইহুদি-বিরোধিতার বীজ যে ভাবে মাথা চাড়া দিচ্ছে তা দেখে অনেক সদস্যই ব্যথিত।’’ ট্রিস্টর‌্যামের মতে, ‘‘এই সঙ্কটটা প্রকাশ্যে আনার সুযোগ ছিল শমির হাতে। কিন্তু তিনি তা করেননি। যার ফল ভুগতে হচ্ছে আমাদেরই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

shami chakrabarti
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE