বিশ্ব জনমতকে থোড়াই কেয়ার করে, মূলত আমেরিকাকে লক্ষ্য করেই ফের ক্ষমতার আস্ফালন দেখাল উত্তর কোরিয়া। ভুগর্ভে ফাটাল হাইড্রোজেন বোমা। যার জেরে কেঁপে উঠল ভূমিকম্পেও। রিখটার স্কেলে যার মাত্রা ছিল ৫.১।
পরীক্ষামূলক ভাবে, এই প্রথম হাইড্রোজেন বোমা ফাটাল উত্তর কোরিয়া। পিয়ংইয়ংয়ের তরফে বুধবার এমনটাই দাবি করা হয়েছে।
শুধু তাই নয়, ওই পরীক্ষা সফল ভাবে করা হয়েছে বলে জানিয়েছে উত্তর কোরিয়া। এর আগেও তিন বার ভূগর্ভে পারমাণবিক বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিল পিয়ংইয়ং। ২০০৬, ২০০৯ আর ২০১৩ সালে। তবে হাইড্রোজেন বোমা আর পরমাণু বোমা এক জিনিস নয়। হাইড্রোজেন বোমা অনেক বেশি শক্তিশালী। এক যুগ আগে পোখরানে ভারতও ভূগর্ভে পরীক্ষামূলক ভাবে হাইড্রোজেন বোমা ফাটিয়েছিল বলে অভিযোগ। তবে তার জেরে ভূকম্পন হয়নি। কিন্তু নিরাপত্তার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় এ দিন উত্তর কোরিয়ায় হাইড্রোজেন বোমা বিস্ফোরণের পরপরই ভূমিকম্প হয়।
আরও পড়ুন- পরমাণু বোমার কাছে দানব হাইড্রোজেন বোমা!
সঙ্কট আরও জটিল হল উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক পরীক্ষায়
উত্তর কোরিয়ার এ দিনের দাবি যদি পুরোপুরি সত্যি হয়, তবে পারমাণবিক শক্তির অস্ত্র-ভাঁড়ারের নিরিখে কার্যত, চূড়ান্ত পর্যায়েই পৌঁছে গেল, বলা যায়।
কূটনৈতিক সূত্রের খবর, পরীক্ষামূলক ভাবে হাইড্রোজেন বোমা ফাটনোর নির্দেশটা দিয়েছিলেন খোদ উত্তর কোরিয়ার ‘একনায়কতন্ত্রী’ নেতা, প্রেসিডেন্ট কিম জং-উন। গত ৩ জানুয়ারি তিনি ওই নির্দেশে সই করেন। আর দু’দিন পরেই প্রেসিডেন্ট কিম জং-উনের জন্মদিন। তার আগে এমন পরীক্ষায় ‘সফল ভাবে উত্তীর্ণ হওয়ায় তিনি খুশি’ বলে সে দেশের সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে।
তাদের হাতে হাইড্রোজেন বোমা আছে আর তা যে কোনও সময় তারা ফাটাতে পারে বলে গত নভেম্বরের শেষে হুমকি দিয়েছিলেন উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট।
উত্তর কোরিয়ার সংবাদমাধ্যম আরও জানিয়েছে, সাম্প্রতিক পরীক্ষা সম্পূর্ণ ভাবেই সে দেশের প্রযুক্তি-নির্ভর। ওই প্রকল্পে শুধুই উত্তর কোরিয়ার বিজ্ঞানীরা কাজ করেছেন। পিয়ংইয়ংয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রশাসনিক কর্তা বলেছেন, ‘‘আমেরিকার জন্যই আমাদের আত্মরক্ষার প্রস্তুতি নিতে হচ্ছে।’’
ও দিকে, এই খবর প্রকাশ্যে আসার পরেই আন্তর্জাতিক মহলে শোরগোল পড়ে যায়। উত্তর কোরিয়ার দাবি সত্যি কি না, তা খতিয়ে দেখার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
পরমাণু বোমায় পরমাণুর বিয়োজন ঘটানো হয়। আর হাইড্রোজেন বোমায় দু’টি হাইড্রোজেন পরমাণুকে জুড়ে দেওয়া হয়। আর ঘটানো হয় ‘চেন রিঅ্যাকশন’। এই প্রক্রিয়ায় প্রচুর তাপশক্তি উত্পন্ন হয়। যার পরিমাণ, সাধারণ পরমাণু বোমার চেয়ে অনেক অনেক গুণ বেশি।
আমেরিকা এখনও এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেনি। সূত্রের খবর, যে সব তথ্য তাদের হাতে পৌঁছেছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সত্যি ওটা হাইড্রোজেন বোমা কি না তা জানতে কয়েক দিন সময় লাগবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy