নয়া সেনাপ্রধান কমর জাভেদ বাজওয়ার অধীনেও পাক সেনার মূল নিশানা যে ভারতই তা স্পষ্ট করে দিল পাকিস্তান। আবার নয়া সেনাপ্রধানকে স্বাগত জানানোর পাশাপাশি সন্ত্রাস প্রশ্নে পাকিস্তানের উপরে চাপ বাড়াল আমেরিকা।
পাকিস্তানে নির্বাচিত সরকারের চেয়ে সেনার গুরুত্ব অনেক সময়েই বেশি। তাই রাহিল শরিফের পরে কমর বাজওয়া সেনাপ্রধানের দায়িত্ব নেওয়ার পরেই পরিস্থিতির বিশ্লেষণ শুরু হয়েছে দিল্লিতে। আজ পাক প্রতিরক্ষা মন্ত্রী খ্বাজা আসিফ বলেন, ‘‘নয়া প্রধানের অধীনেও পাক সেনার মূল দায়িত্ব হবে দেশের পূর্ব সীমান্ত রক্ষা করা।’’ ভারতীয় কূটনীতিকদের মতে, পাক সেনার ভারত-বিরোধিতা যে বদলাচ্ছে না তা প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর বক্তব্য থেকেই স্পষ্ট।
সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে বাজওয়া মন্তব্য করেন, ‘‘ভারত নয়, দেশের মাটিতে তৈরি হওয়া সন্ত্রাসবাদই পাকিস্তানের বড় শত্রু।’’ তার পরেই পাক সেনার নীতি বদলের সম্ভাবনা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়। কিন্তু প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর মন্তব্যের পরে আর তা নিয়ে বিশেষ মাথা ঘামাতে রাজি নয় দিল্লি।
ভারতীয় সেনা অফিসারদের মতে, বাজওয়া নিয়ন্ত্রণরেখার প্রশ্নে অত্যন্ত অভিজ্ঞ এক জন অফিসার। তিনি নিয়ন্ত্রণরেখার কোর কম্যান্ডান্ট ছিলেন। গোটা কাশ্মীর উপত্যকাটি যেমন তাঁর হাতের তেলোর মতো চেনা, তেমন তিনি সংঘর্ষবিরতি নিয়ে ভারত-পাকিস্তানের দীর্ঘদিনের টানাপড়েনটিও জানেন।
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে বাজওয়া ভারতের প্রাক্তন সেনাপ্রধান বিক্রম সিংহের নেতৃত্বে কঙ্গোতে রাষ্ট্রপুঞ্জের শান্তবাহিনীতেও কাজ করেছেন। তাঁর পেশাদারিত্ব ও কর্মদক্ষতার ভূয়সী প্রশংসাও করেছেন বিক্রম সিংহ। কিন্তু তিনি পাকিস্তানের সেনাপ্রধান হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পরে বিক্রম সিংহ বলেছেন, ‘‘রাষ্ট্রপুঞ্জের ছাতার তলায় বিশ্বশান্তির প্রশ্নে কাজ করার সময়ে অনেকের সঙ্গেই দুর্দান্ত পেশাদারি সমঝোতা তৈরি হয়। কিন্তু নিজের দেশে ফিরে এলে ব্যাপারটা বদলে যায়। তখন দেশের স্বার্থই অগ্রাধিকার পায়। ভারতের উচিত বাজওয়ার বিষয়ে সতর্ক হওয়া।’’ ভারতীয় কূটনীতিকদের মতে, আইএসআই-মোল্লাতন্ত্রের অচলায়তন ভাঙা
কোনও পাক সেনাপ্রধানের পক্ষেই সম্ভব নয়।
ভারতীয় গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, বাজওয়ার সঙ্গে পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের সম্পর্ক ভাল। তাঁকে সেনাপ্রধান হিসেবে বাছাই করার প্রশ্নে পাক প্রধানমন্ত্রীর ভূমিকা রয়েছে। কিন্তু আগে যে সব সেনাপ্রধানের সঙ্গে শরিফের সম্পর্ক ভাল ছিল তাঁরাই পরে তাঁকে বিপাকে ফেলেছেন। ধাক্কা দিয়েছেন ভারতকেও। পারভেজ মুশারফ কার্গিলে অভিযান চালিয়েছিলেন। পরে ক্ষমতাচ্যুত করেছিলেন শরিফকে। রাহিল শরিফও নওয়াজের ভারত-প্রীতির নীতি কার্যত বানচাল করে দিয়েছেন।
এরই মধ্যে মুখ খুলেছে আমেরিকা। নয়া সেনাপ্রধানকে স্বাগত জানিয়ে ইসলামাবাদের মার্কিন দূতাবাসের বক্তব্য, ‘‘পাকিস্তানের মাটিতে সন্ত্রাসকে খতম করতে আমরা নির্বাচিত সরকার ও লেফটেন্যান্ট জেনারেল বাজওয়ার সঙ্গে কাজ করতে চাই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy