দেশে গণতন্ত্র রক্ষার খাতিরে পথে নেমেছেন বিরোধীরা। বিদ্রোহের আগুনে জ্বলছে প্যারাগুয়ে। আর সেই আঁচে এ বার পুড়ল দেশের পার্লামেন্টও। সংবিধান সংশোধনী আটকাতে রাজধানী অ্যাসুনসিওনে অবস্থিত দেশের পার্লামেন্টে কাল রাতে আগুন লাগিয়ে দেয় বিদ্রোহীরা। ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওযা হয় জানলার কাচ। পুলিশের ছোড়া রাবার বুলেটে মৃত্যু হয়েছে এক বিরোধী নেতারও।
গত কয়েক দিন ধরেই অশান্তি ছড়াচ্ছিল লাতিন আমেরিকার এই দেশটিতে। বিরোধীদের অভিযোগ, সংবিধানে সংশোধনী আনতে চাইছেন প্রেসিডেন্ট হোরাসিও কার্তেস। ১৯৯২ সালে তৈরি সংবিধান অনুযায়ী, দেশের কোনও শাসক পাঁচ বছরের বেশি সময় ক্ষমতায় থাকতে পারবেন না। কিন্তু সেই আইনেই এখন বদল আনতে চাইছেন প্রেসিডেন্ট কার্তেস। তাঁর দাবি, নতুন সংবিধানে শাসকের সময়কাল কোনও সীমায় বেঁধে রাখা যাবে না। আর ঠিক এই জায়গাতেই আপত্তি তুলেছেন বিরোধীরা। সংবিধান সংশোধন করতে একটি নতুন বিলের প্রয়োজন। পার্লামেন্টের ২৫ জন সেনেটর তাতে সায় দেওয়ার পরই খেপে ওঠেন বিরোধীরা। নতুন বিল তৈরি করতে পার্লামেন্টের অন্য কক্ষেরও সম্মতি দরকার। আর সেখানে কার্তেসের দলের সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় খুব সহজেই তা পাশ হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা বিরোধীদের।
যে করেই হোক তাই এই বিল আটকাতে চাইছেন তাঁরা। অ্যাসুনসিওনের রাস্তায় দফায় দফায় বিরোধীদের সঙ্গে সংঘর্ষ চলছে পুলিশের। প্রেসিডেন্ট টুইটারে শান্তির আর্জি জানিয়েছেন। কিন্তু তাতে কাজ হয়নি কিছুই। কাল রাতে পার্লামেন্টের একাংশে আগুন লাগিয়ে দেন বিদ্রোহীরা। চলে যথেচ্ছ ভাঙচুরও। বিক্ষোভ ঠেকাতে গুলি চালায় পুলিশ। পুলিশের রাবার বুলেটে মৃত্যু হয়েছে ২৫ বছরের যুবক রডরিগো কুইনতানার। তাঁর মৃত্যুর তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে সরকার।
১৯৫৪ থেকে ’৮৯ সাল পর্যন্ত সামরিক শাসন কায়েম ছিল প্যারাগুয়েতে। জেনারেল আলফ্রেডো স্ত্রোয়েসনারকে গদিচ্যুত করার পর গণতন্ত্র আসে দেশে। ১৯৯২ সালে তৈরি হয় নতুন সংবিধান। সেই সংবিধানেই এখন সংশোধন আনতে চেয়ে বিরোধীদের সমালোচনার মুখে পড়েছেন কার্তেস। সংবিধান সংশোধিত হলে দেশের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ফার্নান্দো লুগোও ফের শাসন ক্ষমতা হাতে পেতে পারেন। তাঁর শাসনকালে জমি অধিগ্রহণকে কেন্দ্র করে অশান্তির জেরে ১৭ জনের মৃত্যু হয়। ২০১২ সালে প্রেসিডেন্ট পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় লুগোকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy