রুশ রাষ্ট্রদূত সের্গেই কিসলিয়াককে ফোন করে ফেঁসে গিয়েছিলেন প্রেসিডেন্টের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেনারেল মাইকেল ফ্লিন। যার জেরে ইস্তফাও দিতে হয়েছিল তাঁকে।
দিন কুড়ির ব্যবধানে ফের সেই বিতর্কে জড়ালেন ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের অ্যাটর্নি জেনারেল (এজি) জেফ সেশন্স। এ বার অবশ্য শুধু ফোনালাপ নয়। সেশন্সের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার আগে মার্কিন ভোট নিয়ে অন্তত দু’বার তিনি বৈঠক করেছেন রুশ প্রতিনিধির সঙ্গে। বিতর্ক জোরালো হতেই ভোটে রাশিয়ার হস্তক্ষেপ বিষয়ক এফবিআইয়ের তদন্ত কমিটি থেকে সরে দাঁড়ালেন সেশন্স।
চিঁড়ে অবশ্য ভিজছে না তাতেও। গতকালই ওয়াশিংটনের বিচার বিভাগের সামনে এজি পদ থেকে সেশন্সের ইস্তফার দাবিতে বিক্ষোভ দেখান কয়েকশো ডেমোক্র্যাট। অ্যাটর্নি জেনারেল পদে শপথ নেওয়ার সময় বিষয়টি নিয়ে কেন তিনি সেনেটকে কিছু জানাননি, প্রশ্ন উঠছে তা নিয়েও। তদন্ত কমিটি থেকে সরে দাঁড়ালেও ভোটে রাশিয়ার সঙ্গে যোগসাজশের বিষয়টি মানছেন না সেশন্স। তাঁর কথায়, ‘‘রাশিয়ার সঙ্গে ভোট নিয়ে কোনও আলোচনার কথা আমার অন্তত মনে পড়ছে না। খুব সম্ভবত সন্ত্রাস-দমন নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। আর কথায় কথায় উঠে এসেছিল ইউক্রেনের প্রসঙ্গ। ব্যস, আর কিছু নয়।’’
আরও পড়ুন: আউটসোর্সিং বন্ধ করতে ফের বিল মার্কিন কংগ্রেসে, উদ্বেগ ভারতের বাজারে
দেশবাসীর এই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে সেশন্স জানান, প্রচলিত বিধান এবং নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। যার জের টেনে আজ দিনভর তাঁর প্রশংসা শোনা গিয়েছে ট্রাম্পের মুখে। একই সঙ্গে ‘ষড়যন্ত্রের’ কথা বলে প্রেসিডেন্ট ফের এক প্রস্ত তোপ দেগেছেন ডোমোক্র্যাটদের নিশানা করেও।
ট্রাম্পের কথায়, ‘‘ভোটে হেরে যাওয়ার পর থেকেই ভারসাম্য হারিয়েছেন ডোমোক্র্যাটরা। বাস্তবটা যেন কিছুতেই হজম করতে পারছেন না।’’ তাঁর দাবি, সেশন্স আদ্যন্ত সৎ এক জন মানুষ। আজ নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের স্পষ্ট উত্তর হয়তো তিনি দিতে পারছেন না। কিন্তু তাঁর উদ্দেশ্য অসৎ ছিল না বলেই মনে করছেন প্রেসিডেন্ট।
গত বছর জুলাই-সেপ্টেম্বরের ঘটনা। জেফ তখন মার্কিন সেনেটের আর্মড সার্ভিসেস কমিটির সদস্য। আর একযোগে জোরদার প্রচার চালাচ্ছেন ট্রাম্পের হয়ে।
সংবাদমাধ্যমের দাবি, গত জুলাইয়ে রিপাবলিকানদের একটি কনভেনশেন ওয়াশিংটনে রুশ রাষ্ট্রদূত সের্গেই কিসলিয়াকের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়েছিল সেশন্সের। দু’মাসের মাথায় কিসলিয়াক নিজেই আসেন সেশন্সের অফিসে। কথা হয় আমেরিকার ভোট নিয়ে। সম্প্রতি সেই জোড়া সাক্ষাতের তথ্য ফাঁস করে এমনটাই দাবি করছে মার্কিন সংবাদমাধ্যমের একাংশ।
ট্রাম্প শিবির যার মধ্যে আবার অন্য অঙ্কও দেখছে। হোয়াইট হাউসেরই একটি সূত্র আজ দাবি করেন, ‘‘প্রেসিডেন্ট যখন ভিসা, কাজের আউটসোর্সিং, শরণার্থী প্রবেশ, চিকিৎসা বিমা ইত্যাদিতে আমূল বদল এনে আমেরিকাকে ঢেলে সাজতে চাইছেন, খামোখা পুরনো কাসুন্দি ঘেঁটে বাগড়া দিতে চাইছে ডেমোক্র্যাটরা।’’
জেনারেল ফ্লিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল, রাশিয়ার উপর আরোপিত বেশ কয়েকটি বিধিনিষেধ তুলে দেওয়া নিয়েই তিনি কথা বলেছিলেন রুশ রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে। সে বারও কিন্তু মস্কোর তরফে তেমন জোরালো কোনও মন্তব্য মেলেনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy