Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

এ লড়াই যেন তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ: পোপ

যুদ্ধের কথা সেই ছেলেবেলা থেকেই শুনে আসছেন। তাই বোধহয় যুদ্ধের অভিঘাত এত ভাল বোঝেন পোপ ফ্রান্সিস। শনিবার ইতালির উত্তরে রেদিপাগলিয়ায় প্রথম বিশ্বযুদ্ধে নিহত সেনাদের জন্য তৈরি স্মৃতিসৌধে গিয়ে তিনি বলেন, “দুনিয়া জুড়ে লড়াই চলছে। মনে হয় যেন তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের খণ্ডচিত্র।” তাঁর আর্জি, এ বার লড়াইয়ে ক্ষান্ত দিক সব পক্ষই।

পোপের প্রার্থনা। ছবি: রয়টার্স

পোপের প্রার্থনা। ছবি: রয়টার্স

সংবাদ সংস্থা
রেদিপাগলিয়া (ইতালি) শেষ আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০২:৩০
Share: Save:

যুদ্ধের কথা সেই ছেলেবেলা থেকেই শুনে আসছেন। তাই বোধহয় যুদ্ধের অভিঘাত এত ভাল বোঝেন পোপ ফ্রান্সিস। শনিবার ইতালির উত্তরে রেদিপাগলিয়ায় প্রথম বিশ্বযুদ্ধে নিহত সেনাদের জন্য তৈরি স্মৃতিসৌধে গিয়ে তিনি বলেন, “দুনিয়া জুড়ে লড়াই চলছে। মনে হয় যেন তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের খণ্ডচিত্র।” তাঁর আর্জি, এ বার লড়াইয়ে ক্ষান্ত দিক সব পক্ষই।

এ হেন অনুরোধ অবশ্য প্রথম নয়। কখনও গাজায় ইজরায়েলি হানা নিয়ে কখনও আবার ইউক্রেনে রুশপন্থী জঙ্গিদের আগ্রাসন নিয়ে সরব হয়েছেন পোপ। আবার ইরাকে আইএস জঙ্গিদের তাণ্ডব নিয়েও সমালোচনা করেছিলেন তিনি। কিন্তু প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়কার এই সেনা সমাধিক্ষেত্রে গিয়ে যে ভাবে বিহ্বল হয়ে পড়লেন তিনি, তা থেকে স্পষ্ট নিত্য দিনের এই রক্তক্ষয়ে বেশ বিচলিত পোপ। “যুদ্ধ জিনিসটাই পাগলামি” এ দিন এক জনসভায় বলেন ক্যাথলিক ধর্মগুরু। খুব ছেলেবেলায় ঠাকুর্দার কাছে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের কথা শুনেছিলেন তিনি। জেনেছিলেন ঠিক কতটা ভয়াবহ লড়াই লড়তে হয়েছিল ঠাকুর্দাকে। হয়তো প্রাণে বেঁচে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তাঁরই সহকর্মী বহু সেনাকে মরতে হয়েছিল সে লড়াইয়ে। এ হেন প্রায় ১ লক্ষ নিহত সেনার স্মৃতিতে তৈরি সৌধতেই হাজির হয়েছিলেন পোপ। সেখানেই বলেন, “যুদ্ধ অযৌক্তিক। এতে রীতিমতো পরিকল্পনা করে ধ্বংস ডেকে আনা হয়।” পোপের অনুরোধ, এ বার থামা দরকার।

কিন্তু ক্যাথলিক প্রধানের অনুরোধ যে বিশেষ কোনও প্রভাব ফেলতে পারেনি তা এ দিনই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। না হলে আমেরিকার নেতৃত্বে তৈরি জোটের পাল্টা হিসেবে যে ভাবে নিজেদের কৌশল তৈরি করছে আইএস, তা থেকে স্পষ্ট যুদ্ধে ক্ষান্ত দিতে মোটেও ইচ্ছুক নয় তারা। সংবাদ সংস্থা এএফপির দাবি, এ দিন সিরিয়ার আসাদ-বিরোধী বেশ কিছু কট্টরপন্থী ও অপেক্ষাকৃত নরমপন্থী গোষ্ঠীর সঙ্গে অনাক্রমণ চুক্তি করেছে আইএস জঙ্গিরা। উল্লেখ্য, দিনকয়েক আগে এদেরই কোনও কোনও সদস্যকে সৌদি আরবের মাটিতে প্রশিক্ষণ দিয়ে জঙ্গি-বিরোধী লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত করা হবে বলে জানিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। কিন্তু এই চুক্তির পর তার কী হবে, জানা নেই। তবে তা বলে চুপ করে নেই মার্কিন প্রশাসনও। এ দিনও মিশরের প্রেসিডেন্ট আব্দেল ফতাহ অল সিসির সঙ্গে দেখা করতে কায়রো পৌঁছন কেরি। আইএস-বিরোধী লড়াইয়ে মিশরের সেনার ভূমিকা যে বেশ গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে, তা আন্দাজ করেই এই বৈঠকের আয়োজন। পরিস্থিতি দেখে অনেকেরই ধারণা, ওবামা যতই না বলুন, আসলে আইএসের সঙ্গে পুরোদস্তুর যুদ্ধেই যেতে চাইছে আমেরিকা। এ সব তারই তোড়জোড়।

দিনের শেষে অনেকেরই তাই ধারণা, পোপের আবেদনে কোনও পক্ষই মত পাল্টাবে না। ফলে অদূর ভবিষ্যতে রক্তক্ষয় থামার সম্ভাবনা যে খুব কম, তা বেশ স্পষ্ট।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE