Advertisement
০৫ মে ২০২৪
International

ওবামার সফরসঙ্গীদের সঙ্গে অভব্য আচরণ করলেন চিনা কর্তারা

অন্য দেশের প্রেসিডেন্ট দেশে এলে যে ভাবে তাঁকে অভ্যর্থনা জানাতে হয়, সে কথা ভুলে গেলেই বা কী ক্ষতি হয় চিনের? না হয় কণ্ঠরোধই করা হল সংবাদ মাধ্যমের! আরও এক বার। না হয় সাংবাদিক বলে অভব্য আচরণের হাত থেকে রেহাই পেলেন না মহিলারাও!

বেজিং বিমানবন্দরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। শনিবার।

বেজিং বিমানবন্দরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। শনিবার।

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ১৮:১৭
Share: Save:

এত বড় মওকা পেয়ে কখনও সুযোগ হাতছাড়া করতে পারে চিন? তার জন্য শিকেয় উঠলই-বা কূটনেতিক শিষ্টাচার! অন্য দেশের প্রেসিডেন্ট দেশে এলে যে ভাবে তাঁকে অভ্যর্থনা জানাতে হয়, সে কথা ভুলে গেলেই বা কী ক্ষতি হয় চিনের? না হয় কণ্ঠরোধই করা হল সংবাদ মাধ্যমের! আরও এক বার। না হয় সাংবাদিক বলে অভব্য আচরণের হাত থেকে রেহাই পেলেন না মহিলারাও!

‘জি-২০’ জোটের বৈঠকে যোগ দিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা শনিবার হাংঝাউ বিমানবন্দরে নামলে, নিরাপত্তার অজুহাতে যাবতীয় কূটনৈতিক শিষ্টাচারকে শিকেয় তুলতে একটুও ভুল করেনি চিন! বেজিংয়ের যেটা ‘স্বাভাবিক’ মনে হয়েছে, সেটাই অস্বাভাবিক ঠেকেছে বিদেশি অতিথিদের কাছে। আর সে কথা বলতে গেলে চিনের শীর্ষ স্তরের নিরাপত্তা কর্তারা মার্কিন প্রেসিডেন্টের সফর-সঙ্গী অতিথি সাংবাদিক ও হোয়াইট হাউসের আমলাদের দু’-চার কথা শুনিয়ে দিয়েছেন। অতিথি মার্কিন প্রেসিডেন্টের সামনেই, বেজিং বিমানবন্দরে। বোঝানোর চেষ্টা করেছেন, ‘ড্রাগনের দেশে’ এটাই কেতা। মার্কিন প্রেসিডেন্টের সামনেই চিৎকার করে এক মহিলা সাংবাদিককে বেজিংয়ের কর্তারা বলেছেন, ‘‘এটাই চিন। এটাই আমাদের দেশ। আর এটা আমাদের বিমানবন্দর।’’

‘জি-২০’ জোটের বৈঠকে যোগ দিতে বিভিন্ন রাষ্ট্রপ্রধান আসছেন বলে হাংঝাউ বিমানবন্দরের বজ্র আঁটুনি ছিল এমনটাই, যাতে কোনও ‘ফস্কা গেরো’ না থেকে যায়। পুলিশ আর নিরাপত্তা অফিসারদের দিয়ে গোটা বিমানবন্দরটাকে এমন ভাবে ঘিরে ফেলা হয়েছে, যাতে মাছিও গলতে না পারে! কিন্তু সেটা করতে গিয়ে বেজিংয়ের নিরাপত্তা কর্তারা বেমালুম ভুলে গিয়েছিলেন, অতিথি রাষ্ট্রপ্রধান আর তাঁদের সফর-সঙ্গীদের মধ্যে ‘মাছি’ খোঁজাটা কোনও কূটনৈতিক শিষ্টাচারে পড়ে না। তাই মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিমান ‘এয়ারফোর্স-ওয়ান’ হাংঝাউ বিমানবন্দরে নামতেই চিনের নিরাপত্তা কর্তারা প্রায় হামলেই পড়েন বিমানটির ওপর। বিমানের সিঁড়ি দিয়ে নামছিলেন প্রেসিডেন্ট ওবামা। তার বেশ কিছুটা পরে একে একে বিমান থেকে বেরিয়ে আসতে দেখা যায় আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা সুসান রাইস আর হোয়াইট হাউসের মিডিয়া সেলের সাংবাদিক ও কর্তাব্যক্তিদের। সব বিদেশ সফরেই মার্কিন প্রেসিডেন্টের সফর-সঙ্গী হন তাঁরা। আর তাঁদের কাজটা শুরু হয়ে যায় বিমানের দরজা খুলে নামার জন্য প্রেসিডেন্ট সিঁড়িতে পা রাখার সঙ্গে সঙ্গেই। শনিবার সেটাই করতে গিয়েছিলেন প্রেসিডেন্টের সফর-সঙ্গী মার্কিন সাংবাদিকরা। চিনের নিরাপত্তা কর্তারা সেটা দেখে সঙ্গে সঙ্গে কিছুটা ধমকের সুরে তাঁদের বলেন, ‘‘কলম-টলম বন্ধ করুন। এখানে ও সব চলবে না। আপনারা ওঁর (ওবামা) থেকে দূরে চলে যান।’’ তাতে কিছুটা বিব্রত হয়ে হোয়াইট হাউসের এক মহিলা অফিসার বলেন, ‘‘এটা মার্কিন বিমান। আর উনি (সামনে ওবামাকে দেখিয়ে) আমেরিকার প্রেসিডেন্ট।’’

‘‘তো? তাতে হলটা কী?’’, পাল্টা জবাব দেন চিনা নিরাপত্তা কর্তা। তিনি চিৎকার করে বলে ওঠেন, ‘‘এটাই চিন। এটা আমাদের দেশ। এটা আমাদের বিমানবন্দর।’’ তার পর হোয়াইট হাউসের ওই মহিলা অফিসারের কাঁধে ঝোলা হ্যান্ডব্যাগটি নেড়েচেড়ে দেখেন চিনা নিরাপত্তা অফিসার। মার্কিন প্রেসিডেন্টের থেকে তাঁদের দূরত্ব তৈরি করতে ওই চিনা নিরাপত্তা অফিসার একটি নীল দড়ি দিয়ে ‘ব্যারিকেড’ গড়ে তোলেন! সেই সময় মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা রাইসকে কোনও কারণে ইশারায় ডাকেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। রাইস দড়ি তুলে ওবামার কাছে যাওয়ার চেষ্টা করতেই তাঁর পথ আটকান ওই চিনা নিরাপত্তা অফিসার। রাইসের সঙ্গে কিছুটা বচসাও হয় ওই চিনা অফিসারের। তখন মার্কিন সিক্রেট সার্ভিসের কর্তারা এসে ওই চিনা নিরাপত্তা অফিসারকে বোঝাতে থাকেন। তার পর রাইস যেতে পারেন ওবামার কাছে। রাইস পরে সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘এমন ঘটনা ঘটবে, ভাবতেও পারিনি।’’

আরও পড়ুন- ভ্যাটিকান সিটি প্রস্তুত বিশ্বজননীর জন্য, টেরিজার আলোয় উজ্জ্বল কলকাতা

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

US President Obama in China China
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE