সেই নির্মীয়মান প্রকল্প।
এশিয়া, আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপের দেশগুলির মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ককে আরও জোরদার করে তোলার জন্য তাদের পরিকাঠামো উন্নয়নের লক্ষ্যে রবিবার থেকে দু’দিনের যে সম্মেলন শুরু হচ্ছে বেজিংয়ে, সেই ‘ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড’ (ওবর) প্রকল্পটি আদতে কী জিনিস, তা এক ঝলকে দেখে নেওয়া যাক।
‘ওবর’ প্রকল্প কী জিনিস?
মধ্যযুগের সিল্ক রুটের মতো এই প্রকল্পে জুড়ে যাবে এশিয়া, আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপের অনেকগুলি দেশ। শুধুই সড়ক নয়, সমুদ্রপথেও। এই প্রকল্পে উপকৃত হবেন ৪৪০ কোটি মানুষ। এই প্রকল্পে জুড়ে যাবে বহু সড়ক, রেলপথ ও বন্দর। চিনের ওই প্রকল্পে বিনিয়োগ করার কথা ১০ লক্ষ কোটি ডলার। এই প্রকল্পে শুধু বিভিন্ন দেশের পরিকাঠামোরই উন্নতি হবে, তা নয়, তাদের নিজেদের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্কও হয়ে উঠবে অত্যন্ত শক্তিশালী। ভারত আর ভূটানকে বাদ দিলে এশিয়ার প্রায় সবক’টি দেশই এই প্রকল্পে আগ্রহী।
এই প্রকল্পে কার লাভ বেশি? চিন নাকি অন্যান্য দেশের?
পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য এই প্রকল্পের শরিক দেশগুলি যতেষ্টই উপকৃত হবে। ছোট ছোট দেশগুলি খুব সহজে আর দ্রুত পরিকাঠামো উন্নয়নের সুযোগ পেয়ে যাবে। তবে তার জন্য অত্যন্ত চড়া সুদে ওই দেশগুলিকে ঋণ দেবে চিন। ফলে, সেই সব ছোট দেশের তা সাধ্যে কুলোবে কি না, সেই প্রশ্নটাও থেকে যাচ্ছে। ওই ঋণ দেওয়ার ফলে সেই সব দেশে পাকাপাকি ভাবে চিনের কর্তৃত্ব করার জায়গাটা থেকে যাবে। চিনের অর্থনীতি আরও সমৃদ্ধশালী হয়ে উঠবে। তাদের ইস্পাত আর খনিজ পদার্থ বিক্রির জন্য একটা বিশাল আন্তর্জাতিক বাজার পেয়ে যাবে। তবে ওই সব দেশের সঙ্গে গড়ে ওঠা চিনের বাণিজ্যিক সম্পর্ক এশিয়ায় তার সঙ্গে টক্কর দেওয়ার মতো দেশগুলিকে একটি হতাশ করবে।
প্রকল্পটি কি শুধুই অর্থনীতি আর বাণিজ্যের লক্ষ্যে?
না। চিনের যে কোনও অর্থনৈতিক কর্মসূচির মধ্যেই লুকিয়ে থাকে তার সামরিক পরিকল্পনা। তাই ওবর-এর আওতায় পড়া দেশগুলিতে আগামী দিনে চিনের সামরিক উপস্থিতির কিছু না কিছু প্রমাণ অচিরেই মিলবে বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা। যে ছোট দেশগুলি চিনা ঋণ শুধতে পারবে না, সেই দেশগুলিতে চিনা সেনাবাহিনীর দাপাদাপি বাড়ারও আশঙ্কা রয়েছে।
ভারত কেন এই প্রকল্পের শরিক হচ্ছে না?
এই ওবর প্রকল্পের অন্যতম চিনের জিনজিয়াং প্রদেশ থেকে পাকিস্তানের বালুচিস্তান প্রদেশের বন্দর শহর গ্বাদর পর্যন্ত নির্মীয়মান একটি মহাসড়ক। ৩ হাজার কিলোমিটার লম্বা ওই সড়কটি যাবে গিলগিট-বালতিস্তানের মধ্যে দিয়ে। যা পাক-অধিকৃত কাশ্মীরে পড়ে। এই এলাকায় চিন ঢুকে পড়লে ভারতের সার্বভৌমত্ব ক্ষুণ্ণ হতে পারে বলে দিল্লির আশঙ্কা। সম্মেলেনে যোগ না দেওয়ার কারণ হিসেবে সরকারি ভাবে ভারতের তরফে এই কারণটাই দেখানো হয়েছে।
আরও পড়ুন- চিনের রোড সামিটে সম্ভবত যাচ্ছে না ভারত, মত বদলে যাচ্ছে আমেরিকা
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy