প্রশ্ন: আপনি এ দিন হঠাৎ সংবাদসংস্থাকে দেওয়া ইন্টারভিউয়ে ভারতীয় ক্রিকেটজগৎকে অবাক করে দিয়েছেন!
মনোহর: কেন বাবা? আমি তো সাতে থাকি না পাঁচে থাকি না। কাউকে নিজে থেকে ফোন পর্যন্ত করি না। আমি অবাক করলাম কী ভাবে?
প্র: এই যে আপনি হঠাৎ বললেন, অন্য জোন থেকে প্রেসিডেন্ট হওয়া যাবে, নিজের অঞ্চলের টার্ম না থাকলেও, এই নিয়মটা জেটলির কথা ভেবেই চালু করা হয়েছিল।
মনোহর: খুব সত্যি কথা। তাই হয়েছিল তো।
প্র: তার মানে তো এটাই দাঁড়াল যে আপনার কথা ভেবে যখন অতীতে এত ঝামেলা করেছি তা হলে আজ হে জেটলি, আপনার রাজি হয়ে যাওয়া উচিত।
মনোহর: সেটা মনে হলে কিছু করার নেই। আমরা তো সত্যিই চাই জেটলি বোর্ড প্রধান হতে রাজি হোন।
প্র: অসম্ভব। ওঁর এখন যা ব্যস্ততা। ক্রিকেট দেখার সময় কোথায়?
মনোহর: একেবারেই অসম্ভব নয়। কী এমন সময় দিতে হবে ওঁকে? প্রতি চার মাসে একটা করে ওয়ার্কিং কমিটি মিটিং। পারবেন না উনি? বাকি কাজ তো টিমই দেখবে। তা ছাড়া শ্রীনি তো গত আট মাসে একটাও ওয়ার্কিং কমিটির মিটিং ডাকেনি। গোল্লায় পাঠিয়ে দিয়েছে ও ভারতীয় ক্রিকেট প্রশাসনকে। আজ রাস্তায় নেমে দেখুন সাধারণ পথচারীকে জিজ্ঞেস করুন। দেখবেন সে আপনার সামনে ছ্যা ছ্যা করবে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডকে। কোনও বিশ্বাসযোগ্যতাই নেই আমাদের দেশের ক্রিকেট প্রশাসনের।
প্র: সে তো ললিত মোদীরও ক্রীড়া প্রশাসক হিসেবে স্বচ্ছ ভাবমূর্তি নেই। অথচ আপনাদের শিবিরের উনি তো একজন চাঁই।
মনোহর: একদম বাজে কথা। কে বলেছে আপনাকে? শুনে রাখুন, ললিতের সঙ্গে আমি নেই। ওর যা ট্র্যাক রেকর্ড, থাকার কোনও কারণও দেখি না। আমি চাই না বোর্ডে ললিত ফিরে আসুক। বোর্ডে যখন ওর রমরমায় বাকিরা কাঁপত তখন আমিই ওর বিরুদ্ধে প্রথম ব্যবস্থা নিই। আমিই ওকে প্রথম সাসপেন্ড করি। সুতরাং আজ ওর সঙ্গে হাঁটার কোনও প্রশ্ন নেই।
প্র: জেটলি কাজের চাপে দায়িত্ব নিতে রাজি না হলে আপনার বিকল্প পছন্দ কে?
মনোহর: মিস্টার পওয়ার আছেন। ডালমিয়া আছেন।
প্র: রাজীব শুক্ল-র নাম খুব শোনা যাচ্ছে।
মনোহর: কে? রাজীব শুক্ল?
প্র: হ্যাঁ ।
মনোহর: এখনও ভাবিনি। মিস্টার জেটলি না করবেন, আগে আমরা ধরে নিচ্ছি কেন?
প্র: কারণ উনি রাজি হলেও নরেন্দ্র মোদী রাজি হবেন না বলে!
মনোহর: তা হলে মিস্টার মোদীর সঙ্গে আমাদের টিম গিয়ে কথা বলবে। ওঁকে বোঝাতে হবে যে ক্রিকেটের অস্তিত্ব মুছে যাচ্ছে আমাদের দেশে। এই সঙ্কটের মধ্যে ওঁর সামান্য সময় আর পরিচালনাটা দরকার।
প্র: আপনি নিজে কেন জেটলিকে ফোন করছেন না?
মনোহর: না, আমি কাউকে নিজে থেকে ফোন করব না। করি না কোনও দিন। কেউ আমাকে করলে আন্তরিক ভাবে কথা বলি।
প্র: আপনি ঘনিষ্ঠমহলে বলেছেন, জেটলির কথা ভেবে বোর্ডের সংবিধান বদলানোর সময় ডালমিয়ার সঙ্গে আপনার বিস্তর কথা কাটাকাটি হয়েছিল।
মনোহর: হয়েছিল তো। মাত্র দু’ঘণ্টার জন্য সে দিন আমি নাগপুর থেকে চেন্নাই গিয়েছিলাম। ডালমিয়াকে অনেক বোঝাতে হয়েছিল যে বোর্ড এখন যে অবস্থার মধ্যে যাচ্ছে তাতে ইনকাম ট্যাক্স নিয়ে একটা বড় সমস্যা। সরকার অধিগ্রহণ করা নিয়ে চাপ। আইসিসি-তে আধিপত্য বজায় রাখা নিয়ে চাপ। এই পরিস্থিতিতে আপনি বলছেন, পূর্বাঞ্চল থেকেই টার্ম মেনে প্রেসিডেন্ট করতে হবে। তা হলে আমাদের হাতে প্রার্থী থাকেন চার জন। কমল কাজারিয়া, চিত্রক মিত্র, গৌতম রায় আর গৌতম দাশগুপ্ত। আপনার কি মনে হয় এই পরিস্থিতিতে যা চাপ, তা এদের কেউ সামলাতে পারবে? আপনার হেভিওয়েট কাউকে চাই। জেটলির কথা ভাবুন। নিয়মটা বদলান। তার পর ডালমিয়া রাজি হন। তখন ভাবিনি যে, নিয়ম বদলের সুযোগটা শ্রীনি নিজেই নিতে চেষ্টা করবে।
প্র: আপনার ভেতর থেকে কী মনে হয়? জেটলিকে দায়িত্ব নিতে রাজি করিয়ে শ্রীনি পতন ঘটানো যাবে?
মনোহর: বলতে পারব না। তবে অফারটা জেটলির কাছে লোভনীয় হওয়া উচিত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy