কলকাতা লিগে রবিবারের ডার্বি ম্যাচের আগে ফুটবলারদের মনোবল চাঙ্গা করতে আসরে নেমে পড়লেন ইস্টবেঙ্গল কর্তারা। কালীঘাট মিলন সঙ্ঘের বিরুদ্ধে ড্রয়ের পর চব্বিশ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই বুধবার বিকেলে ক্লাবে হাজির লাল-হলুদ প্রেসিডেন্ট প্রণব দাশগুপ্ত। সচিবের সঙ্গে আলোচনার পর ঠিক হয় ডার্বি জিতলেই ফুটবলারদের বিশেষ আর্থিক পুরস্কার দেওয়া হবে ক্লাবের তরফে। যা সাম্প্রতিক অতীতে ডার্বি ম্যাচের আগে দেখা যায়নি ইস্টবেঙ্গলে।
বড় ম্যাচে দু’পয়েন্ট পিছিয়ে নামতে চলা ইস্টবেঙ্গল শিবির এই মুহূর্তে মাঠে এবং মাঠের বাইরেদু’জায়গাতেই ছন্দে নেই। কিন্তু সে সব চিন্তা দূরে সরিয়ে ডার্বি জয়কেই পাখির চোখ করছেন লাল-হলুদ কর্তারা। এ দিন বিকেলে আইএসএলের জন্য লোন প্লেয়ারদের চুক্তিপত্র আনুষ্ঠানিক ভাবে স্বাক্ষরের জন্য ক্লাবে এসেছিলেন ফুটবলাররা। এর পরেই মেহতাব, রাজু, বলজিৎদের মতো সিনিয়র ফুটবলারদের নিয়ে বসেন দলের সদ্য নিযুক্ত টেকনিক্যাল ম্যানেজার অ্যালভিটো ডি’কুনহা। ক্লাবের বাতানুকুল কাফেটেরিয়ায় প্লেয়ারদের নিয়ে দীর্ঘক্ষণ বৈঠক করেন অ্যালভিটো। ফুটবলারদের উদ্দীপ্ত করতে তিনি বলেন, “দু’একটা ম্যাচ খারাপ খেলা মানেই আমাদের ক্লাসটা চলে গিয়েছে তা নয়। বড় ম্যাচে ফর্ম আর ক্লাস দু’টোরই শীর্ষে পৌঁছতে হবে আমাদের। যেটা অসম্ভবও নয়।”
ফুটবলারদের নিয়ে অ্যালভিটোর বৈঠক চলাকালীনই তাঁবুতে চলে আসেন ক্লাব প্রেসিডেন্ট প্রণব দাশগুপ্ত। ক্লাবের অন্যতম শীর্ষকর্তা সারদা কাণ্ডে গ্রেফতার হওয়ার পর এ দিনই প্রথম ক্লাবে এলেন লাল-হলুদ প্রেসিডেন্ট। এর পরেই বৈঠকে ডেকে নেওয়া হয় অ্যালভিটোকে। সেখানেই ওঠে বড় ম্যাচে ফুটবলারদের চাঙ্গা করার জন্য আর্থিক পুরস্কার প্রদানের ফর্মুলা। প্রথমে ঠিক হয় পঞ্চাশ হাজার টাকা ম্যাচ জিতলে গোটা দলের মধ্যে ভাগ করে দেওয়ার ব্যাপারে। পরে প্রেসিডেন্ট এবং কার্যকরী সমিতির সদস্যদের মধ্যে আলোচনার পর আর্থিক পুরস্কারের অঙ্ক বাড়ানো হয়। ক্লাব সূত্রে খবর, সেটা প্রায় লাখখানেক টাকা। বৃহস্পতিবার অনুশীলনে এ ব্যাপারে অনুমতি চাওয়া হবে কোচের কাছে।
যদিও ক্লাব ছাড়ার সময় প্রেসিডেন্ট প্রণববাবু এ ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। শুধু বলে যান, “ডার্বি ম্যাচের আগের দিন ক্লাবে আসব। সেদিন ফুটবলারদের সঙ্গে বসার কথা।” ক্লাব প্রেসিডেন্ট কি সে দিনই ফুটবলারদের ভোকাল টনিক দেওয়ার সময় এই আর্থিক পুরস্কার ঘোষণা করবেন? এ ব্যাপারে ক্লাবের কোনও কর্তাই কিছু বলতে চাননি। তবে ক্লাব সচিব কল্যাণ মজুমদার বলেন, “ফুটবলারদের মোটিভেশন বাড়ায় ভিটামিন এম। সেই ভিটামিনে কোনও কমতি রাখছে না ক্লাব।” সঙ্গে যোগ করেন, “ফুটবলার থেকে কর্তা সকলেই জানে এই ডার্বি জিতলেই আপাতত সব সমালোচনা থামিয়ে দেওয়া যাবে। আর কলকাতা ফুটবলের আকর্ষণ মানেই তো এই একটাই ম্যাচ। সেটা ফুটবলারদের বলে দেওয়া হয়েছে।”
এ দিকে সমাজের বিভিন্ন পেশার বিশিষ্ট নাগরিকদের ডার্বি ম্যাচে দেখতে আহ্বান জানাচ্ছেন লাল-হলুদ কর্তারা। ক্লাবের কর্মসমিতির সদস্য ঋত্বিক দাসের কথায়, “ফুটবলকে সমাজের সর্বোচ্চ স্তরে প্রসারের জন্য আপাতত লা মার্টিনিয়ার ফর বয়েজ স্কুলের অধ্যক্ষ সুনির্মল চক্রবর্তী এবং ব্রিটিশ কাউন্সিলের ডিরেক্টর সুজাতা সেনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। আশা করছি আরও কয়েক জন বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব সে দিন মাঠে খেলা দেখতে হাজির থাকবেন।
এ দিকে, এ দিনই ডার্বির আগে শৃঙ্গে উড়ল লাল-হলুদ নিশান। সমুদ্র-পৃষ্ঠ থেকে ৫,৯৩৬ মিটার উঁচু হনুমানটিব্বা শৃঙ্গে এ দিনই পা রাখেন তিন পর্বতারোহী অমিয় বর্মন, রবিদাস মণ্ডল এবং সন্দীপ ব্যাস। তিনজনই ইস্টবেঙ্গল সমর্থক। হনুমানটিব্বা শৃঙ্গে লাল-হলুদ পতাকা ওড়ান তাঁরা।
পাশাপাশি, এএফসি কাপে এ বারও প্রতিনিধিত্ব করবে ইস্টবেঙ্গল। বৃহস্পতিবার সে ব্যাপারে কাগজপত্র খতিয়ে দেখতে ক্লাবে আসবেন আই লিগের সিইও সুনন্দ ধর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy