নারিন নেই তো কী, জোড়া ফলা আছে। চাওলা ৪-০-১৬-১। হগ ৪-০-১৭-২। সোমবার ইডেনে। ছবি: উৎপল সরকার ও শঙ্কর নাগ দাস।
রাত-বিরেতে গৌতম গম্ভীর আবার কোথায় চললেন? পিচের দিকে নাকি?
ঠিক। কেকেআর অধিনায়ক যাচ্ছেন ইডেন কিউরেটর প্রবীর মুখোপাধ্যায়ের দিকে।
সানরাইজার্স বধ ততক্ষণে সম্পন্ন। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান চলছে। আচমকাই কেকেআর অধিনায়ককে দেখা গেল, ইডেন কিউরেটরের সঙ্গে দাঁড়িয়ে। কিছু একটা বলছেন। পরে শোনা গেল, কেকেআর অধিনায়ক নাকি বলে গিয়েছেন যে পিচের চরিত্রে তিনি খুশি। চান, পরের ম্যাচগুলোতেও পিচ-চরিত্র ঠিক এ রকমই থাকুক।
ইডেনে আর দুটো ম্যাচ বাকি নাইটদের। তার পর মুম্বইয়ে দুটো অ্যাওয়ে ম্যাচে নেমে পড়তে হবে। মনে করা হচ্ছে, গ্রুপ টেবলের যা পরিস্থিতি তাতে প্লে-অফ মোটামুটি নিশ্চিত করে ফেলতে অন্তত ষোলো-সতেরো পয়েন্টে শেষ করা দরকার। যে কারণে ঠিক ততটাই দরকার ঘরের মাঠে পরের দুটো ম্যাচ সোমবারের মতো একাধিপত্য রেখে জেতা। যার জন্য মনে করা হচ্ছে ওয়ার্নার-বধের পিচটাই নাকি আদর্শ। যেখানে স্পিনের বজ্রআঁটুনিতে সংহার করা যাবে প্রতিপক্ষকে। এমনিতে ঘরের মাঠ ইডেনে কেকেআরের পরের দুই প্রতিপক্ষ দিল্লি এবং পঞ্জাব। দুটো টিমই এ বার আহামরি তেমন খেলছে না। আর দুটো টিমকেই কেকেআর তাদের ঘরের মাঠে উড়িয়ে এসেছে।
মনের মতো পিচ পেয়েই হোক বা টুর্নামেন্টে প্রত্যাবর্তনে, নাইট সংসার রাতের দিকে বেশ ফুরফুরে দেখাল। উমেশ যাদব যেমন। ম্যাচ শেষ, তবু কথা শেষ হচ্ছে না। বলে চলেছেন, ‘‘ওয়ার্নারের উইকেটটা আজ আমাকে সবচেয়ে তৃপ্তি দিয়েছে। ওটা আমার কাছে সবচেয়ে দামি। ওয়ার্নারকে না ফেরাতে পারলে ও ম্যাচ নিয়ে চলে যেত।’’ ক্যাপ্টেন গম্ভীরও আজ গম্ভীর নন। ঠোঁটে তো একবার চিলতে হাসিও দেখা গেল! বলেও দিলেন, ‘‘টিমটা একেবারে পেশাদার ভাবে খেলছে। ১৬৫ এখানে যথেষ্ট। তবে রাসেল থাকলে ওটা একশো নব্বই হয়।’’ মণীশ পাণ্ডে— এত দিন রানের বাইরে ছিলেন। এ দিন রানে ফিরলেন। বলছিলেন, ‘‘বাজে রান আউটটা হয়ে গেলাম। ভাল লাগছিল ব্যাটে আজ। যাক গে, ইউসুফ কী খেলল দেখলেন!’’
খুব সহজে, সুখের কেকেআর। স্বস্তির কেকেআর। একটাই যা অস্বস্তি। সুনীল নারিন কবে ফিরবেন, এখনও তো কেউ জানে না!
দ্বিতীয় বার অ্যাকশন পরীক্ষার পর কয়েকটা ম্যাচ চলে গেল, নারিনের রিপোর্ট এখনও এল না। বোর্ড কর্তাদের কেউ কেউ বললেন, নারিনের রিপোর্ট যদি আইপিএল চলাকালীন না আসে, তা হলেও নাকি অবাক হওয়ার কিছু নেই। বোর্ড নাকি নিজেদের ভুলের ‘প্রায়শ্চিত্ত’ করছে। বিতর্ক বা বিপদ আর বাড়াতে চাইছে না। একবার ক্লিনচিট দেওয়ার পর নারিন নিয়ে আবার রিপোর্ট জমা পড়ায় এমনিতেই অস্বস্তিতে পড়েছিল বোর্ড। পরের রিপোর্টে আবার বলা হয়েছে, নারিন অফস্পিন বাদে বাকি সব করতে পারবেন। শেষ পর্যন্ত ক্যারিবিয়ান মারণাস্ত্র অফস্পিনের পরীক্ষা দেওয়ার পর বোর্ডের নাকি এখন মনে হচ্ছে, সেটা বাস্তবে সম্ভব নয়। মানে, থিওরিতে অফস্পিন বাদ দিয়ে এক জন অফস্পিনারের বাকি সব ডেলিভারি করা সম্ভব। কিন্তু প্র্যাকটিক্যালি নয়! তাই বলা যাচ্ছে না নারিনের রিপোর্ট কবে আসবে। ম্যাচের আগে ওয়ার্ম আপেই একমাত্র যা এখন দেখা যায় তাঁকে। বল-টল করেন কিছুক্ষণ, তার পর চলে যান ড্রেসিংরুমে।
আনন্দের কেকেআরে সুনীল নারিনই এখন দুঃখের একমাত্র প্রতিচ্ছবি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy