ভারতের সামনে যেমন জেতার সুযোগ থাকতে পারে, তেমনই ইংল্যান্ডের সামনেও। আর সেটাই তো যুযুধান দু’দলের মধ্যে হওয়া কোনও টেস্ট ম্যাচের সবচেয়ে রসালো সম্ভাবনা। কেউ কাউকে এগিয়ে যাওয়ার সামান্যতম সুযোগ দেবে না। জীবনের মতোই এখানেও কোনও কিছুই নিশ্চিত নয়। যদিও সামান্য হলেও ভারতের এগিয়ে থাকার দিকেই লিখে রাখছি।
বিজয়ের মনুমেন্ট সদৃশ সুউচ্চ ইনিংসও তিন অঙ্কের মুখ দেখতে না পাওয়ার দুঃখ কেউ অনুভব করতেই পারেন। তবে সেঞ্চুরিটা পেলে সেটা ওর জন্য ভারতীয় ড্রেসিংরুমে একটা পরিসংখ্যানগত সংযোজনই হয়ে থাকত কেবল। কেননা, শুধু ইনিংসটা খেলেই বিশ্ব ক্রিকেটে বিজয় যেখানে ছিল তার থেকে বেশ কয়েকটা ফ্লোর উপরে উঠে যেতে পেরেছে। আগে ওর ব্যাটিংয়ে যে দেখনদারি ব্যাপারটা ছিল সেটা ছেঁটে ফেলে যথার্থ কারণেই এখন উইকেট কামড়ে পড়ে থাকছে।
ধোনিও একই রকম ভাবে উইকেট কামড়ে পড়ে থাকার চেষ্টা করেছে কিন্তু ব্যর্থ হয়েছে। ইংল্যান্ড ওকে অফস্টাম্পের বাইরে টোপ খাওয়ানোর পরিকল্পনা এঁটেছিল এবং ধোনি সেই বাজিকে যথাসাধ্য অপেক্ষা করিয়েছে। কিন্তু ও যেমন কিছু মিনিট সঞ্চয় করেছে, তেমনই কিছু রানও খুইয়েছে। ক্রিজে চুপচাপ পড়ে থাকা ধোনি না নিজের জন্য ভাল, না ওর দলের পক্ষে ভাল। ব্যাটসম্যান ধোনিকে তখনই সেরা দেখায়, যখন ও হয় বিপক্ষ বোলিংকে পেটায় কিংবা প্রায় প্রতি ডেলিভারিতে খুচরো রান নিয়ে স্ট্রাইক রোটেট করে। ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে বোলারকে তার লাইন অব অ্যাটাক পাল্টাতে বাধ্য করাটাই ধোনির ব্যাটিংয়ের কায়দা। এত বছর পরে ব্যাটিংয়ের নিখুঁত টেকনিককে তাড়া করতে যাওয়াটা ওর বিপক্ষেই যাবে। তা সে ধোনি যতই ছয় নম্বরে স্পেশ্যালিস্ট ব্যাটসম্যানের ভূমিকায় নামুক না কেন!
জাডেজা ব্যাপারটা সেরা উপায়ে সামলেছে। ও-ও সত্যি বলতে কী, আউটগোয়িং ডেলিভারিগুলো নিয়ে চিন্তিত ছিল। কিন্তু এই ইনিংসে ও করল কী, ক্রিজের বাইরে বেরিয়ে এসে বলগুলো ফুল লেংথ বানিয়ে খেলেছে। ওর কিছু পুশ ফিল্ডারদের চিরে বেরিয়ে গিয়েছে। কিছু পুল লাভজনক হয়েছে। আর একটা উঁচু করে মারা ঝলমলে শট স্টুয়ার্ট ব্রডের চোখ ধাঁধিয়ে দিয়েছিল।
স্টুয়ার্ট বিনি নিজের শটে নিজেকেই আহত করে ফেলেছিল! তবে একজন তরুণ ক্রিকেটারকে অতি সমালোচনা করাটা ঠিক নয়। বিশেষ করে সেই তরুণের, যে মাত্র এক সপ্তাহ আগেই দেশকে একটা টেস্ট ম্যাচে বাঁচিয়েছে। তবে যে একবার একটা ভাল কাজ করে, তার কাছ থেকে সবাই দ্বিতীয় বার সেটা প্রত্যাশা করে। উল্টে এখন বোলার বিনি যতক্ষণ না কিছু করে দেখাতে পারছে, ওর হয়তো তৃতীয় টেস্টে প্রথম এগারোয় জায়গা অনিশ্চিত থেকে যাবে!
লর্ডস পিচকে এখনও ব্যাটসম্যানদের তুলনায় বেশি বোলার সহায়ক দেখাচ্ছে। নার্সারি প্রান্তে যেমন বেশি বাউন্স আছে, তেমনই বাউন্সের তারতম্যও ঘটছে এবং আমি আশা করছি ইশান্ত, জাডেজা, যারা বলটা উইকেটে ঠুকে ডেলিভারিটা করে তারে ওই দিক থেকে যথেষ্ট কার্যকর হয়ে উঠবে। যদি ইংল্যান্ড হারে তা হলে পরের দিনের বিলেতের প্রভাতী সংবাদপত্রগুলো হাতে নিজে বেশ মজাই লাগবে!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy