আর্মান্দো কোলাসোকে তাড়ানোর এক সপ্তাহ আগেই ইস্টবেঙ্গল কোচের দৌড়ে ভেসে উঠেছিলেন তিনি। পরের মরসুমে লাল-হলুদের নতুন কোচ কে হবেন, সেটা এখনও চূড়ান্ত না হলেও, এ বার মরসুম শেষ হওয়ার সেই এক সপ্তাহ আগেই এলকো সতৌরির বিসর্জন-ঘণ্টা বেজে গেল লাল-হলুদে। তাও কি না আই লিগের দু’টো ম্যাচ বাকি থাকতেই।
ডাচ কোচের বেশ কিছু বেফাঁস মন্তব্যের জেরে এমনিতেই অস্বস্তি বাড়ছিল ইস্টবেঙ্গলের অন্দরে। শুক্রবার রয়্যাল ওয়াহিংডো ম্যাচের আটচল্লিশ ঘণ্টা আগে ফের বিতর্কিত মন্তব্য করলেন এলকো। লাল-হলুদ কোচের ব্যর্থতার অজুহাত, ‘‘আমাকে টিমের কন্ডিশনের ব্যাপারে অন্ধকারে রেখে কোচ করা হয়েছিল। মাত্র চার দিনের কথাবার্তায় চুক্তি করেছি। তাও তৃতীয় ব্যক্তির মাধ্যমে। আমি ভেবেছিলাম ইস্টবেঙ্গল অনেক বেশি পেশাদার। কিন্তু এখানে এসে দেখলাম সিস্টেমেই গোলমাল!’’
যা শুনে লাল-হলুদের অন্যাতম শীর্ষকর্তা দেবব্রত সরকার বলছেন, ‘‘আমাদের পেশাদারিত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলার আগে নিজের দিকে তাকানো উচিত এলকোর। এক জন পেশাদার কোচ হয়ে কোনও খোঁজ খবর না নিয়েই তিনি ইস্টবেঙ্গল কোচ হওয়ার জন্য রাজি হয়ে গেলেন? এখন ইন্টারনেটের যুগ। সংবাদমাধ্যম এত সক্রিয়। সেখানে উনি বলছেন, ক্লাবের সম্পর্কে কিছু জানা ছিল না? এই ‘পেশাদার’ কোচ পরের মরসুমে যেখানেই যান, শুভেচ্ছা থাকল।’’
এলকো ‘জানতাম না’ বলে যে ক্লাবের পেশাদারিত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন, সেই ইস্টবেঙ্গল এএফসি ক্লাব র্যাঙ্কিংয়ে ৪১ নম্বরে (ভারতীয় ক্লাবের মধ্যে শীর্ষে থাকা ডেম্পোর পরেই)। এলকোর যুক্তি, ‘‘ইস্টবেঙ্গল বড় ক্লাব তো সব কিছুই সেখানে তৈরি থাকা উচিত। আমাকে এত বড় একটা টিম দেওয়া হল, ঠিক ভাবে ট্রেনিং করাতে পারলাম না। ফিটনেস সমস্যায় পুরো সময়টা ভুগলাম। কর্তাদেরও যে সমস্যার কথা জানাব, তার উপায় নেই। বারো সপ্তাহে এক বার মিটিং করেছেন কর্তারা।’’
নিজের ব্যর্থতার দায় ফুটবলারদের ঘাড়েও চাপালেন এলকো। তাঁর দাবি, ‘‘ম্যাচের আগে এক স্ট্র্যাটেজি তৈরি করেছি, মাঠে ফুটবলাররা খেলেছে অন্য ভাবে। একটু চাপে পড়লেই নিজেদের লং বল থিওরিতে ফিরে গিয়েছে গোটা দল। টিমে কোনও প্রকৃত লিডার নেই। মিলান সুসাক ছিল। সে-ও চলে গেল।’’
তবে এলকোর বিরুদ্ধেও ক্লাবের অন্দরমহলে প্রশ্ন উঠছে। দেবব্রতবাবু বললেন, ‘‘প্রথম দিন প্র্যাকটিসে এসেই ক্লাবের মাঠ উপযুক্ত নয় বলে দিলেন উনি। আমি ছিলাম না। কিন্তু উনি তো অন্য কর্তাদের সমস্যাটা জানাতে পারতেন। আমরা ফুটবলের বিষয়ে কোচকে পূর্ণ স্বাধীনতা দিই। এলকোর দরকার পড়লে মিটিং হতেই পারত। সেটা তো কখনও জানাননি।’’
সব মিলিয়ে লাল-হলুদের অন্দরে এখন স্লোগান— এই যদি ‘পেশাদার’ কোচ হয়, তা হলে তার ‘অপেশাদার’ ইস্টবেঙ্গলে না থাকাই উচিত!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy