আক্ষরিক আগুনে মেজাজ। ছবি: এএফপি
এক দিকে ছয় বিশ্বজয়ী ফুটবলারের শিল্প। আর এক দিকে গ্যালারিতে তাণ্ডব। মিউনিখ থেকে রোম বুধবার রাতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে মারণ গ্রুপের ছবিটা বদলে গিয়েছে এ ভাবেই।
এলিয়াঞ্জ এরিনায় লড়াইটা ছিল বায়ার্ন মিউনিখ-ম্যাঞ্চেস্টার সিটির। তবে গত বারের ছবি পুরো পাল্টে গেল। শেষ মিনিটের গোলে ম্যাঞ্চেস্টার সিটিকে খালি হাতেই ফিরতে হল জার্মানি থেকে। কাটা ঘায়ে নুনের ছিটে ফেলার মতোই আবার গোল করলেন জেরোম বোয়াতেং। যিনি একটা সময় ম্যান সিটিকে ইংল্যান্ডের সেরা দলগুলোর মধ্যে একটা হয়ে উঠতে সাহায্য করেছিলেন।
মাঠের এগারো জন বায়ার্ন ফুটবলার ছাড়াও গ্যালারির বিরুদ্ধেও খেলতে হল ম্যান সিটি-র ফুটবলারদের। পুরো ম্যাচ জুড়েই টিটকিরি শুনতে হল ম্যান সিটি ফুটবলারদের। গত বারের ঘরের মাঠে হারের জ্বালাটা যে বায়ার্ন সমর্থকদের জুড়োয়নি, তা বোঝা যাচ্ছিল প্রতিটা মুহূর্তে।
তবে এ দিনের জৌলুুসহীন খেলায় গোলের কোনও চিহ্ন দেখা যাচ্ছিল না। লেওয়ানডস্কি-মুলাররা সুযোগের পর সুযোগ তৈরি করলেও, তাঁদের পথে কাঁটা হয়ে দাঁড়ান ম্যান সিটি গোলরক্ষক জো হার্ট। যাঁর অসামান্য অনুমানক্ষমতায় খেলা প্রায় ড্র হয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু তীরে এসে তরী ডোবার মতোই ম্যাচের নব্বই মিনিটে বোয়াতেংয়ের গোল ছিনিয়ে নিল তিন পয়েন্ট।
গোল করে নিজের প্রাক্তন ক্লাবের সামনেই বোয়াতেং সেলিব্রেট করতে পিছপা হননি। পরে জানিয়েও দিলেন, তাঁর প্রাক্তন ক্লাবের উপর সহানুভূতি থাকলেও, বায়ার্নকে জেতাতে পেরে তিনি তৃপ্ত। “আমি খুব খুশি গোল করতে পেরে। শট মারার জন্য বলটা ঠিক জায়গায় ছিল। ম্যাঞ্চেস্টার সিটি ভাল দল হলেও আমরাই যোগ্য দল হিসাবে জিতলাম,” বলেছেন বোয়াতেং।
দলের অধিনায়ক ও সদ্য বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়া ফিলিপ লামও জানিয়ে দিলেন, প্রথম বড় পরীক্ষায় একশো শতাংশ সফল তাঁর দল। “জয় দিয়েই প্রথম ম্যাচ শুরু করতে চেয়েছিলাম। সেটা করতে পেরে ভাগ্যবান মনে হচ্ছে।” ম্যাচ চলাকালীন ফুটবলারদের উপরে মাঝে মাঝে মেজাজ হারালেও, কোচ পেপ গুয়ার্দিওলাও দিনের শেষে সন্তুষ্ট কোচ ছিলেন। বলছিলেন, “খুব কঠিন গ্রুপ আমাদের। আমি খুব খুশি। সব দিক থেকেই আমরা ভাল খেলেছি আজ। যোগ্য দল হিসাবেই জিতেছি। শুরুর দিকে সমস্যা হচ্ছিল মাঝমাঠে। পরের দিকে সেটা শুধরে নিল দল।”
এক দিকে যখন বায়ার্ন ‘বদলা’ নিচ্ছে, গ্রুপের আর এক ম্যাচে মাঠ হয়ে উঠল রণক্ষেত্র। ঘটনার প্রেক্ষাপট ইতালির অলিম্পিক স্টেডিয়াম। যেখানে রোমা বনাম সিএসকে মস্কো ম্যাচ শিরোনামে উঠে এল রাশিয়ান সমর্থকদের ঝামেলার জন্য। ঘটনাটা কী? প্রথমার্ধের ৩১ মিনিটের মধ্যেই ৪-০ এগিয়ে যায় রোমা। দলের খেলা দেখে সিএসএকে সমর্থকেরা এতটাই খেপে যায় যে তাণ্ডব শুরু করে গ্যালারিতে। প্রথম থেকেই গ্যালারিতে উত্তেজনা ছড়াচ্ছিল। দ্বিতীয়ার্ধে যখন রোমার জোড়া গোলদাতা জার্ভিনহোকে তুলে নেওয়া হয়, তখন ঘরের সমর্থকদের দিকে মশাল ছোড়া হয়। গ্যালারিতে জায়গায় জায়গায় আগুন দিয়ে ব্যানার পোড়ানো হয়। পুলিশ বাধা দিতে যাওয়ায় হাতাহাতি শুরু হয়ে যায়। রোমা সমর্থকদের দিকে যাতে এগোতে না পারে সিএসকে জঙ্গি বাহিনী, সেটা নিশ্চিত করতে ব্যারিকেড করে দেওয়া হয়। বাধ্য হয়ে দু’মিনিটের জন্য খেলা বন্ধ করতে হয় রেফারিকে।
এত ঝামেলার মধ্যেও ম্যাচ ৫-১ জিতে মারণ গ্রুপের শীর্ষে আপাতত রোমা-ই। স্বভাবতই উচ্ছ্বসিত কোচ রুডি গার্সিয়া বলেন, “আরও বেশি গোলে জিততে পারতাম আমরা। খুব ভাল খেলেছে দল।”
মেসিদের জয়
নিজস্ব প্রতিবেদন
রিয়াল মাদ্রিদের মতো তাদের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীও জয় দিয়েই শুরু করল। কাম্প ন্যুতে এপোয়েল নাইকোসিয়াকে ১-০ হারাল বার্সেলোনা। মেসি নিজে গোল করতে না পারলেও, তাঁর ফ্রি-কিক থেকেই ম্যাচের একমাত্র গোল করেন জেরার পিকে। ম্যাচ শেষে কোচ লুই এনরিকে বলেন, “আমরা ভাল খেলতে পারিনি। আরও উন্নতি করতে হবে পরের ম্যাচগুলোয়।”
পাশাপাশি দিয়েগো কোস্তাকে প্রথম দলে না রেখে ম্যাচ জিততে পারল না হোসে মোরিনহোর চেলসি। জার্মান দল শালকের সঙ্গে ১-১ ড্র করেই সন্তুষ্ট থাকতে হয় টেরি-হ্যাজার্ডদের। দ্বিতীয়ার্ধের শেষের দিকে কোস্তা পরিবর্ত হিসেবে নামলেও ম্যাচের ফল পাল্টাতে পারেননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy