মালিকের অভ্যর্থনা। বুধবার ম্যাচের পরে কালিসের সঙ্গে কিং খান। আবু ধাবিতে। ছবি: বিসিসিআই।
আইপিএলের শুরুতেই শুধু জয় নয়, বুধবার রাতে নাইটদের শিবিরে এসে পৌঁছল আরও এক সুখবর। ইউসুফ পাঠান বাবা হয়েছেন। সে জন্য কেকেআরের পরের ম্যাচে তাঁর খেলতে না পারার খবরেও অবশ্য কেউ অখুশি নন। তার আর একটা কারণও অবশ্য আছে। জাক কালিস ফর্মে যে। বুধবার রাতে হোটেলে ফিরে শাহরুখের সুইটে পার্টিও হল নাইটদের। ঢালাও খানা-পিনা। সেই পার্টিতেও মধ্যমণি কালিস। কেকেআরের প্রথম ম্যাচ দেখে ফ্র্যাঞ্চাইজির ‘বাদশাহ’ এ বার নিজের কাজে ফিরছেন। তবে নাইটদের জন্য রেখে গেলেন প্রচুর প্রেরণা।
আবু ধাবিতে ফোন করে জানা গেল, বুধবার রাতে ম্যাচের পর টিম হোটেলে ফেরার আগেই দলের ছেলেদের ‘দাওয়াত’ দিয়ে দেন শাহরুখ। হোটেলে ফিরেই টিম মালিকের সুইটে যাওয়ার তাড়াহুড়ো শুরু হয়ে যায় গম্ভীরদের। ওই সময় এক বন্ধু তাঁকে ফোন করলে গম্ভীর বলেন, “এখন কথা বলতে পারব না। এসআরকে-র পার্টিতে যাচ্ছি। পরে কথা হবে। কাল সকালে।” পার্টিতে দলের সকলেই খোশ মেজাজে। শাহরুখ খানের দেওয়া পার্টিতে খোশ মেজাজে তো থাকবেই সবাই। বাদশাহ নিজেই টুইট করলেন, “শো শেষ। ম্যাচও শেষ। দলের সবার সঙ্গে দেখা হল। এ বার ছবির কাজে ফিরতে হবে। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই কেমন মানুষ এখানে ওখানে চলে যায়! ঝড়ে যেমন পালকের অবস্থা হয়।”
তার আগেই কেকেআর মালিক টুইটারে সবাইকে জানিয়ে দিয়েছেন, “আফরিন আর ইউসুফের ছেলে হয়েছে। প্রিন্সকে দেখতে নতুন বাবাকে এ বার দেশে ফিরতে হবে।’’ বৃহস্পতিবার ভোরের বিমানেই দেশে ফিরে আসেন ইউসুফ। আবার জুনিয়র পাঠান ইরফানও টুইট করলেন, ‘‘চাচু হয়ে গেলাম। এই অনুভূতিটা প্রকাশ করার ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না।” আপাতত ক’দিন ছুটিতে থাকা ইউসুফ শনিবার দিল্লি ডেয়ারডেভিলসের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় ম্যাচে সম্ভবত খেলতে পারবেন না। তবে তৃতীয় ম্যাচের আগে টিমে যোগ দেওয়ার কথা তাঁর।
নাইটদের শিবিরে যিনি মধ্যমণি, সেই কালিস অবশ্য বেশি খুশি প্রথম ম্যাচেই দলের জয়ে। বললেন, “কয়েক মাসের ছুটিটা খুব কাজে দিয়েছে। বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে দেখা হল। তবে একই সঙ্গে প্র্যাকটিসে পরিশ্রমও করেছি এই মরসুমে কেকেআর-কে সাহায্য করার জন্য। এই উইকেটে বাউন্স বেশি। এটা আমার পক্ষে ভাল হয়েছে। শুরুতে ভাল বলগুলোকে সামলে দিয়েছি। আর ডেথ ওভারে রান তুলেছি। আর তো বেশি দিন ক্রিকেট খেলব না। যত দিন ক্রিকেটে আছি, উপভোগ করতে চাই।”
বাবা হওয়ার খবরে দেশে ফিরলেন ইউসুফ পাঠান।
ম্যাচে কালিসের দেওয়া ক্যাচ মিস করেন মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের তারকা পেসার লাসিথ মালিঙ্গা। তিনি এ দিন আইপিএলের ওয়েবসাইটে স্বীকার করে নেন, “কালিসের ক্যাচটা ফেলাই আমার বিরাট ভুল হয়েছে। ৩৪ রানের মাথায় যদি ওকে ফিরিয়ে দিতে পারতাম, তা হলে বোধহয় কেকেআর এত রান তুলতে পারত না। আমরাই আসলে কালিস আর মণীশকে (পাণ্ডে) রান তুলতে দিয়েছি।” গৌতম গম্ভীরের উইকেটটা পেয়ে তৃপ্তি পেলেও তাঁর চার উইকেটও যে মুম্বইকে জেতানোর মতো নয়, এটা ভেবেই হতাশ লঙ্কা পেসার। বললেন, “প্রথম ছ’ওভারের মধ্যে একটা উইকেট ফেলা খুব দরকার ছিল। তাও আবার গম্ভীরের মতো উইকেট। সেটাই করেছিলাম। কিন্তু কী করে জানব, এতেও হবে না!”
নাইটদের শিবিরে কালিসকে নিয়ে জয়জয়কারে তাঁর কৃতিত্ব অনেকে ভুলে গেলেও মণীশ পাণ্ডে খুশি কালিসের সঙ্গে ফের ব্যাট করার সুযোগ পাওয়ায়। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর হয়ে দু’জনে একসঙ্গে খেলেছিলেন। ফের তাঁরা এক সঙ্গে মাঠে নামলেন নাইট রাইডার্সের জার্সি গায়ে। এবং দু’জনে ফের একসঙ্গে ব্যাট করতে নেমেই হয়ে গেলেন সুপার হিট জুটি। বুধবার কালিসের ৭২-এর সঙ্গে মণীশের ৬৪-ও নাইটদের প্রথম জয়ে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। দলের ১৬৩-তে তাঁদের অবদান ১৩১। বুধবারের ইনিংস নিয়ে মণীশ বলেন, “ব্যাট করতে নেমে সেই পুরনো দিনগুলোতে ফিরে গেলাম, যখন কালিসের সঙ্গে ব্যাট করতাম। বুঝলাম, তেমন কিছুই বদলায়নি। জাক কালিসের সঙ্গে ব্যাট করাটা একই রকম ব্যাপার। আর আমিও সেই আগের মতোই কমফর্ট জোনে থেকে ব্যাট করতে পারি। আগেও আরসিবি-তে থাকতে আমরা অনেকগুলো ভাল পার্টনারশিপ খেলেছি। একে অপরের খেলা সম্পর্কে ধারণা আছে আমাদের। ব্যাট করার সময় সমানে নিজেদের মধ্যে কথা বলছিলাম।”
বুধবারের পার্টনারশিপের রহস্য নিয়ে বলতে গিয়ে মণীশ বলেন, “এই একে অপরের মধ্যে কথা বলাটাই আসল ব্যাপার। উইকেটে টিকে থাকতে পারলে যে রান আসবেই, সেটাই ঠিক করলাম। এই প্ল্যান অনুযায়ীই ব্যাট করেছি আমরা।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy