বাংলার রঞ্জি দলের জন্য সারা বছরে ব্যয় ৫৪ লক্ষ টাকা। অথচ সিএবি-তে খাদ্যোৎসব ও কর্তাদের গাড়ি চড়ার খরচ পাঁচ কোটি!
এমন ব্যয়বাহুল্য না হলে কি তিন কোটি ৭০ লক্ষ টাকার বেনজির ঘাটতির মুখে পড়তে হত সিএবি-কে? সিএবি-র বিভিন্ন মহলে তো বটেই, এমনকী ফিনান্স কমিটি-র মধ্য থেকেও উঠছে এই প্রশ্ন। যার উত্তরে শীর্ষকর্তারা বলছেন, কোনও খরচই অনর্থক নয়। ফলে ব্যয় কমানোর কোনও জায়গাই নাকি নেই!
সিএবি-র বেনজির আর্থিক ঘাটতির দায় বেশির ভাগটাই কর্তারা ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের ঘাড়ে চাপিয়ে দিলেও সিএবি-র অন্দরমহলে যে বিপুল পরিমাণ খরচ, তা নিয়েই উঠছে প্রশ্ন। বোর্ডের বার্ষিক অনুদানের অঙ্ক এ বার প্রায় ১৫ কোটি টাকা কমে যাওয়ায় সিএবি-র সিন্দুকে টান পড়েছে— এমন যুক্তিকে শিখণ্ডী করার চেষ্টা হলেও সিএবি-তে অনর্থক এবং অপ্রয়োজনীয় ব্যয়ের বাহুল্য যে যথেষ্ট, তা নিয়ে সন্দেহ নেই ফিনান্স কমিটির সদস্যেরই।
ফিনান্স কমিটির অন্যতম সদস্য এবং প্রাক্তন চেয়ারম্যান হিরণ্ময় চট্টোপাধ্যায়ই যেমন এক চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করেছেন, ‘‘সারা বছর ধরে সিএবি-তে যে পরিমাণ ব্যয় করে কর্মকর্তারা গাড়ি চড়েন, তার হিসেব নিলেই বুঝতে পারবেন কোথায় ঘাটতি। প্রায় তিন কোটি টাকা তো গাড়ির পিছনেই খরচ হয়। ফিনান্স রিপোর্টেই এর উল্লেখ রয়েছে। এত গাড়ি কোন রাজকার্যে লাগে আমি জানি না।’’
তাঁর আরও অভিযোগ, ‘‘এখানেই শেষ নয়। ফিনান্স রিপোর্টে উল্লেখ রয়েছে, সারা বছর ধরে সিএবি-র বিভিন্ন অনুষ্ঠানে খানা-পিনা ও সদস্যদের উপহার দেওয়ার জন্যই ব্যয় হয়েছে প্রায় দু’কোটি টাকা। গত বারের বার্ষিক সভায় ১২১টি অনুমোদিত সংস্থাকে একটি করে ‘ট্যাব’ উপহার দেওয়া হয়েছে। এত দামি উপহার কী জন্য? ক্রিকেটের উন্নতির জন্য এই ব্যয়, না ভোট ধরে রাখার জন্য।’’
স্টেডিয়াম রক্ষণাবেক্ষণের খরচ কেন চার কোটি টাকা, সেই প্রশ্নও উঠেছে। ইডেনের রক্ষণাবেক্ষণের কাজে কি সত্যিই এমন খরচ হয়েছে? এই প্রশ্নও তুলেছেন হিরণ্ময়বাবু। যা নিয়ে খোঁজ করতে সংশ্লিষ্ট কমিটির চেয়ারম্যান চিত্রক মিত্র বলছেন, ‘‘আমার কোনও ধারণা নেই ঠিক কত খরচ হয়েছে। কারণ, আমাদের কমিটির কোনও বৈঠকই তো হয়নি সারা বছর। তা হলে কী করে বলব?’’
এর আগেও এই অনর্থক খরচগুলি নিয়ে ফিনান্স কমিটির বৈঠকে প্রতিবাদ করেছেন বলে হিরণ্ময়বাবুর দাবি। বললেন, ‘‘অনেক বার আমি এই সব খরচ কমানোর কথা বলেছি। কেউ কর্ণপাত করেনি। এই খরচগুলো কমালে তো আর এই ঘাটতির মুখে পড়তে হত না। আগে থেকে সাবধান হইনি বলেই এমনটা হল।’’ যা শুনে কোষাধ্যক্ষ বিশ্বরূপ দে বলছেন, ‘‘কোনও খরচই অনর্থক নয়। তাই এই অভিযোগ অমূলক।’’ অন্য দিকে সিএবি যুগ্মসচিব সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘সিএবি-তে কেউ যদি মনে করে থাকেন, ক্রিকেটের জন্য সিএবি-র আর্থিক ক্ষতি হয়েছে, তা হলে তা মোটেই ঠিক নয়।’’ অপর যুগ্মসচিব সুবীর গঙ্গোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘অন্যান্য খরচ নিয়ে মন্তব্য করব না। তবে ক্রিকেট-কেন্দ্রিক খরচগুলো তো কমানো যাবেই না। উল্টে বাড়বে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy