Advertisement
০৫ মে ২০২৪

কোহালির মতো স্মিথও টি-টোয়েন্টির সম্মান বাড়াচ্ছে

এত দিন অনেককেই বলতে শুনেছি টি-টোয়েন্টি তো বেপরোয়া ব্যাটসম্যানদের খেলা। যেখানে ধুমধাড়াক্কা শট না নিলে বড় রান করা যায় না। বিরাট কোহালি আগেই ধারণাটা ভেঙে দিয়েছে। শুক্রবার স্টিভন স্মিথও আশা করি তাদের মুখ বন্ধ করে দিতে পারবে।

৫৪ বলে ১০১। ধ্রুপদী থেকেও বিধ্বংসী স্টিভ স্মিথ।-বিসিসিআই

৫৪ বলে ১০১। ধ্রুপদী থেকেও বিধ্বংসী স্টিভ স্মিথ।-বিসিসিআই

দীপ দাশগুপ্ত
শেষ আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০১৬ ০৪:৩০
Share: Save:

এত দিন অনেককেই বলতে শুনেছি টি-টোয়েন্টি তো বেপরোয়া ব্যাটসম্যানদের খেলা। যেখানে ধুমধাড়াক্কা শট না নিলে বড় রান করা যায় না।

বিরাট কোহালি আগেই ধারণাটা ভেঙে দিয়েছে। শুক্রবার স্টিভন স্মিথও আশা করি তাদের মুখ বন্ধ করে দিতে পারবে।

টি-টোয়েন্টিতে ব্যাকরণ মেনে ব্যাটিং করা যায় না, এই ধারণাটা যে ক্রমশ ভেঙে যাচ্ছে, এটা দেখেই ভাল লাগছে। নিখুঁত ক্রিকেটীয় শট খেলেও যে এই ফর্ম্যাটের ক্রিকেটে বড় ইনিংস গড়া যায়, এ বার এই ধারণাটা সবার মধ্যে ছড়িয়ে পড়াটা খুব দরকার। না হলে তো এই ফর্ম্যাটটাকে কেউ কোনও দিন শ্রদ্ধাই করতে পারবে না।

শুক্রবার বড় স্কোরের ম্যাচে গুজরাতের কাছে পুণে শেষ বলে হারলেও যে সেঞ্চুরি-ইনিংসটা খেলল স্মিথ সেটা টি-টোয়েন্টির অন্যতম মডেল ইনিংস হয়ে থাকতে পারে উঠতি ক্রিকেটারদের কাছে।

এবি ডেভিলিয়ার্স, ক্রিস গেইলরা আসল বিগ হিটার। ওরা সব অতিমানবীয় শট নিতে পারে। অনেকে হাজার চেষ্টা করেও ওই রকম শট নিতে পারবে না। কিন্তু কোহালি, স্মিথরা দেখাচ্ছে বিরাট শট না নিয়েও স্রেফ টাচ প্লে-র মাধ্যমেও বাউন্ডারির বাইরে বল পাঠানো যায়।

কোহালির ব্যাটিংয়ে আগেই দেখা গিয়েছে। এ দিন দেখাল স্মিথও। অস্ট্রেলীয় অধিনায়ক একটু ব্যাকফুট নির্ভর ব্যাটসম্যান। কোহালি যে রকম ফ্রন্টফুটে খেলতেই বেশি পছন্দ করে, স্মিথ তা নয়। আর ব্যাকফুটে খেলার ঝোঁকটা বেশি বলে শর্ট বল খেলার জন্য তুলনায় বেশি সময় পেয়ে যায় ও। এটাই ওকে বাড়তি সুবিধে দেয়।

স্মিথকে যে ইনিংসের শুরুতেই নামানো দরকার, তা আগেও বলেছি। কারণ, ওর মতো টাচ প্লেয়ার পাওয়ার প্লে-তে ফিল্ডিংয়ে গ্যাপ খুঁজে নিয়ে প্রচুর রান বানাতে পারে। এ দিনও তাই হল। প্রথম ছ’ওভারে এ ভাবে রান নিতে নিতে যখন সেট হয়ে যাবে, তখন বড় শটে বাউন্ডারি মারার মতো জায়গায় চলে আসবে। স্মিথের মতো ব্যাটসম্যানদের কার্যকারিতা বাড়ানোর এটাই সেরা উপায়। স্মিথ আইপিএলে টেবল টপার গুজরাত লায়ন্সের বিরুদ্ধে ওপেন করতে নেমে সেটাই করল। যে আটটা চার আর পাঁচটা ছয় মারল, সব ক’টাই নিখুঁত ক্রিকেটীয় শট। হুক, পুল, সুইপ, কভার ড্রাইভ, স্ট্রেট ড্রাইভের কমপ্লিট প্যাকেজ।

৫৪ বলে ১০১-এর মধ্যে ৬২ এল বাউন্ডারির বাইরে থেকে। বাকি ৩৯ রান দৌড়ে। হিসেব করে দেখতে পারেন, ২৩টা সিঙ্গলস নিয়েছে স্মিথ এ দিন। আটটা দু’রান। এর জন্য ফিটনেসও কম লাগে না। কোহালির মতোই স্মিথও ওর ফিটনেসকে চরম জায়গায় নিয়ে গিয়েছে।

তা ছাড়া কী সাহস নিয়ে এ দিন ব্যাটিংটা করল স্মিথ! কেভিন পিটারসেনের পর ফাফ দুপ্লেসিও ওদের দল থেকে ছিটকে গিয়েছে। যে দলটা এত দিন ব্যাটসম্যান নির্ভর ছিল, তাদের ব্যাটিং শক্তি এ ভাবে কমে যাওয়া মানে অনেকটাই ক্ষতি হওয়া। তাই এখন থেকে যে ওকেই এগিয়ে এসে হাল ধরতে হবে, তা জেনেই এ দিন মাঠে নেমেছিল। আর মাঠে নেমেই ধোনিকে বুঝিয়ে দিল, ক্যাপ্টেন ওর উপর ভরসা করতেই পারে। একেই বলে ভরসার পাত্র। যেমন কোহালি। স্মিথ যে এ ব্যাপারে ক্রমশ ওর বড় প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠছে, তা বোঝাই যাচ্ছে।

পুণের খারাপ বোলিংয়ের জন্য ধোনিদের ম্যাচটা হারতে হল। ১৯৫ করার পর বিপক্ষকে দশ ওভারে ১১২ রান করতে দিলে তো শেষে হারতেই হবে। পাঁচ ওভার হয়ে যাওয়ার পর রবি অশ্বিনকে আনার কোনও মানে হয় না। ব্যাটসম্যানরা সেট হয়ে যাওয়ার পর ওকে বল করতে এনে কোনও লাভ নেই। দিন্দা আগের দিনের মতো না পারলেও খারাপ বোলিং করেনি। দ্বিতীয় স্পেলে ওর আরও একটু সতর্ক হওয়া উচিত ছিল।

তবে পুণের এই হারের জন্য কোনও ভাবেই ওদের ব্যাটিংকে দায়ী করা যায় না। কেপি, ফাফ-রা চলে যাওয়ার পর ধোনিকে এই একটা দুশ্চিন্তা থেকে অন্তত মুক্তি দিল স্মিথ।

মহেন্দ্র সিংহ ধোনি

প্রথম ছ’ওভারে ষাট রান উঠে গেলে চাপ তৈরি হবেই। নতুন বলে আমাদের আরও ভাল বোলিং করতে হবে। ব্যাটিংয়ের থেকে বোলিংটাই বেশি ভোগাচ্ছে। পাঁচ জন, ছ’জন বোলারের কম্বিনেশনেও লাভ হচ্ছে না।

সুরেশ রায়না

হাড্ডাহাড্ডি ম্যাচ জিতলাম। বাজ (ম্যাকালাম) আর স্মিথ প্রথম ছ’ভারে অনেকটা এগিয়ে দিয়েছিল। জিমির (ফকনার) জন্মদিনটা দারুণ গেল। অধিনায়কত্ব ভালই চলছে। এমএসের কাছে অনেক শিখেছি। তবে আজ ওর সঙ্গে দেখা করব না। জানি ও খুব হতাশ থাকবে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর: রাইজিং পুণে সুপারজায়ান্টস ২০ ওভারে ১৯৫-৩ (স্মিথ ১০১, রাহানে ৫৩), গুজরাত লায়ন্স ২০ ওভারে ১৯৬-৭ (ডোয়েন স্মিথ ৬৩, দিন্দা ২-৪০)।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Virat Kohli
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE