কলকাতা লিগের ডার্বি কি ৭ সেপ্টেম্বর-ই হবে?
বৃহস্পতিবার মোহনবাগানের কার্যকরী কমিটির জরুরি সভার পরেও ডার্বির ভাগ্য আপাত দৃষ্টিতে ঝুলেই থাকল। তবে বাগান কর্তাদের সুর আগের চেয়ে অনেকটা নরম।
যদিও ডার্বি নিয়ে আইএফএ নিজের সিদ্ধান্তে অনড়। অর্থাৎ নির্ধারিত দিনই এ মরসুমের প্রথম ডার্বি হবে। মোহনবাগানের সঙ্গে দফায় দফায় চিঠি চালাচালির পর রাজ্য ফুটবল সংস্থার সচিব উৎপল গঙ্গোপাধ্যায় এ দিন আরও একবার বললেন, ‘‘সাত সেপ্টেম্বর কল্যাণী স্টেডিয়ামে ডার্বি হচ্ছে। দিন পরিবর্তন করার কোনও ভাবনা আমার নেই।’’
কলকাতা লিগে যা অবস্থা
১. ইস্টবেঙ্গল- ৭ ম্যাচে ২১ পয়েন্ট।
২. মহমেডান- ৬ ম্যাচে ১৫ পয়েন্ট।
৩. মোহনবাগান- ৫ ম্যাচে ১৩ পয়েন্ট।
খানিকটা চমকে দিয়ে মোহনবাগানও নিজেদের সিদ্ধান্ত থেকে এ দিন অনেকটা সরে এল। এত দিন বাগানের দাবি ছিল, তারা লিগের সূচি অনুযায়ী পর পর যে ভাবে বিভিন্ন টিমের সঙ্গে তাদের ম্যাচ রয়েছে, সে ভাবেই খেলবে। সে ক্ষেত্রে শঙ্করলাল চক্রবর্তীর টিমের আগে টালিগঞ্জ অগ্রগামীর সঙ্গে রিপ্লে খেলার কথা। তার পর ইউনাইটেড ম্যাচ। কিন্তু এ দিন বাগানের বৈঠকে ঠিক হয়, আজ শুক্রবার ইউনাইটেড ম্যাচ তারা খেলবে। যেমনটা আইএফএর প্রকাশিত সূচিতে রয়েছে। ইউনাইটেড ম্যাচের পরেই রয়েছে ডার্বি। তা হলে কি নির্ধারিত দিনই ডার্বি খেলবে বাগান?
এখানে কিছুটা হলেও ধোঁয়াশা রেখে দিয়েছেন বাগান কর্তারা। পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ক্লাব প্রেসিডেন্ট টুটু বসু এবং সচিব অঞ্জন মিত্রের উপর। সাংবাদিক সম্মেলনেও অঞ্জনবাবু বলেন, ‘‘আমরা ফুটবলের বিরোধী নই। কলকাতা লিগ হোক সেটাই চাই।’’ যে কথাগুলোকে যথেষ্ট ইঙ্গিতবাহী মনে করছে ময়দান।
বুধবার রাতে মোহনবাগান আইএফএ-কে যে চিঠি দিয়েছিল তাতে লেখা ছিল, রিপ্লে ম্যাচ সাত দিনের মধ্যে করার নিয়ম রয়েছে। বাগানও সেই নিয়ম মেনেই লিগে তাদের পরবর্তী ম্যাচগুলো খেলতে চায়। বৃহস্পতিবার বিকেল চারটেয় সেই চিঠির উত্তর পাঠিয়েছে আইএফএ। তাতে বলা রয়েছে, এই বিষয়টি লিগ সাব কমিটির কাছে পাঠানো হচ্ছে। এবং যত শীঘ্র সম্ভব বৈঠক ডাকা হবে। মোহনবাগান অর্থসচিব দেবাশিস দত্ত বললেন, ‘‘আইএফএ-কে আমরা চিঠি পাঠিয়েছিলাম। তার উত্তর এসেছে। লিগ সাব কমিটির কাছে আইএফএ আমাদের চিঠি পাঠাচ্ছে। সিদ্ধান্ত কী হবে জানা নেই। তবে পর পর ম্যাচ পড়ে গেলে আমাদের সমস্যা হত। সে কারণে আমরা কার্যকরী কমিটির সভায় ইউনাইটেড ম্যাচ খেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’ সঙ্গে তিনি ফের বলেন, ‘‘আইন অনুযায়ী রিপ্লে ম্যাচটি সাত দিনের মধ্যেই করার নিয়ম।’’
এখন প্রশ্ন হল, মোহনবাগান যদি নিজেদের প্রথম দাবি থেকে সরে আসতে পারে, তবে কি আইএফএ-র অনুরোধ মেনে সাত দিনের মধ্যে ভেস্তে যাওয়া ম্যাচের রিপ্লে খেলার সিদ্ধান্ত থেকেও পিছিয়ে আসবে না? ডার্বি প্রসঙ্গে বাগানের একজন কর্তাকেও এ দিন জোর দিয়ে বলতে শোনা যায়নি যে, টালিগঞ্জ ম্যাচের আগে তাঁরা ডার্বি খেলবেন না। বরং দেবাশিসবাবু বলেন, ‘‘লিগ সাব কমিটি কী সিদ্ধান্ত নেয় সেটা আগে দেখি। তার পর সবটাই টুটুদা-অঞ্জনদা ঠিক করবেন।’’
ইস্টবেঙ্গল আবার ডার্বি নির্ধারিত দিনে না হলে খেলবে না বলে এ দিন হুমকি দিয়েছে। ক্লাবের শীর্ষকর্তা দেবব্রত সরকার বলেন, ‘‘৭ সেপ্টেম্বর ডার্বি না হলে আমরা পরে আর ওই ম্যাচ খেলব না।’’ ময়দানের ধারণা, মোহনবাগানের পথে হেঁটে আইএফএ-র উপর চাপ বাড়ানোর খেলা শুরু করেছে লাল-হলুদও।
বাগানের এক পক্ষের দাবি অবশ্য, নির্ধারিত দিনই ডার্বি খেলবে সবুজ-মেরুন। এঁদের ব্যাখ্যা, ইউনাইটেড ম্যাচ যখন মোহনবাগান খেলে দিচ্ছে, তখন ডার্বি না খেলার যৌক্তিকতা নেই। আইএফএ সূত্রের খবর, সচিব ইতিমধ্যেই বাগানের সঙ্গে এক দফা কথা বলেছেন। পুরো পরিস্থিতি তাদের বুঝিয়েছেন। শোনা যাচ্ছে, সে কারণে বাগান কর্তারা নিজেদের দাবি থেকে সরে এসেছেন। তাই নির্ধারিত দিন ডার্বি হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
শুক্রবার কলকাতা লিগে
মোহনবাগান : ইউনাইটেড (মোহনবাগান, ৫-৩০)।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy